আজ সুনামগঞ্জ মুক্ত দিবস
৬ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৩:৪৪ | আপডেট: ৬ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৫:৫৮
সুনামগঞ্জ: ১৯৭১ সালের এই দিনে (৬ ডিসেম্বর) সুনামগঞ্জ শহর হানাদার বাহিনী মুক্ত হয়। তৎকালীন সুনামগঞ্জ মহকুমা শহর ছেড়ে পিছু হটে পাকবাহিনী। সুনামগঞ্জ শহরের প্রতিটি এলাকার ঘরে ঘরে ওড়ে স্বাধীনতার লাল সবুজের পতাকা।
সুনামগঞ্জ মুক্ত দিবসের দিনেই সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজের ছাত্রনেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা তালেব উদ্দিনসহ ৩ মুক্তিযোদ্ধাকে নির্মমভাবে হত্যা করে পালায় পাক হায়েনারা। এই ঘটনাটি ছিল সুনামগঞ্জের মুক্তিকামী মানুষের জন্য বেদনাদায়ক।
বীর মুক্তিযোদ্ধারা জানান, তখনকার সময়ের ৫ নম্বর সাব সেক্টর কমান্ডার মেজর এম এ মোতালেব, সুনামগঞ্জ সীমান্তের যোগীরগাঁও ক্যাপ্টেন যাদব, সুনামগঞ্জ শহরতলির আমবাড়ী বাজার এলাকা ও ক্যাপ্টেন রঘুনাথ গৌরারং এলাকা হয়ে মুক্তিপাগল সেনারা জীবন বাজি রেখে ভোরে একযোগে সুনামগঞ্জ শহরে প্রবেশ করেন।
মুক্তিযোদ্ধা ও মিত্রবাহিনীর সাঁড়াশী অভিযানের মুখে পালিয়ে যায় পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী। এর আগে ২৭ নভেম্বর পাকসেনারা চারদিক দিয়ে আটঘাট বেঁধে আক্রমণ চালানোর কারণে মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার মঙ্গলকাটা ধরে রাখা অসম্ভব হয়ে পড়ে। মুক্তিযোদ্ধারা পিছু হটে পাশের গোধীগাঁও, নৈদেরখামার ও মীরেরচর এলাকায় এসে অবস্থান নিয়ে পাকসেনাদের সাথে প্রতিরোধ যুদ্ধ চালান। এক পর্যায়ে তৎকালীন মহকুমা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শহীদ ছাত্রনেতা মুক্তিযোদ্ধা তালেব উদ্দিন এখানে আটকা পড়েন। পাকবাহিনী সুনামগঞ্জ ছেড়ে যাবার সময় (৬ ডিসেম্বর, ১৯৭১) আহসানমারায় তালেবসহ ৩ জনকে একরশি দিয়ে বেঁধে গুলি করে নির্মমভাবে হত্যা করে নদীতে ফেলে যায়।
ছাত্রনেতা তালেব উদ্দিন ভালো স্লোগান দিতে পারতেন, তার জয় বাংলা স্লোগান উজ্জীবিত করতো সকলকে। তিনি সাহসী মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। তাকে দেশীয় দালালদের সহযোগিতায় আটক করে পাক হায়েনা ও রাজাকাররা শহরের গলি দিয়ে ঘুরিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছিল। তালেব উদ্দিনকে সুনামগঞ্জ পিটিআইয়ের টর্চারসেলে এনে নির্যাতন করা হয়। এক পর্যায়ে সুনামগঞ্জ ছেড়ে পালানোর সময় নির্মমভাবে তালেব উদ্দিনকে হত্যা করে পালায় পাকসেনারা।
৬ ডিসেম্বর সুনামগঞ্জ মুক্ত হওয়ায় সকলে আনন্দিত হয়ে উল্লাস করলেও তালেব উদ্দিনসহ ৩ মুক্তিযোদ্ধার মৃত্যু সহযোদ্ধাদের কাঁদিয়েছে।
সারাবাংলা/এনজে