‘হাওরে ইজারা অবিলম্বে বন্ধ করা উচিত’
১০ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৭:৫০ | আপডেট: ১০ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৯:০৯
ঢাকা: হাওরে ইজারা অবিলম্বে বন্ধ করা উচিত বলে উল্লেখ করেছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। তিনি বলেছেন, ‘মানুষের জীবন ও জীবিকা নষ্ট করে ইজারা দেওয়ার কোনো প্রশ্নই আসে না। যেসব এলাকায় সমস্যা, আপনারা আমাদের জানাবেন প্লিজ। আমরা সেখানে যাব।’
মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে এএলআরডি, বারসিক ও বেলা’র আয়োজনে হাওরের প্রাণ-প্রকৃতি, পরিবেশ, জীবন-জীবিকা, অর্থনীতি, সংস্কৃতি ও মানবাধিকার সুরক্ষায় ‘জাতীয় হাওর সংলাপ ২০২৪’ এ প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেছেন।
হাওর জীববৈচিত্র্যের আধার উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, হাওরাঞ্চলে ১৪৩ প্রজাতির দেশি মাছ ও ১২ প্রজাতির বিদেশি মাছ এবং কয়েক প্রজাতির মিঠা পানির চিংড়িসহ বিভিন্ন প্রকার ছোট-বড় মাছ, শামুক, ঝিনুক বিদ্যামান। এছাড়া দেশের মোট গবাদি পশুর ২২ শতাংশ, হাঁস ২৪ শতাংশ, ১২৯ দেশীয় ও ১২৮ প্রজাতির বিদেশি পাখি, ২৯ প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণী, ৯ প্রজাতির উভচর প্রাণী, ৪০ প্রজাতির সরীসৃপ এবং কয়েক প্রজাতির ধান রয়েছে।
উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব গ্রহণের পর চাষের মাছ নিয়ে খুব বেশি বলা হতো, দেশি মাছের কথা বললেই হাওরের মাছের কথা চলে আসে । অন্যদিকে যখন মৎস্যজীবীর কথা বলা হয় তখন প্রকৃত মৎস্যজীবী, অরিজিনাল মৎস্যজীবী-এরকম কথা চলে আসছে-এর মানে হচ্ছে এ পেশায় অনেকেই অন্যায়ভাবে প্রবেশ করেছে। যারা সত্যিকারের মৎস্যজীবী তাদেরকে মূল্যায়ন করা হয়নি।’
তিনি বলেন, ‘হাওর নিয়ে সবসময় টানাটানি হয়-মন্ত্রণালয়গুলো কেউ দায়িত্ব নিতে চায়না। হাওর রক্ষার দায়িত্ব আমাদের সবার, হাওর রক্ষায় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় দায়িত্ব পালন করবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘হাওরে যেমন মাছ ও ধান আছে, তেমনি প্রাণিসম্পদ রয়েছে। শুষ্ক মৌসুমে হাওরে উফসী ও হাইব্রিড ধানে কীটনাশক ও হার্বিসাইড ব্যবহারের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাতকে ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়। মেশিন দিয়ে ফসল কাটা হচ্ছে। এই মেশিন হাওরে নামার ফলে মাছ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। আমি কৃষি উপদেষ্টাকে জানিয়েছি, হাওরের ধানে যেন কীটনাশক না দেয়। মা মাছকে রক্ষা করতে হবে।’
মানবাধিকারকর্মী ও এএলআরডির নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদার সভাপতিত্বে এ সময় উপস্থিত ছিলেন রংপুর বিভাগের পরিবেশ অধিদফতরের পরিচালক মো. রফিকুল ইসলাম, শেয়ার দ্য প্ল্যানেট এসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট তেৎসু চুচুই, বেলা’র ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী তাসলিমা ইসলাম, পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের নির্বাহী সভাপতি ড. লেলিন চৌধুরী, অধ্যাপক আফজালুর রহমান, পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-প্রধান মো. বেলাল উদ্দীন বিশ্বাস প্রমুখ।
এতে সুনামগঞ্জ, সিলেট, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার, কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোণা ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া হাওরাঞ্চলের কৃষক, জেলে, আদিবাসী, হাওরের স্হানীয় প্রতিনিধি, সাংবাদিক, উন্নয়ন সংগঠন ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন।
সারাবাংলা/জেআর/এসডব্লিউ