ভারত যেন গণতান্ত্রিক বাংলাদেশকে তার শত্রু না করে: মাহফুজ

উপদেষ্টা মাহফুজ আলম। ফাইল ছবি

জুলাই-আগস্ট গণআন্দোলনের পর গণতান্ত্রিক অভিযাত্রায় থাকা বাংলাদেশের প্রতি আকুণ্ঠ সমর্থন জানাতে ভারতের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা মাহফুজ আলম। নতুন বাস্তবতা উপলব্ধি করে দ্ব্যর্থহীনভাবে গণআন্দোলন ও ছাত্র-জনতার গণতান্ত্রিক সংগ্রামকে দেশটির স্বীকৃতি দেওয়া উচিত বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।

বুধবার (৪ ডিসেম্বর) সকাল ৬টার দিকে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে এক পোস্টে উপদেষ্টা মাহফুজ আলম এসব কথা বলেন। ইংরেজি ভাষায় লেখা পোস্টের শিরোনাম তিনি দিয়েছেন ‘ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে সম্পর্ক বিষয়ে’।

উপদেষ্টা মাহফুজ আলম বলেন, ‘ভারতের উচিত পোস্ট-’৭৫ প্লেবুক পালটে বাংলাদেশের নতুন বাস্তবতা উপলব্ধি করা। এটি ’৭৫-পরবর্তী পরিস্থিতি নয়।

পোস্টে মাহফুজ লিখেছেন, ভারতের উচিত দ্ব্যর্থহীনভাবে বাংলাদেশে জুলাই অভ্যুত্থান এবং ছাত্র-জনতার গণতান্ত্রিক সংগ্রামকে স্বীকৃতি দেওয়া। এর মাধ্যমে শুরু করতে হবে। কারণ জুলাই অভ্যুত্থানকে পাশ কাটিয়ে নতুন বাংলাদেশের ভিত রচনা করা হলে তা দুই দেশের সম্পর্কের জন্য ক্ষতিকর হবে।

মাহফুজ আলম বলেন, জুলাই বিপ্লব ছিল একটি গণতান্ত্রিক, প্রজন্মভিত্তিক ও দায়িত্বশীল সংগ্রাম। আর এই সংগ্রাম চলবে দীর্ঘ সময় ধরে।… বাংলাদেশি জনগণও আগের মতো নেই। তারা এখন ঐক্যবদ্ধ ও মর্যাদাবান। তারা মরার আগ পর্যন্ত তাদের মর্যাদার জন্য লড়াই করবে।

জুলাই বিপ্লবকে এড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই উল্লেখ করে উপদেষ্টা লিখেছেন, বাংলার এই অংশে ভারতপ্রেমী বা ভারতীয় মিত্ররা ভাবছে যে পরিস্থিতি শান্ত হয়ে যাবে। জুলাই বিপ্লব ও ফ্যাসিবাদীদের নৃশংসতাকে এড়িয়ে গেলে তাদের কিছুই হবে না। কিন্তু এটি একটি ভুল ধারণা। মানুষ সব দেখছে!

ভারতীয় বিভিন্ন সংস্থা ও সংগঠন জুলাই-আগস্টের গণআন্দোলনকে জঙ্গি, হিন্দুবিরোধী ও ইসলামপন্থিদের ক্ষমতা দখল হিসেবে চিত্রিত করার চেষ্টা করেছে— এমনটিও উল্লেখ করেছেন মাহফুজ। লিখেছেন, ‘তাদের অপপ্রচার ও উসকানি ব্যর্থ হচ্ছে। কারণ ‘দিল্লি না ঢাকা? ঢাকা, ঢাকা!’ ও ‘স্বদেশ না শাহাদাত!’— এই স্লোগানগুলো বাংলাদেশকে একক অঙ্গে ঐক্যবদ্ধ করার জন্য দেশের প্রতিটি কোণে প্রতিধ্বনিত হচ্ছে।

ভারতকে তাই বাংলাদেশের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়ে মাহফুজ বলেন, ভারত যেন এই ঐক্যবদ্ধ, মর্যাদাবান ও গণতান্ত্রিক বাংলাদেশকে তার শত্রু না করে। দীর্ঘ প্রায় দুই দশক পর বাংলাদেশের জনগণ বিনা বাধায় গণতান্ত্রিক অধিকার ভোগ করছে। সত্য এসেছে… মিথ্যা ধ্বংস হবে। চিরকাল!

মুক্তিযুদ্ধ-পরবর্তী বাংলাদেশ রাষ্ট্র হিসেবে সফল হতে না পারলেও এবারে ব্যর্থতার সুযোগ নেই উল্লেখ করে উপদেষ্টা মাহফুজ লিখেছেন, একাত্তরের পর রাষ্ট্র হিসেবে আমরা ব্যর্থ হয়েছিলাম। কিন্তু এবার নয়! বাসস।

সারাবাংলা/টিআর

উপদেষ্টা মাহফুজ আলম