চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রামে বেগম রোকেয়া দিবসের এক আলোচনা সভায় বক্তারা বলেছেন, নারীর প্রতি সহিংসতা বন্ধের দায় কেবল রাষ্ট্র ও সরকারের নয়, সমাজে যার যার অবস্থান থেকে সবাইকে এজন্য ভূমিকা রাখতে হবে।
সোমবার (৯ ডিসেম্বর) দুপুরে বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘ (বিএনপিএস) চট্টগ্রাম কেন্দ্র আয়োজিত এক সভায় বক্তারা এসব কথা বলেছেন। নগরীর পাঁচলাইশে কারিতাস চট্টগ্রাম আঞ্চলিক কার্যালয়ের হলরুমে এ সভা হয়েছে।
সভায় বক্তারা বলেন, বেগম রোকেয়া নারী মুক্তির অগ্রদূত হিসেবে কাজ করেছিলেন বলেই নারীরা ঘর থেকে বেরিয়ে আসতে পেরেছেন। তবে বাইরে বেরিয়ে নারীদের পদে পদে বাধার সম্মুখীন হতে হয়েছে, এখনও হচ্ছে। কর্মক্ষেত্রে কিংবা ঘরে, নারীর প্রতি বৈষম্য সর্বত্র। তবে এজন্য নারীদের থেমে গেলে চলবে না, অধিকার আদায়ের লড়াই করতে হবে। যেখানেই নারীর প্রতি বৈষম্য কিংবা সহিংসতা হবে, সেখানেই প্রতিবাদ করতে হবে।

শোভাযাত্রা।
তারা আরও বলেন, নারীর প্রতি সহিংসতা গুরতর মানবাধিকার লঙ্ঘন। এর পক্ষে কোনো অজুহাতই গ্রহণযোগ্য নয়। রাষ্ট্রকে সহিংসতা বন্ধে অবশ্যই কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে। তবে এটাও মনে রাখতে হবে, নারীর প্রতি সহিংসতা বন্ধের দায় কেবল রাষ্ট্র ও সরকারের নয়, সমাজে যার যার অবস্থান থেকে সবাইকে ভূমিকা রাখতে হবে। ব্যক্তিপর্যায় থেকে কমিউনিটি পর্যায়ে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। সরকারি-বেসরকারি, করর্পোরেট সংস্থা, রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনকেও এগিয়ে আসতে হবে।
উপস্থিত বক্তারা বলেন, নাগরিক হিসেবে নিজেদের দায়িত্বটুকু পালন করে রাষ্ট্র ও সরকারের প্রতি জোর দাবি তুলে ধরতে হবে, যাতে সরকার বিদ্যমান আইন ও নীতির যথাযথ বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় বাজেট ও জনবল বিনিয়োগ করে এবং বৈষম্যমূলক আইনের প্রয়োজনীয় সংস্কারে উদ্যোগ নেয়।
বিএনপিএস চট্টগ্রাম কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক ফেরদৌস আহম্মদের সভাপতিত্বে ও তপন কান্তি দে’র সঞ্চালনায় সভায় বক্তব্য রাখেন সৌরিতা জাগ্রত মহিলা সমিতির সভাপতি সঞ্চিতা বড়ুয়া, বিএনপিএস কর্মকর্তা রুনা শাকিল আরা, উন্নয়ন কর্মকর্তা এস এম এরশাদুল করিম, কর্মসূচি সংগঠক বিপ্লব দাশ, নারীদল নেতা রোকেয়া বেগম, যুব সংগঠনের সভাপতি জান্নাতুল ফেরদৌস।
বেগম রোকেয়া দিবস উপলক্ষে ‘নারীর প্রতি সহিংসতা গুরতর মানবাধিকার লঙ্ঘন’- এ প্রতিপাদ্য নিয়ে লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতা বন্ধের দাবিতে ১৬ দিনের প্রচারাভিযান কর্মসূচি পালন করে আসছে বিএনপিএস। কর্মসূচির অংশ হিসেবে সোমবার সকালে কারিতাস চট্টগ্রাম আঞ্চলিক কার্যালয়ের মাঠে গণজমায়েত অনুষ্ঠিত হয়। এরপর শোভাযাত্রা বের হয়।