আধিপত্য বিস্তার নিয়ে সংঘর্ষে সাবেক ছাত্রদল নেতা নিহত
৯ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৯:৫৭ | আপডেট: ৯ ডিসেম্বর ২০২৪ ২১:২৯
মানিকগঞ্জ: আধিপত্য বিস্তারের জের ধরে মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলা সদরে বিএনপি-যুবদলের দুপক্ষের সংঘর্ষে উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক লাভলু আহমেদ (৩৭) নিহত হয়েছেন। সংঘর্ষে গুরুতর আহত হয়েছেন আরও ছয়জন।
সোমবার (৯ ডিসেম্বর) দুপুরে ঘিওর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে এ সংঘর্ষ ঘটে। সংঘর্ষের পর থেকে উপজেলা সদরে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। যেকোনো সময় আরও বড় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কা করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
সংঘর্ষে নিহত লাভলু আহমেদ কুস্তা গ্রামের মৃত আব্দুল হালিমের ছেলে। তিনি ২০০৩ সালে ঘিওর উপজেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। পরে তিনি কুয়েত চলে যান। সেখান থেকে চার মাস আগে দেশে ফিরে বিএনপির রাজনীতিতে সক্রিয় হয়ে ওঠেন।
আহতরা হলেন— একই গ্রামের মৃত দীন ইসলামের ছেলে ঘিওর সদর ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি রাহাতুজ্জামান খান আলতাফ (৪২), শওকত দর্জির ছেলে ওয়ার্ড যুবদল নেতা হিমেল দর্জি (২৫), উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. আফিকুল ইসলাম, মো. রফিকের ছেলে সোহাগ (২৫), আজাদ খানের ছেলে তামিম (২৫) ও শাহ আলমের ছেলে মো. সেলিম (২৮)।
প্রত্যক্ষদর্শী, পুলিশ ও আহতদের স্বজনরা জানান, দুপুরে ঘিওর বাস স্ট্যান্ড এলাকায় যুবদল নেতা কুস্তা গ্রামের বাসিন্দা হিমেলকে উপজেলা মোড় এলাকার সোহাগ, তানভীর, বাবু, শীতল, তামিম, সেলিমসহ অন্তত ১৫-২০ জন বেধড়ক পেটান। দুপক্ষের মারামারিতে আহত হিমেলকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়ার পথে পুনরায় তাদের ওপর হামলা চালানো হয়।
আহতদের দেখতে সাবেক ছাত্রদল নেতা লাভলু মিয়া, উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক আফিকুল ইসলাম, ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি রাহাতুজ্জামান আলতাফ হাসপাতালের গেটে পৌঁছালে তাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায় প্রতিপক্ষ। দেশীয় চাপাতি ও রামদা দিয়ে কুপিয়ে আহত করা হয় লাভলু, আলতাফ ও হিমেলকে। খবর পেয়ে ঘিওর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এদিকে গুরুতর আহত লাভলুকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে দায়িত্বরত চিকিৎসক তাকে ঢাকায় নেওয়ার পরামর্শ দেন। পরে সেখান থেকে মুন্নু মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। গুরুতর আহত আলতাফকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
ঘিওর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম বলেন, দুপক্ষের সংঘর্ষে লাভলু আহমেদের নামে এক বিএনপি নেতা মারা গেছেন। কয়েকজন আহত হয়েছেন। তদন্ত করা হচ্ছে। এ ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতারের চেষ্টাও চলছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মানিকগঞ্জ জেলা হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানা গেছে, তিন মাস ধরে স্থানীয় আধিপত্য বিস্তার ও রাজনৈতিক কোন্দল নিয়ে বিএনপির দুপক্ষের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলে আসছিল। এ নিয়ে কয়েক দফা মারামারি, শালিস বৈঠক ও হামলা-ভাঙচুরের ঘটনাও ঘটেছিল।
উপজেলা বিএনপির সভাপতি মীর মানিকুজ্জামান মানিক বলেন, আমি এলাকায় ছিলাম না। এ বিষয়ে কিছু জানিও না। কোনো মন্তব্যও নেই।
সারাবাংলা/এসআর