‘বিদেশি প্রভুদের নিয়ে পতিত স্বৈরাচার দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে’
৬ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৯:৩৫ | আপডেট: ৬ ডিসেম্বর ২০২৪ ২১:০২
ঢাকা: অন্তর্বর্তী সরকারকে ব্যর্থ করতে ‘বিদেশি প্রভুদের নিয়ে পতিত স্বৈরাচার’ দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন।
শুকবার (৬ ডিসেম্বর) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে মাওলানা আকরাম খাঁ হয়ে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এ অভিযোগ করেন।
৬ ডিসেম্বর স্বৈরাচার এরশাদ পতন ও গণতন্ত্র দিবস উপলক্ষে এ আলোচনা সভা আয়োজন করে ৯০‘র ডাকসু ও সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্য।
ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, `আমাদের এখানে হিন্দু সম্প্রদায়, তারা কি শুধু গত তিন মাস যাবত বসবাস করে? তারা আমাদের স্বাধিকার আন্দোলন থেকে এখন পর্যন্ত অত্যন্ত সম্প্রীতির মধ্য দিয়ে এই বাংলাদেশে বাস করেছে। আজকে ভারত থেকে শুরু করে আমাদের এখানের হিন্দু সম্প্রদায়ের কিছু লোক কেন এই ধরনের সমস্যা সৃষ্টি করছে? সারা বিশ্বে বাংলাদেশের বদনাম করছে? আমাদের মানহানি করছে?— এর একটাই উদ্দেশ্য, এখানে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করা, এই অন্তবর্তীকালীন সরকার যাতে করে ব্যর্থ হয় সেজন্য যত রকমের সমস্যা তারা করছে, তারা করবে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা যারা জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক দেশাত্মবোধে বিশ্বাসী, আমরা যারা স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বে বিশ্বাস করি, গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি, আমরা নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে উন্নতির দিকে যেতে চাই, তাদেরকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। এই ঐক্যের জন্য আমরা এর আগেও আহ্বান জানিয়েছি, বর্তমান সরকারের প্রধান উপদেষ্টাও আহ্বান জানিয়েছেন। আমরা তাদেরকে সমর্থন দিয়ে এসেছি।’
খন্দকার মোশাররফ বলেন, ‘আমরা যদি ঐক্যবদ্ধ থাকি যে দেশই হোক না কেন আমাদের দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে তারা সফল হতে পারবে না। আমরা সফল হব। স্বৈরাচার এরশাদ পতনের দিনে আমরা দেশের জনগণকে আহ্বান জানাতে চাই, দল-মত-বর্ণ-ধর্ম নির্বিশেষে ঐক্যবদ্ধভাবে দেশকে উন্নতি পথে এগিয়ে নেওয়ার জন্য আমরা এক থাকব। যারা যত চেষ্টা করুক কেউ পারবে না আমাদের ক্ষতি করতে।’
তিনি বলেন, ‘এদেরে মানুষ প্রমাণ করেছে তারা সরকারের পতন ঘটাতে পারে, সরকার প্রতিষ্ঠা করতে পারে। ভোটের মাধ্যমে পারে, ভোটের মাধ্যমে না পারলে ৫ আগস্টে ছাত্র-জনতার বিপ্লবের মাধ্যমে পারে, যেমনটি ’৯০ সালে ৬ ডিসেম্বর পেরেছিল।’
খন্দকার মোশাররফ বলেন, ‘‘আওয়ামী ফ্যাসিস্টরা এদেশের ছাত্র-জনতার এবং রাজনৈতিক দলগুলোর সম্মিলিত আন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করে দেশ থেকে পলায়ন করতে বাধ্য হয়েছে। তারা আজকে একটি দেশে আশ্রয় গ্রহণ করেছে এবং সেটা বৈধভাবে আশ্রয় গ্রহণ নয়, অবৈধভাবে একটি দেশে আছে। সেখান থেকে তারা ষড়যন্ত্র করছে, আমাদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করছে।’
তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনা ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য রাষ্ট্রের সব প্রতিষ্ঠান ধবংস করে দিয়ে গেছে। সরকারের প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, এসব সংস্কার করা তাদের ওয়াদা। আমরা আশা করছি, যত দ্রুত সম্ভব এই সকল ক্ষেত্রে সংস্কার করে বিশেষ করে নির্বাচনের ক্ষেত্রে, নির্বাচনের পদ্ধতির ক্ষেত্রে যথা সম্ভব দ্রুত সংস্কার করা এবং নির্বাচনের একটি রোড ম্যাপ দেওয়া। এটা আমরা আগেও বলেছি, সেদিন আমাদেরকে প্রধান উপদেষ্টা সংলাপে ডেকেছিল, সেখানেও ভালোভাবে এটা উপস্থাপন করেছি।’
ডাকসুর সাবেক ভিপি আমান উল্লাহ আমানের সভাপতিত্বে ও নাজিম উদ্দিন আলমের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন নব্বইয়ের ছাত্র নেতা হাবিবুর রহমান হাবিব, জহির উদ্দিন স্বপন, খায়রুল কবির খোকন, কামরুজ্জামান রতন, খন্দকার লুৎফর রহমান, আসাদুর রহমান খান, সুরঞ্জন ঘোষ প্রমুখ।
সারাবাংলা/এজেড/এসআর