জবির ৭০০ শিক্ষার্থীকে আবাসন সুবিধা দিবে আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশন
১০ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৭:০৭
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়: জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীদের দীর্ঘদিনের আবাসন সংকট নিরসনে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও দেশের অন্যতম দাতব্য প্রতিষ্ঠান আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশন প্রাথমিকভাবে ৭০০ জন শিক্ষার্থীর আবাসন ব্যবস্থার চুক্তি করেন। এ বিষয়ে উভয়ের মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে।
মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ড. মো. শেখ গিয়াস উদ্দিন এবং আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের জেনারেল সেক্রেটারি মো. সাব্বির আহম্মদ এই চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। প্রকল্পটি ২০২৫ সালের এপ্রিল থেকে চালু হবে বলে জানানো হয়। এ চুক্তির আওতায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা নিরাপদ, পরিচ্ছন্ন এবং মানসম্মত আবাসনের সুযোগ পাবেন।
সমঝোতা অনুযায়ী, কেরাণীগঞ্জের বসুন্ধরা রিভারভিউ প্রজেক্ট এলাকায় আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশন প্রাথমিকভাবে ৭০০ শিক্ষার্থীর আবাসন ব্যবস্থা করবে। পর্যায়ক্রমে এই সংখ্যা ৫ হাজার শিক্ষার্থীতে উন্নীত করা হবে। ছেলে শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি মেয়ে শিক্ষার্থীদের জন্যও আবাসন সুবিধা নিশ্চিত করা হবে।
চুক্তি বিষয়ে শায়খ আহমাদুল্লাহ বলেন, ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দীর্ঘদিনের আবাসন সমস্যা সমাধানে আমরা আনন্দিত। এখানে ধর্ম-বর্ণ, নারী-পুরুষ নির্বিশেষে মেধার ভিত্তিতে আবাসনের সুযোগ দেওয়া হবে। শুধু মুসলিম শিক্ষার্থী নয়, ভিন্ন ধর্মের শিক্ষার্থীরাও তাদের নিজ নিজ ধর্ম পালনের সুযোগ পাবে।’
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. রেজাউল করিম বলেন, ‘গত ১২ নভেম্বর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মিটিংয়ে সিদ্ধান্ত অনুসারে আমরা আবাসন সংকট সমাধানে দেশি-বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলোর সাথে যোগাযোগ করছি। আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের মতো প্রতিষ্ঠানের সাথে এই চুক্তি একটি উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ। আমরা ইউজিসিতে একটি প্রকল্প প্রস্তাবনা জমা দিয়েছি, যা অনুমোদিত হলে অস্থায়ী হল নির্মাণ শুরু হবে। আমরা এ সংকট সমাধানে অব্যাহত প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। সফলতা পেলে তা প্রকাশ করা হবে।”
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সংশ্লিষ্ট কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মো. রইছ উদ্দীন বলেন, ‘এই প্রকল্পের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা শুধু আবাসন সমস্যার সমাধান পাবে না, বরং দক্ষ এবং আদর্শ মানব সম্পদে পরিণত হবে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এবং আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের এই সমঝোতা স্মারক শিক্ষার্থীদের মানসম্মত জীবনযাত্রা ও দক্ষতা উন্নয়নে যুগান্তকারী ভূমিকা রাখবে।’
এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. তাজাম্মুল হকের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক ড. মোস্তফা হাসান, ছাত্র হল-১ এর প্রভোস্ট মুহম্মদ আসাদুজ্জামান সাদী, ছাত্রকল্যাণ দপ্তরের পরিচালক ড. কে. এ. এম. রিফাত হাসান, আইকিউএসির পরিচালক অধ্যাপক ড. মোঃ আবু লায়েক, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান মোঃ মেজবাহ-উল-আজম সওদাগর, পরিবহন প্রশাসক অধ্যাপক ড. মো. ওমর ফারুক, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ নূরুল্লাহ, ইংরেজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. নাসির উদ্দিন আহমদ এবং ইতিহাস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বিলাল হোসাইনসহ বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক, প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
প্রসঙ্গত, সমঝোতা স্মারকের আওতায় উভয় পক্ষের প্রতিনিধিদের নিয়ে পাঁচ সদস্যের একটি পরামর্শক বোর্ড গঠন করা হবে। এই বোর্ড প্রকল্প পরিচালনা এবং সমস্যার সমাধান করবে। আবাসন সুবিধার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের দক্ষতা বৃদ্ধি এবং নৈতিকতার বিকাশে বিশেষ পদক্ষেপ নেওয়া হবে। এই প্রকল্পের আওতায় থাকবে, একটি অত্যাধুনিক কম্পিউটার ল্যাব, যেখানে ১০০টি কম্পিউটার থাকবে। শিক্ষার্থীদের জন্য আইইএলটিএস প্রস্তুতিমূলক প্রশিক্ষণ। প্রথম বছর প্রতিটি শিক্ষার্থীকে ব্র্যান্ড স্কোর ৭ অর্জনের লক্ষ্যে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। সফট স্কিল, নেতৃত্বগুণ এবং পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য প্রশিক্ষণ কার্যক্রম অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
সারাবাংলা/এমপি