Sunday 01 Dec 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা
স্বচক্ষে দেখেছেন— এমন সাক্ষী না থাকায় আসামিদের খালাস: আইনজীবী

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
১ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৩:৪৩ | আপডেট: ১ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৫:৩৬

রোববার ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় হাইকোর্টের আপিল ও ডেথ রেফারেন্সের রায় ঘোষণার পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন আসামিপক্ষের আইনজীবীরা। ছবি: সারাবাংলা

ঢাকা: আলোচিত ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার ঘটনায় স্বচক্ষে দেখেছেন, এমন কোনো সাক্ষী বা প্রমাণ না থাকায় এ ঘটনায় দায়ের করা মামলায় উচ্চ আদালত আসামিদের খালাস দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন আসামিপক্ষের আইনজীবী শিশির মনির।

আদালত কোনো পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন কি না— এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আদালত পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন এই বলে যে এ ধরনের মামলায় পরস্পর কেউ দেখেছেন, কেউ স্বচক্ষে দেখেছেন— এই মর্মে কোনো প্রমাণ (এভিডেন্স) নেই। যাদের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি নেওয়া হয়েছে, তাদের নির্যাতন (টর্চার) করে জবানবন্দি নেওয়া হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

রোববার (১ ডিসেম্বর) হাইকোর্ট ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার আপিল ও ডেথ রেফারেন্সের রায় ঘোষণার পর প্রতিক্রিয়া জানানোর সময় শিশির মনির এসব কথা বলেন।

এ দিন ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার ঘটনায় হত্যা ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনের মামলার আপিল ও ডেথ রেফারেন্সের (মৃত্যুদণ্ডের জন্য হাইকোর্টের অনুমোদন) আপিল মঞ্জুর করে বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট রায় দেন। রায়ে সব আসামিকে খালাস দেওয়া হয়েছে।

২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর পুরান ঢাকার নাজিমুদ্দিন রোডের পুরাতন কেন্দ্রীয় কারাগারের সামনে স্থাপিত ঢাকার ১ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক শাহেদ নূর উদ্দিনের আদালত আলোচিত এ মামলার ঘোষণা করেছিলেন।

বিচারিক আদালত সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর ও বিএনপি নেতা আবদুস সালাম পিন্টুসহ ১৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড সাজা দেন। একই সঙ্গে বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান (বর্তমানে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান) তারেক রহমানসহ ১৯ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয় আরও ১১ আসামিকে।

বিজ্ঞাপন

রায় ঘোষণার পর আইনজীবী শিশির মনির বলেন, যে বিচার (ট্রায়াল) করা হয়েছিল, সেটি ছিল অবৈধ। কারণ আইনের ভিত্তিতে সেই ট্রায়াল হয়নি। একই সঙ্গে আদালত বলেছেন, কোনো সাক্ষীর সঙ্গে কোনো সাক্ষীর কোনো কোলাবরেশন নেই। শোনা সাক্ষীর ওপর ভিত্তি করে সাজা দেওয়া হয়েছিল।

শিশির মনির বলেন, এ কারণে সবারর আপিল নিয়ে ডেথ রেফারেন্স রিজেক্ট করে সবাইকেই বেকুসুর খালাস দিয়েছেন আদালত। তারেক রহমান ও লুৎফুজ্জামান বাবরসহ সবাই বেকুসুর খালাস পেয়েছেন।

আসামিপক্ষের এই আইনজীবী আরও বলেন, মুফতি হান্নান দুটি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। আমরা বলেছিলাম, ৪০০ বছরের ইতিহাসে ভারতীয় উপমহাদেশে কাউকে দ্বিতীয় জবানবন্দির ওপর ভিত্তি করে সাজা দেওয়ার নজির নেই। আজ (রোববার) আদালত বললেন, দ্বিতীয় জবানবন্দি তিনি যেটি দিয়েছিলেন, সেটিও পরে তিনি প্রত্যাহার করেন। এ জন্য এ জবানবন্দির কোনো আইনি ভিত্তি নেই।

আসামিপক্ষের আরেক জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এস এম শাহজাহান বলেন, এ মামলার দ্বিতীয় অভিযোগপত্রে যাদের আসামি করা হয়েছে, সেটি আইনিভাবে গ্রহণযোগ্য নয়। কারণ দ্বিতীয় অভিযোগপত্র ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে দেওয়া হয়নি, সরাসরি জজ আদালতে দেওয়া হয়। এ কারণে এ অভিযোগপত্র ফৌজদারি কার্যবিধি অনুযায়ী গৃহীত হতে পারে না।

তিনি আরও বলেন, ঘটনাস্থলে কে গ্রেনেড ফাটাল, তা নিয়ে কারও সাক্ষ্য নেই বা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি নেই। এর হদিস পাওয়া যায়নি।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. জসিম সরকার, রাসেল আহমেদ ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল লাবনী আক্তার। আসামিপক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এস এম শাহজাহান, জয়নুল আবেদীন, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, শিশির মনির ও কায়সার কামাল।

২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর এ মামলায় বিচারিক আদালতের রায়ের পর ২৭ নভেম্বর ওই রায় প্রয়োজনীয় নথিসহ হাইকোর্টের ডেথ রেফারেন্স শাখায় পৌঁছায়। পাশাপাশি কারাবন্দি আসামিরা আপিল করেন। এরপর চলতি বছরের গত ৩১ অক্টোবর আপিল ও ডেথ রেফারেন্সের ওপর শুনানি শুরু হয়। গত ২১ নভেম্বর শুনানি শেষ হয়‌। ওই দিন শুনানি শেষে রায় ঘোষণার জন্য অপেক্ষমাণ (সিএভি) রেখেছিলেন হাইকোর্ট।

সারাবাংলা/কেআইএফ/টিআর

সারাবাংলা/কেআইএফ/টিআর

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা আসামি খালাস সাক্ষী

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর