বাজার ফান্ডের তৌজিভুক্ত ভূমির লিজ ৯৯ বছর করার দাবি
১ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৪:০১ | আপডেট: ১ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৭:২৯
বান্দরবান: বান্দরবানে বাজার ফান্ডের তৌজিভুক্ত ভূমির বন্দোবস্তি/লিজ ১০ বছরের পরিবর্তে ৯৯ বছরে উন্নীতকরণ এবং গৃহ নির্মাণ ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান স্থাপনের জন্য ব্যাংক ঋণ পাওয়ার প্রতিবন্ধকতা দূরিকরণের দাবিতে মানববন্ধন করেছে জেলার সর্বস্তরের জনগণ।
রোববার (১লা ডিসেম্বর) সকালে বান্দরবান প্রেসক্লাব চত্বরে আয়োজিত এক মানববন্ধনে জেলার ৭টি উপজেলার বাজার ফান্ডের জায়গায় বসবাসরত সকলস্তরের জনগণের পক্ষ থেকে এ দাবি জানানো হয়।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, গত ১৬ বছর বাংলাদেশের জনগণ ফ্যাসিবাদী সরকার কর্তৃক অন্যায়, অবিচার এবং বৈষম্যের স্বীকার হয়েছে। জুলাই-আগষ্ট ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানে গত ৫ আগষ্ট স্বৈরাচার সরকারের পতন হওয়ার পর দেশ থেকে বৈষম্য দূরীকরণের লক্ষ্যে একটি অন্তবর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়েছে। যা বাংলাদশের ১৮ কোটি জনগণ স্বশ্রদ্ধচিত্তে গ্রহণ করেছে এবং স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছে।
বান্দরবান পার্বত্য জেলায় বাজার ফান্ডের তৌজিভুক্ত ভূমির বন্দোবস্তি/লিজের মেয়াদ ১০ বছরের পরিবর্তে ৯৯ বছর করা এবং গৃহ নির্মাণ ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান স্থাপনের জন্য ব্যাংক ঋণ পাওয়ার প্রতিবন্ধকতা দূর করতে হবে। সর্বোত্র বৈষম্য দূরীকরণের প্রচেষ্টা থাকলেও বান্দরবানে জেলা পরিষদের আওতাধীন বাজার ফান্ডের বৈষম্য এখনো দূর হয়নি।
তারা আরও বলেন, তিন পার্বত্য জেলার স্থানীয় জনগণের জীবন মান উন্নয়নের জন্য ১৯৩৭ সালে বাজার ফান্ড প্রশাসন প্রতিষ্ঠা করা হয়। প্রতিষ্ঠার পর থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত বাজার ফান্ডের আওতাধীন সকল তৌজিভুক্ত ভূমির বিপরীতে তফসিলি ব্যাংক সমূহে যথা নিয়মে গৃহ ঋণসহ যাবতীয় ঋণ কার্যক্রম চলমান ছিল। বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ ও জেলা প্রশাসনের অলিখিত দ্বন্দ্বে বর্তমানে অকার্যকর হয়ে পড়েছে বাজারফান্ড সংস্থার সকল প্রকারের কর্মকান্ড।
এই সংস্থার অধীনে থাকা ভূমি বন্দোবস্তি/লিজের মেয়াদ ১০ বছর হওয়ায় এবং ব্যাংক ঋণ বন্ধ থাকার কারণে থমকে গেছে বান্দরবানের অর্থনৈতিক উন্নয়নের চাকা। বন্দোবস্তি/লিজ কার্যক্রম ও গৃহঋণ বন্ধ থাকায় ক্ষুব্ধ বান্দরবান পার্বত্য জেলার বাজার ফান্ডের মালিকানাধীন ভূমির হাজার হাজার বাসিন্দা।
সংকট নিরসনে নেই কোন কার্যকর পদক্ষেপ। বান্দরবানে বাজার ফান্ডের তৌজিভুক্ত জায়গায় গৃহঋণ নিয়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান নির্মানের ক্ষেত্রে বাজারফান্ড প্রশাসকের অনুমতি সাপেক্ষে দীর্ঘদিন যাবত গ্রাহকরা ব্যাংক লোন নিয়ে অবকাঠামো নির্মাণসহ নানা উন্নয়ন কর্মকান্ড চালিয়ে আসছিলেন।
বক্তারা আরও বলেন, বিভিন্ন সময়ে জেলা প্রশাসকের সাথে জেলা পরিষদের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের কারণে হয়রানির স্বীকার হয়ে আসছে স্থানীয় বাসিন্দারা।
বাজারফান্ডের এই জটিলতায় সোনালি ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংক, রূপালী ব্যাংক, পূবালী ব্যাংক, অগ্রনী ব্যাংক সহ ১৭টি ব্যাংক নতুন করে কোনো প্রকার ঋণ যেমন দিচ্ছেনা, তেমনি পুরাতন ঋণ নবায়নের কার্যক্রমও স্থগিত করেছে। এতে বেকার হয়ে পড়েছে অনেক ব্যবসায়ী, কর্মচারী সেইসাথে নতুন উদ্যোক্তাও তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা কমে যাচ্ছে
ঘন্টা ব্যাপী মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন, বাজারের ব্যবসায়ী ও বিএনপি নেতা নুরুল ইসলাম, ব্যবসায়ী শফিকুল আলম বাবুল, বিএনপি নেতা জাহাঙ্গীর আলম, সাবিকুর রহমান জুয়েল, হাবিবুর রহমান ভুঁইয়া, দৌলতুল খাঁন সিদ্দিকী, মনির হোসেন ভুঁইয়া, ঠিকাদার জসিম উদ্দীন, ঠিকাদার মহিউদ্দীন মহিম, সাংবাদিক আলাউদ্দিন শাহরিয়ারসহ সাত উপজেলার বাজার ফান্ডের জায়গার বাসিন্দারা।
মানববন্ধন শেষে আয়োজকরা বান্দরবানের জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টা বরাবরে একটি স্বারকলিপি প্রদান করেন।
সারাবাংলা/এনজে