সিরিয়ায় আসাদের পতন: যা জানা গেল এখন পর্যন্ত
৮ ডিসেম্বর ২০২৪ ১০:৫৭ | আপডেট: ৮ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৩:১৭
সিরিয়ার বিদ্রোহী বাহিনী, হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস) গোষ্ঠী দেশজুড়ে নজিরবিহীন অগ্রগতি দেখিয়ে অবশেষে দামেস্ক দখল করেছে। বিদ্রোহীদের এই অগ্রগতির ফলে সিরিয়ার সরকার কঠিন সংকটে পড়েছে এবং দেশটির ভবিষ্যৎ নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে।
বিদ্রোহী বাহিনীর দাবি, তারা দামেস্ক দখল করেছে। সামাজিক মাধ্যমে প্রচারিত ভিডিওতে দেখা গেছে, সিরিয়ান সেনারা রাজধানীর রাস্তায় নিজেদের সামরিক পোশাক খুলে আসাদের দেশত্যাগ উদযাপন করেছে। বিদ্রোহীরা ঘোষণা করেছে যে তারা দামেস্কের কাছে অবস্থিত সাইদনায়া কারাগার থেকে বন্দীদের মুক্তি দিচ্ছে। পুরো রাজধানীজুড়ে শোনা যাচ্ছে গুলির শব্দ।
সরকারের অবস্থান
সিরিয়ান সরকারের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেওয়া হয়নি। তবে সরকারপন্থি রেডিও স্টেশন শাম এফএম জানিয়েছে, দামেস্ক বিমানবন্দর খালি করা হয়েছে এবং সমস্ত ফ্লাইট স্থগিত করা হয়েছে। বিদ্রোহীরা সাইদনায়া সামরিক কারাগারে প্রবেশ করেছে এবং সেখানে বন্দীদের মুক্ত করার দাবি করেছে।
প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ দেশ ছেড়ে চলে গেছেন বলে সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস জানিয়েছে। সংস্থার প্রধান রামি আবদেল রহমান জানিয়েছেন, ‘আসাদ দামেস্ক আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে দেশ ত্যাগ করেছেন, সেনাবাহিনী নিরাপত্তা বাহিনী বিমানবন্দর ছাড়ার আগেই।’ আসাদকে গত কয়েক দিন ধরে জনসমক্ষে দেখা যায়নি।
ইতিমধ্যে দামেস্ক বিদ্রোহীরা নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। ফলে এখন সিরিয়ান সরকারের হাতে মাত্র দুইটি প্রাদেশিক রাজধানীর নিয়ন্ত্রণ- লাতাকিয়া এবং তারতুস।
বিদ্রোহী কমান্ডার হাসান আবদুল-ঘানি রোববার (৮ ডিসেম্বর) জানিয়েছেন, বিদ্রোহীরা সিরিয়ার কেন্দ্রীয় শহর হোমস সম্পূর্ণভাবে দখল করেছে। সেখানে উদযাপনের খবর পাওয়া গেছে এবং বাশার আল-আসাদের ছবি সরানোর ছবি প্রকাশিত হয়েছে। বাশারের বাবা, হাফিজ আল-আসাদের একটি মূর্তিও জনতার ভেঙে ফেলেছে।
হোমসের পতন বাশার আল-আসাদের জন্য একটি বড় ধাক্কা। শহরটি দামেস্ক এবং লাতাকিয়া ও তারতুসের মধ্যে সংযোগস্থলে অবস্থিত। লাতাকিয়া এবং তারতুস অঞ্চলে আসাদ সমর্থকদের অবস্থান রয়েছে এবং সেখানে একটি রুশ সামরিক নৌঘাঁটিও রয়েছে।
সিরিয়ার সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, সিরিয়ার পরিস্থিতিতে সামরিক হস্তক্ষেপ থেকে বিরত থাকা উচিত। বিদ্রোহীদের অগ্রগতি নিয়ে ট্রাম্প শনিবার (৭ ডিসেম্বর) সামাজিক মাধ্যমে বলেছেন, ‘এটি আমাদের লড়াই না।’
জাতিসংঘের বিশেষ দূত গেয়ার পেডারসেন শনিবার (৭ ডিসেম্বর) জেনেভায় জরুরি আলোচনার আহ্বান জানিয়েছেন যেন একটি শৃঙ্খলাপূর্ণ রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিশ্চিত করা যায়। কাতারে অনুষ্ঠিত বার্ষিক দোহা ফোরামে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘সিরিয়ার পরিস্থিতি প্রতি মুহূর্তে পরিবর্তিত হচ্ছে।’
এছাড়া রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ, যিনি আসাদের প্রধান আন্তর্জাতিক সমর্থক, বলেছেন, ‘সিরিয়ার জনগণের জন্য আমি দুঃখিত।’
সারাবাংলা/এনজে