Monday 02 Dec 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘কট্টর হিন্দুত্ববাদী ও মমতা ব্যানার্জির মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই’

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
২ ডিসেম্বর ২০২৪ ২১:৩১ | আপডেট: ২ ডিসেম্বর ২০২৪ ২৩:৫৪

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী

ঢাকা: কট্টর হিন্দুত্ববাদী ও মমতা ব্যানার্জির মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসিচব রুহুল কবির রিজভী।

সোমবার (২ ডিসেম্বর) রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন। বাংলাদেশে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনী পাঠাতে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রস্তাবে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাতে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

বিজ্ঞাপন

রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘মমতা বন্দোপধ্যায় বাংলাদেশের সম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে এখানে জাতিসংঘের শান্তিবাহিনী পাঠানোর প্রস্তাব করেছেন, যা বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে অবজ্ঞা ও অপমান করার সামিল। এটি একটি স্বাধীন দেশের ওপর সরাসরি হস্তক্ষেপের হুমকি। বাংলাদেশের জনগণ পশ্চিম বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর এহেন বক্তব্যে বিষ্মিত ও হতবম্ব।’

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ পশ্চিম বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপধ্যায়কে একজন সেক্যুলার ও উদার দৃষ্টিভঙ্গির মানুষ হিসেবেই জানতো। আজকের বক্তব্যে আবারও প্রমাণ হলো- কট্টর হিন্দুত্ববাদী ও মমতা ব্যানার্জির মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই।’

রিজভী বলেন, ‘ভারতের অধিকাংশ রাজনীতিবিদ বাংলাদেশের মানুষের স্বাজ্যাত্যবোধ ও নাগরিক স্বাধীনতাকে মান্য করে না। সেই কাতারে মমতা ব্যানার্জিও তার অবস্থান পরিষ্কার করলেন। এরা নিজ দেশের অন্যায় দেখেও না দেখার ভান করে। গুজরাটের হাজার হাজার মুসলিম হত্যার সেই ট্রাজেডি আজও বিশ্ববাসী বিস্মৃত হয়নি। কাঁটাতারের বেড়ার ওপর ফেলানীর ঝুলন্ত লাশ এরা কি ভুলে গেছেন? ভারতের কেন্দ্রীয় সম্প্রদায়িক শাসকগোষ্ঠীর সঙ্গে একই কোরাসে অংশগ্রহণ করে মমতা ব্যানার্জি বাংলাদেশের স্বাধীন মর্যাদাকে অগ্রাহ্য করেছেন।’

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘পশ্চিম বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যে মনে হচ্ছে, শেখ হাসিনার পতন হওয়াতে তারা বিষন্ন বেদনায় মুষড়ে পড়েছেন। হত্যা, গুম, খুন, গণহত্যা, নির্যাতন, নিপীড়ন, গণতন্ত্র ধ্বংস করে দুর্নীতির মাধ্যমে লাখ লাখ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করে দেশটাকে ধ্বংসের শেষপ্রান্তে নিয়ে গিয়েছিল শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন দূরাচারী আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকার। এখন শেখ হাসিনাকে পুনর্বাসনের জন্য ভারতের প্রচেষ্টার অন্ত নেই। এদেশের মানুষ বিশ্বাস করে বাংলাদেশ থেকে পাচার হওয়া লাখ লাখ কোটি টাকার একটি বিরাট অংশ ভারতের রাজনীতিবিদদের পেছনে খরচ করা হচ্ছে।’

‘এখন একযোগে বাংলাদেশবিরোধী জিগির তুলছে কেন ভারতের নীতি নির্ধারকরা। আমরা এর আগেও দেখেছি সেদেশের রাজনীতিবিদরা মুখে যাই বলুক, তারা যে বাংলাদেশের স্বার্থের বিরুদ্ধে কাজ করেন তার প্রমাণ হচ্ছে শুধুমাত্র মমতা ব্যানার্জির কারণেই তিস্তা নদীর পানির চুক্তি বাস্তবায়িত হয়নি। সুতরাং তিনি কী উদ্দেশ্যে জাতিসংঘ বাহিনীকে বাংলাদেশে প্রেরণ করার প্রস্তাব করছেন এটা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে খোলাসা করা উচিত’— বলেন রিজভী।

তিনি আরও বলেন, ‘একটি অনির্বাচিত অগণতান্ত্রিক ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লুটেরা রেজিমকে মদদ দিয়ে বিনিময়ে ভারত একতরফাভাবে অনৈতিক স্বার্থ ও ফায়দা হাসিল করছিল। ভারতের সেই তাবেদার রেজিম উৎখাতের ফলে ভারতের অনৈতিক স্বার্থ হাসিলের ছেদ পড়ায় সেখানকার রাজনীতিবিদ ও নীতি নির্ধারকরা এখন বেসামাল হয়ে পড়েছেন। বাংলাদেশ ১৮ কোটি মানুষের দেশ। এই দেশ কীভাবে চলবে সেটি এদেশের জনগণ নির্ধারণ করবে। কোনো দেশের গভীর চক্রান্তের নীল নকশা কখনোই বাস্তবায়িত হবে না।’

রিজভী বলেন, ‘৮১ শতাংশ সনাতন ধর্মালবম্বীদের দেশ নেপালের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক উষ্ণ যেমন নয়, তেমনি নেপালের জনগোষ্ঠীও ভারতের প্রতি বন্ধু ভাবাপন্ন তো নয়, বরং বৈরি ভাবাপন্ন। তাই বুঝতে হবে বাংলাদেশ সনাতন ধর্মাবলম্বী নাগরিকদের প্রতি ভারতের অতি ভালোবাসা প্রকাশ ও এটিকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশের প্রতি হম্বি-তম্বির পেছনে ভারতের কোনো ধর্মীয় ভাবাবেগ, ভালোবাসা বা বন্ধন জড়িত নেই, আছে এটিকে পুঁজি করে ভারতের আধিপত্যবাদী আগ্রাসী মনোভাব ও ষড়যন্ত্র।’

সারাবাংলা/এজেড/পিটিএম

টপ নিউজ বিএনপি রুহুল কবির রিজভী

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর