ভারতকে বুঝতে হবে, এটা শেখ হাসিনার বাংলাদেশ নয়: আসিফ নজরুল
৩ ডিসেম্বর ২০২৪ ১২:৫৩ | আপডেট: ৩ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৪:২৪
ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলার ঘটনায় তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল। বাংলাদেশি হাইকমিশনকে ভারত নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে উল্লেখ করে এর তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন তিনি।
সোমবার (২ ডিসেম্বর) রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুকে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে উপদেষ্টা আসিফ নজরুল এ কথা বলেন। বর্তমান বাংলাদেশকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শাসনামলের বাংলাদেশের সঙ্গে মেলানো যাবে না বলেও উল্লেখ করেছেন তিনি।
বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন হচ্ছে অভিযোগ তুলে গতকাল সোমবার আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশন প্রাঙ্গণে ঢুকে হামলা চালায় হিন্দুত্ববাদী সংগঠন হিন্দু সংঘর্ষ সমিতিসহ কয়েকটি সংগঠনের সমর্থকরা। এ ছাড়া মুম্বাইয়ে বাংলাদেশ উপহাইকমিশনের কাছাকাছি বিশ্ব হিন্দু পরিষদ (ভিএইচপি) নামে একটি সংগঠন বিক্ষোভ করে। আগরতলায় সহকারী হাইকমিশনে হামলা চালানো হিন্দু সংঘর্ষ সমিতি মুম্বাইয়ের বিক্ষোভের আয়োজক ভিএইচপির সহযোগী সংগঠন।
সোমবারের এই হামলার প্রতিবাদ জানিয়ে আসিফ নজরুল লিখেছেন, ‘আজকে (সোমবার) ভারতের আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশন তছনছ করা হয়েছে। বাংলাদেশের পাতাকায় অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। হিন্দু সংঘর্ষ সমিতি নামে একটি সংগঠনের সদস্যরা এই ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটিয়েছে।’
পোস্টে পালটা প্রশ্ন করে আইন উপদেষ্টা লিখেছেন, “প্রশ্ন করি, এই ঘটনা ‘মুসলিম সংঘর্ষ সমিতি‘ নামের কোনো সংগঠন বাংলাদেশে করলে কেমন আক্রমণাত্মক প্রচারণায় মেতে উঠত ভারত?”
বিদেশে কোনো দেশের দূতাবাসকে নিরাপত্তা দেওয়া ওই দেশের দায়িত্ব উল্লেখ করে আসিফ নজরুল বলেন, ‘আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী ভারতের মাটিতে বাংলাদেশের সহকারী হাইকিমিশনকে পরিপূর্ণ নিরাপত্তা দেওয়ার দায়িত্ব ভারত সরকারের। তারা এটি করতে ব্যর্থ হয়েছে। এই ব্যর্থতার নিন্দা জানাই।’
এদিকে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলাদেশে শান্তিরক্ষী বাহিনী পাঠাতে জাতিসংঘের কাছে আবেদন করতে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিলেন। পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভার অধিবেশনে বক্তব্য দেওয়ার সময় তিনি এ কথা বলেন।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই বক্তব্যের তীব্র সমালোচনা করেন আইন উপদেষ্টা। বলেন, ‘নিন্দা জানাই পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতার মন্তব্যের। ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে যা ঘটে, সংখ্যালঘু ও দলিত সম্প্রদায়ের ওপর, এর জন্য বরং উলটো ভারতের (এবং মমতার) লজ্জিত হওয়া উচিত।’
ভারতের সঙ্গে শেখ হাসিনা সরকার তোষণ নীতি অবলম্বন করে চলত বলে পোস্টে উল্লেখ করেছেন আসিফ নজরুল। বলেছেন, এখন যে বাংলাদেশ আগের সেও বাংলাদেশ নেই, এটি এখন ভারতকে অনুধাবন করতে হবে।
ড. আসিফ নজরুল লিখেছেন, ‘ভারতকে বলি, আমরা সমমর্যাদা আর সমানাধিকারভিত্তিক বন্ধুত্বে বিশ্বাসী। শেখ হাসিনার সরকার বিনা ভোটে ক্ষমতায় থাকার লোভে ভারত-তোষণ নীতিতে বিশ্বাসী ছিল। তবে ভারতকে বুঝতে হবে, এটা শেখ হাসিনার বাংলাদেশ নয়। এই বাংলাদেশ স্বাধীন, সার্বভৌম ও আত্নমর্যাদাশীল। এই বাংলাদেশ নির্ভীক একটি তরুণ সম্প্রদায়ের।’
সারাবাংলা/জিএস/টিআর