সিরিয়ায় বিদ্রোহী নেতা কে এই আবু মোহাম্মদ
৫ ডিসেম্বর ২০২৪ ২০:০৭ | আপডেট: ৫ ডিসেম্বর ২০২৪ ২১:৫৭
আবু মোহাম্মদ আল-জুলানি সিরিয়ার জঙ্গি গোষ্ঠী তাহরির আল-শামের প্রধান কমান্ডার। ২০১৬ সালে আল-কায়েদার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার আগে, জুলানি আল-কায়েদার সাবেক সিরিয়ান শাখা আল-নুসরা ফ্রন্টের আমির হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের প্রতিপক্ষ হিসেবে সবচেয়ে শক্তিশালী দল আবু মোহাম্মদের গোষ্ঠী তাহরির আল-শাম।
বর্তমানে সিরিয়ার সবচেয়ে স্বীকৃত বিদ্রোহী নেতা তিনি। আল কায়েদা থেকে বিছিন্ন হওয়ার পরে ধীরে ধীরে নিজের স্বতন্ত্র গোষ্ঠী তৈরি করে নতুন নামকরণ করেন তিনি। হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস) ২০১৭ সালে আল-নুসরা ফ্রন্ট (এএনএফ) এবং অন্যান্য কয়েকটি গোষ্ঠীর মধ্যে একীভূতকরণ থেকে গঠিত হয়েছিল।
এইচটিএস উত্তর-পশ্চিম সিরিয়ার একটি অংশ নিয়ন্ত্রণ করে, যার লক্ষ্য সিরিয়ার আসাদ সরকারকে উৎখাত করা এবং এটি প্রতিস্থাপন করা। সিরিয়ায় আল-কায়েদার সহযোগী হিসেবে একটি সুন্নি ইসলামিক রাষ্ট্রের সঙ্গে এইচটিএসের নিজস্ব লক্ষ্যকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া।
এইচটিএস প্রতিষ্ঠার পর থেকে বেশ কিছু মার্কিন নাগরিককে জিম্মি করেছে। এইচটিএস সিরিয়ার বিরোধীদের থেকে আলাদা একটি চরমপন্থী দল যেটি স্থানীয় শাসন এবং বহিরাগত চক্রান্তের উপর বিভিন্ন মাত্রায় প্রভাব বিস্তার করে।
২০১৩ সালে বেসামরিক লোকদের ওপর হামলা এবং একটি সহিংস সাম্প্রদায়িক দৃষ্টিভঙ্গিকে সমর্থন করার কারণে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আবু মোহাম্মদকে সন্ত্রাসী হিসেবে মনোনীত করে।
এর প্রায় আট বছর পরে, ইউএস পাবলিক ব্রডকাস্টিং সার্ভিসের ফ্রন্টলাইনের একটি প্রোগ্রামে সাক্ষাৎকার দেন তিনি।
সেখানে তিনি দাবি করেন যে, তাকে সন্ত্রাসী উপাধিটি অন্যায়ভাবে দেওয়া হয়েছে এবং তিনি নিরীহ মানুষ হত্যার বিরোধিতাও করেন।
কীভাবে নুসরা ফ্রন্ট এক বছরের মধ্যে ইরাক থেকে তার সঙ্গে আসা ৬ জন থেকে ৫ হাজার জনে পরিণত হয়েছে সেই সম্পর্কেও বিস্তারিত বলেন তিনি।
জুলানির দাবি, তার দল কখনই পশ্চিমাদের হুমকি দেয়নি।
তিনি সেখানে বলেন, ‘আমি আবারও বলছি – আল কায়েদার সঙ্গে আমাদের সম্পৃক্ততা শেষ হয়ে গেছে এবং আমরা যখন আল কায়েদার সঙ্গে ছিলাম তখনও আমরা সিরিয়ার বাইরে অভিযান চালানোর বিপক্ষে ছিলাম। এটি সম্পূর্ণভাবে আমাদের নীতির বিরুদ্ধে।’
বিগত সপ্তাহে আলেপ্পো দখল করার পর দীর্ঘদিন ধরে জিহাদিদের ভয়ে ভীত সিরিয়ার সংখ্যালঘুদের আশ্বস্ত করার উদ্দেশে সম্প্রতি বার্তা দিয়েছেন এই নেতা।
বুধবার (৪ ডিসেম্বর) তিনি আলেপ্পোর দুর্গ পরিদর্শন করেন এবং একজন যোদ্ধার সঙ্গে সিরিয়ার বিপ্লবের পতাকা উড়িয়ে আবারও আলোচনায় আসেন।
আলেপ্পো দখলের পরে সেখানকার একটি খ্রিস্টান শহরের বাসিন্দাদের উদ্দেশে দেওয়া একটি বার্তায় তিনি বলেন, যে তারা সুরক্ষিত থাকবেন এবং তাদের সম্পত্তিও সুরক্ষিত থাকবে। তারা যেন নিজের ঘরে অবস্থান নেন। সিরিয়ার সরকারের মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধ প্রত্যাখ্যান করার আহ্বানও জানান তিনি।
আবু মোহাম্মদ সম্পর্কে সিরিয়া বিশেষজ্ঞ এবং ওকলাহোমা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যপ্রাচ্য অধ্যয়নের কেন্দ্রের প্রধান জোশুয়া ল্যান্ডিস বলেন, ‘জুলানি আসাদের চেয়েও স্মার্ট। তিনি সত্যিই গুরুত্বপূর্ণ। সিরিয়ার প্রধান বিদ্রোহী নেতা, সবচেয়ে শক্তিশালী ইসলামপন্থী। এইচটিএস বছরের পর বছর ধরে ইদলিবে তার নিজস্ব অঞ্চল শাসন করে লজিস্টিক্যাল এবং শাসন ক্ষমতা প্রদর্শন করেছে।’
সারাবাংলা/এসডব্লিউ