পোশাক খাতের মাতৃত্বকালীন ছুটি বৈষম্যমূলক
২ ডিসেম্বর ২০২৪ ২০:২৯ | আপডেট: ২ ডিসেম্বর ২০২৪ ২১:৪৬
ঢাকা: সরকারি চাকরিতে মাতৃত্বকালীন ছুটি ৬ মাস হলেও তৈরি পোশাক শিল্পে ১২০ দিন, যা বৈষম্যমূলক। শুধু শারীরিকভাবে যৌন হয়রানি নয়, বরং মানসিক ও মনস্তাত্বিক যৌন হয়রানি প্রতিরোধে কর্মক্ষেত্রে ব্র্যান্ড, বায়ার, শ্রমিক-মালিক সহ সকল পক্ষকে সচেতন হতে হবে। সকল প্রকার হয়রানি ও সহিংসতা প্রতিরোধে কর্মক্ষেত্রে আইন প্রণয়ন, প্রয়োগ, আইএলও সনদ ১৯০ অনুস্বাক্ষরসহ সচেতনতা বৃদ্ধির করতে হবে।
সোমবার (২ ডিসেম্বর) রাজধানীর একটি হোটেলে আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ উদযাপন উপলক্ষে জেন্ডার প্ল্যাটফর্ম বাংলাদেশ এর উদ্যোগে ‘আইএলও সনদ ১৯০ অনুসাক্ষর এবং কর্মক্ষেত্রের যৌন হয়রানি ও সুরক্ষা আইন প্রণয়ন’ শীর্ষক একটি জাতীয় গোল টেবিল বৈঠকে বক্তারা এসব কথা বলেন।
সলিডারিটি সেন্টারের কান্ট্রি প্রোগ্রাম ডিরেক্টর এ কে এম নাসিমের সভাপতিত্বে আয়োজিত বৈঠকে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব এ এইচ এম সফিকুজ্জামান। বিশেষ অতিথি ছিলেন শ্রম সংস্কার কমিশনের প্রধান সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহম্মদ, স্কপ প্রতিনিধি ও সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট এর সভাপতি রাজেকুজ্জামান রতন, ইন্ডাস্ট্রিঅল বাংলাদেশ কাউন্সিলের সাধারন সম্পাদক শহীদুল্লাহ বাদল, বিজিএমইএ-এর সাবেক সহ-সভাপতি আব্দুল্লাহ হিল রাকিব প্রমুখ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন আওয়াজ ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক নাজমা আক্তার এবং ধারণাপত্র উপস্থাপন করেন বিলস এর পরিচালক নাজমা ইয়াসমীন।
শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব এ এইচ এম সফিকুজ্জামান বলেন, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কমিটি গঠন করা হলেও অভিযোগ প্রাপ্তি অপ্রতুল হওয়ায় সেখানে যৌন হয়রানির অবস্থা কি এ বিষয়ে সুস্পষ্ট ধারনা পাওয়া সম্ভব হচ্ছে না। সরকার আইনি প্রক্রিয়ায় যৌন হয়রানি প্রতিরোধে আরও ইতিবাচক উদ্যোগ গ্রহণ করবে। দ্রুততম সময়ে ‘আইএলও সনদ ১৯০’ অনুস্বাক্ষর হওয়ার বিষয়ে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
বক্তারা বলেন, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে হাইকোর্টের নির্দেশনার বিষয়টি যথাযথভাবে অনুসরন করা হচ্ছে কিনা সে বিষয়ে পর্যবেক্ষণ থাকা জরুরি। কর্মক্ষেত্রে জেন্ডার সহিংসতা প্রতিরোধ করতে না পারলে নারী শ্রমিকদের ঝরে পড়া কমানো যাবে না। কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে নিরপেক্ষ সদস্য নিয়োগের বিষয়টিও সঠিকভাবে অনুসরন করা হচ্ছে না উল্লেখ করে তারা বলেন, সমাজে নারীর যে অবমূল্যায়নের শিকার হচ্ছে তা প্রতিহত করতে না পারলে নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধ দুরূহ হয়ে পড়বে। তৈরি পোশাক শিল্পে কর্মক্ষেত্র নিরাপত্তা যথেষ্ট হলেও নারীর প্রতি যৌন হয়রানির বিষয়ে মন মানসিকতা পরিবর্তন করা জরুরি। এ ক্ষেত্রে মাঠ পর্যায়ে সক্ষমতা জোরদার করতে হবে।
বৈঠকে অন্যান্যের মধ্যে আরও বক্তব্য রাখেন, সবুজের অভিযান এর নির্বাহী পরিচালক মাহমুদা আক্তার, নারীপক্ষের রওশন আরা, অ্যাকশন এইড বাংলাদেশ এর মরিয়ম নেসা, ফ্ল্যাড এর মারুফুল আলম, জাতীয় শ্রমিক জোট বাংলাদেশ এর শেখ শাহনাজ, গার্মেন্টস শ্রমিক সংহতির তাসলিমা আক্তার, সম্মিলিত গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের খাদিজা আক্তার, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সহকারী পরিচালক ইশরাত জাহান রিকতা, চিবো ব্র্যান্ড এর ফাতেমা চৌধুরী, ফ্যাশন ব্র্যান্ড এর সাবিহা আক্তার ,আইএলও’র আফসানা আক্তার, সলিডারিটি সেন্টার এর অনিন্দিতা ঘোষ, বহ্নিশিখা’র তাশরাফি হোসেন, মন্ডিয়াল এফএনভি’র কনসালটেন্ট শাহীনুর রহমান প্রমুখ।enoje
সারাবাংলা/ইএইচটি/এনজে