হাওর সংরক্ষণে টেকসই উদ্যোগ অব্যাহত রাখা হবে : পানি সম্পদ সচিব
২ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৯:৪৩
ঢাকা: হাওর সংরক্ষণে টেকসই উদ্যোগ ও প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখার তাগিদ দিয়েছেন পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব নাজমুল আহসান।
তিনি বলেন, জনসচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে ইপিআই এর টিকা দেওয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ শতভাগ সফলতা অর্জন করেছে। কারণ মায়েরা সচেতন হয়েছেন এবং জন্মের পর স্বতঃস্ফূর্তভাবে তাঁরা ইপিআই কেন্দ্রে গিয়ে তাদের সন্তানদের টিকা দেওয়াচ্ছেন। তিনি বলেন একইভাবে সমুদ্র সৈকত বা সী-বীচে গিয়ে মানুষ এখন আর আগের মত পরিবেশ নোংরা করছে না, মানুষের মধ্যে এখন সচেতনতা গড়ে উঠেছে।
সোমবার (২ ডিসেম্বর) সচিবালয়ে বাংলাদেশ হাওর ও জলাভূমি উন্নয়ন অধিদপ্তর আয়োজিত ‘হাওরের ১০০ বছর এবং আমাদের করণীয়’ শীর্ষক এক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
পানি সচিব বলেন, আমরা যদি মানুষকে সচেতন করে তুলতে পারি তাহলে তারা নিজেরাই হাওরকে রক্ষা করবেন, সংরক্ষণ করবেন। আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের ভালোর জন্য প্রকৃতিকে সংরক্ষণ করতে হবে। আর এজন্য আমাদেরকে স্থানীয় লোকজনকে সচেতন করতে হবে।
আরও বলেন, বাংলাদেশের যে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, তার ডাইমেনশন অনেকগুলো। এদিকে হাওর, ওইদিকে সমুদ্র, আরেক দিকে পাহাড় রয়েছে।
পানি সম্পদ সচিব বলেন, যতদিন যাচ্ছে আমরা আমাদের নিজেদেরকে নার্সিং করার চিন্তাটা ইতিবাচকভাবে আমরা করছি। আমরা আমাদের শরীর-স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে আগের চেয়ে অনেক সচেতন। একইভাবে প্রকৃতিকে পরিচর্যা করলে প্রকৃতিও সুরক্ষা পাবে। তরুণ প্রজন্মের যারা আছেন তারা নিশ্চয়ই এই প্রকৃতিকে কিভাবে লালন করবে, তা তাদের মনে রাখতে হবে ।
তিনি বলেন, আমাদের উপদেষ্টা (পানি সম্পদ) বলেন- নদী হচ্ছে জীবন্ত সত্তা, এখানে শুধু টেকনিক্যাল বিষয় চিন্তা করলে হবে না। হাওর হচ্ছে জলাভূমি হিসেবে জীবন্ত সত্তা। সে হিসেবে এই জীবন্ত সত্তাকে বাঁচিয়ে রাখতে হাওর এলাকায় বসবাসকারী মানুষের ইনভল্ভমেন্ট বা সংশ্লিষ্টতা প্রয়োজন। হাওরে যারা ঘুরতে যান তাদের ওনারশীপ ও সংশ্লিষ্টতা প্রয়োজন। যখন ওই রকম ইনভল্ভমেন্টটা হয়ে যাবে তখন প্রকৃতি সুরক্ষা পাবে।
সারাদেশের জলাভূমির তালিকা করা প্রয়োজন উল্লেখ করে নাজমুল আহসান আরও বলেন, কিছু কিছু এলাকা আছে খুবই সংকটাপন্ন এলাকা। দেশের দক্ষিণাঞ্চলটা, যেখানে টিউবওয়েল থেকে লবণাক্ত পানি উঠছে, খাবার পানি পাওয়া যাচ্ছে না। সেখানে তাদের জন্য কিছু জলাশয়ে মিঠা পানি সংরক্ষণ করার বিষয় নিয়ে আমাদের ভাবতে হবে। দেশের দক্ষিণাঞ্চলের কিছু পুকুর বা জলাশয় চিহ্নিত করে উপজেলা বা ইউনিয়নভিত্তিক ১/২ টা পুকুর বা জলাশয় খাবারের পানির জন্য সংরক্ষণ করে রাখা যায় এবং বাকি কিছু অন্যান্য কাজে ব্যবহারের উপযোগী রাখা যায়, সে বিষয়ে আমাদের কাজ করতে হবে।
পানি সম্পদ সচিব বলেন, হাওরবেষ্টিত ৭টি জেলার মধ্যে দুটি জেলায় হাওর ও জলাশয় অধিদপ্তরের অফিস রয়েছে। বাকী জেলাগুলোর মধ্যে কোন কোন জেলা বেশি গুরুত্বপূর্ণ সেখানেও আমরা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে অফিস চালু করতে পারি কি না – সে উদ্যোগ নিতে হবে।
তিনি বলেন, হাওরের বিষয়গুলোতে স্থানীয় পর্যায়ে গিয়ে কাজ করতে হবে, শুধু ঢাকায় বসে কাজ করলে চলবে না । এ বিষয়ে উদ্যোগ গ্রহণের জন্য পানি সম্পদ সচিব সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে নির্দেশনা প্রদান করেন।