মুক্তি পাননি বাবুল আক্তার, ফিরে গেলেন স্বজনরা
১ ডিসেম্বর ২০২৪ ২০:০৬ | আপডেট: ১ ডিসেম্বর ২০২৪ ২২:১৫
চট্টগ্রাম ব্যুরো: আদালত থেকে জামিনের নথি পৌঁছতে দেরি হওয়ায় সাবেক পুলিশ সুপার (এসপি) বাবুল আক্তার মুক্তি পাননি। সন্ধ্যা পর্যন্ত স্বজনরা কারাফটকের সামনে অপেক্ষা করে বাড়ি ফিরে যান।
প্রায় সাড়ে তিন বছর ধরে কারাবন্দি বাবুল আক্তার রোববার (১ ডিসেম্বর) বিকেলে জামিনে মুক্ত হচ্ছেন, এমন খবর চাউর হয়েছিল। বিকেল থেকে কারাফটকের সামনে অপেক্ষায় ছিলেন তার বর্তমান স্ত্রীসহ স্বজন ও আইনজীবীরা। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত অপেক্ষা করলেও বাবুল মুক্তি না পাওয়ায় তারা একে একে বের হয়ে চলে যান।
চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার ইকবাল হোসেন সারাবাংলাকে বলেন, ‘বাবুল আক্তার আজ (রোববার) মুক্তি পাচ্ছেন না। সব কাগজপত্র আমরা হাতে পেয়েছি। কিন্তু সেগুলো আসতে দেরি হওয়ায় আমরা চেক করতে পারিনি। আগামীকাল (সোমবার) তিনি জামিন পেতে পারেন, আবার না-ও পেতে পারেন।’
কারাফটকের সামনে অপেক্ষামাণ সাংবাদিকরা বাবুলের স্ত্রীর কাছে সার্বিক পরিস্থিতি জানতে চাইলে তিনি কোনো কথা বলেননি। তবে নূরে আলম নামে বাবুলের এক আত্মীয় সাংবাদিকদের বলেন, ‘বাবুল আক্তার জামিনে বের হবেন এমন খবর পেয়ে আমরা এসেছিলাম। কিন্তু তিনি মুক্তি পাননি। তাই আমরা চলে যাচ্ছি। কাল (সোমবার) সকালে তিনি মুক্তি পেতে পারেন।’
এ সময় কারাফটকের সামনে উপস্থিত ছিলেন বাবুল আক্তার যে হত্যা মামলায় কারাগারে, সেই মামলার আরেক আসামি এহতেশামুল হক ভোলা। তিনি উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সভায় যেতাম। সেখান থেকে বাবুল আক্তারের সঙ্গে আমার সম্পর্ক ভালো ছিল। এ মামলায় যাদের সঙ্গে উনার ভালো সম্পর্ক ছিল তাদের টেনে এনে নির্যাতন করা হয়েছে। আমার জানা মতে উনি খুব সৎ লোক। কোনো ঘুষ নিতেন না। প্রশাসনিক দ্বন্দ্বের কারণেই উনাকে আর আমাকে এ মামলায় ফাঁসানো হয়েছে।’
কী কারণে প্রশাসনিক দ্বন্দ্ব?- জানতে চাইলে ভোলা বলেন, ‘রিয়াজউদ্দিন বাজারে একটি সোনার দোকান অপারেশন হয়েছিল। সেটা নিয়ে মূল দ্বন্দ্ব। বনজ কুমার স্যার (সাবেক পিবিআই প্রধান বনজ কুমার মজুমদার) তখন তাকে বলেছিল দেখে নেবে। তাই দেখে নিয়েছে আর কী!’
গত ২৭ নভেম্বর স্ত্রী মাহমুদা আক্তার মিতু হত্যা মামলায় সাবেক পুলিশ সুপার (এসপি) বাবুল আক্তারকে ছয় মাসের অন্তর্বর্তী জামিন দেন হাইকোর্ট।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ৫ জুন ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার পথে চট্টগ্রাম নগরের জিইসি এলাকায় বাবুলের স্ত্রী মাহমুদাকে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় মামলার বাদী ছিলেন স্বামী বাবুল আক্তার।
তদন্ত শেষে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) ২০২১ সালের ১২ মে এ মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয়। একইদিন বাবুলের শ্বশুর সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা মোশাররফ বাদী হয়ে পাঁচলাইশ থানায় হত্যা মামলা করেন। এ মামলায় বাবুলসহ আটজনকে আসামি করা হয়।
মাহমুদা হত্যার ঘটনায় ২০২১ সালের ১২ মে বাবুলকে গ্রেফতার করে পিবিআই। মামলায় ২০২২ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর বাবুলসহ সাতজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় সংস্থাটি। মামলাটি এখন সাক্ষ্যগ্রহণের পর্যায়ে আছে।
সারাবাংলা/আইসি/পিটিএম