Wednesday 11 Dec 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

দেশেই ইইউভুক্ত সব দেশের ভিসা সেন্টার স্থাপনের দাবি

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
১১ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৩:৩০ | আপডেট: ১১ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৭:৫৬

রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘বর্তমান সরকারের ভূমিকাকে অভিনন্দন’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা। ছবি: সারাবাংলা

ঢাকা: ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) বিভিন্ন দেশে উচ্চ শিক্ষা নিতে ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ বিবেচনায় বাংলাদেশেই দ্রুত ওইসব দেশের দূতাবাস বা কনস্যুলেট অফিস খোলার দাবি জানিয়েছে ফরেন অ্যাডমিশন অ্যান্ড ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্ট কনসালটেন্টস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ফ্যাকড-ক্যাব) নামের একটি সংগঠন।

বুধবার (১১ ডিসেম্বর) রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘ইউরোপীয় ইউনিয়নের সব দেশের অ্যাম্বাসি/কনস্যুলেট বাংলাদেশে খোলার ব্যাপারে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ এবং বাংলাদেশে ইউরোপীয় ইউনিয়নের কিছু দেশের ভিসা এপ্লিকেশন সেন্টার খোলায় বর্তমান সরকারের ভূমিকাকে অভিনন্দন’ শীর্ষক এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়।

বিজ্ঞাপন

ফরেন অ্যাডমিশন অ্যান্ড ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্ট কনসালটেন্টস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ফ্যাকড-ক্যাব) ওই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, বেশিরভাগ দূতাবাস বা কনস্যুলেট অফিস ভারতে অবস্থিত হওয়ায় ও রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে বর্তমানে ভারতীয় ভিসা বন্ধ থাকায় দেশের প্রায় ৩০ হাজার শিক্ষার্থী ভিসা প্রসেসিংয়ে বাধাগ্রস্ত হচ্ছেন। এদের অনেকেই এরইমধ্যে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাডমিন ফি দিয়ে দিয়েছে। অনেককে অ্যাম্বাসি ফেস করতেও সময় দেওয়া হয়েছে। তবে ভারতের ভিসা বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীরা অ্যাম্বাসি ফেস করতে পারছেন না। ফলে বিপুল অঙ্কের আর্থিক ক্ষতির মুখেও পড়েছেন তারা। তাই দ্রুত বাংলাদেশে ভিসা সেন্টার স্থাপন করা দরকার। তবে কোন কারণে ইইউভুক্ত সব দেশ যদি বাংলাদেশে ভিসা সেন্টার স্থাপন করতে না পারে, সেক্ষেত্রে পার্শ্ববর্তী দেশ নেপালে ভিসা সেন্টার স্থাপন করা হলে শিক্ষার্থীরা কিছুটা হলেও ক্ষতির মুখ থেকে বাঁচবে।

বিজ্ঞাপন

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ফ্যাকড-ক্যাব এর প্রেস কনফারেন্স বিষয়ক সাব-কমিটির আহ্বায়ক মো. মামুন রানা। এতে আরও উপস্থিত ছিলেন এফবিসিসিআই’র বৈষম্য বিরোধী সংস্কার পরিষদের সংগঠক ও আটাব এর যুগ্ম মহাসচিব আতিকুর রহমান, ইমিগ্রেশন স্পেশালিস্ট এ কে এম রেজাউল করীম, ব্যারিস্টার মনির হোসেন, ফ্যাকড-ক্যাব’র আহ্বায়ক আব্দুল কাদির বাবু, যুগ্ম আহ্বায়ক মনিরুল হক ও যুগ্ম আহ্বায়ক বশির আহমেদ প্রমুখ।

মো. মামুন রানা বলেন, ‘দেশের স্বৈরতন্ত্রের পতনের মধ্য দিয়ে জাতীয় জীবনে আমরা মুক্তি পেলেও, প্রতিবেশী নামের আন্তর্জাতিক স্বৈরাচারদের ষড়যন্ত্র আর মিথ্যাচারের স্বীকার আমরা প্রতিনিয়ত হচ্ছি। আমাদের দেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রাকে ব্যাহত করতে, সকল চেষ্টাই তারা অব্যাহত রেখেছে। আমরা মনে করি এই প্রতিহিংসা আর ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবেই তারা আমার দেশের ছাত্র সমাজের বিদেশে উচ্চ শিক্ষার মাধ্যমে উজ্জ্বল ভবিষ্যতের স্বপ্নকে ধূলিসাৎ করতে বাংলাদেশের নাগরিকের জন্য ভিসা প্রদান সীমিত বা কোন কোন ক্ষেত্রে বন্ধ রেখেছে।’

তিনি বলেন, ‘ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইউ) অন্তর্ভুক্ত বেশীরভাগ দেশের অ্যাম্বাসি/কনস্যুলেট ভারতে অবস্থিত হওয়ায়, বাংলাদেশ হতে শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে ওই দেশগুলোতে যেতে, ভারতে যেয়ে ভিসা ইন্টারভিউ ফেস করতে হয়, যা একটি সময় ও ব্যয় সাপেক্ষ এবং জটিল প্রক্রিয়া। অপরদিকে ভারতে, শিক্ষার্থীরা ভিসা নিয়ে নির্দিষ্ট দেশের এম্বাসি ফেস করতে যাওয়ার সময়, একটি অসাধু চক্র সরলতার সুযোগে শিক্ষার্থীদের দিয়ে কালো টাকা পাচার বা মানি লন্ডারিং এর মত অপরাধ করে আসছে মর্মেও অভিযোগ রয়েছে, যা দেশের অর্থনীতির জন্য মঙ্গলজনক নয়।

তিনি আরও বলেন, বর্তমানে দেশের ঐতিহাসিক রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর, ভারতের ভিসা প্রদান বন্ধ বা সীমিত হয়ে যাওয়ায়, ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইউ) অন্তর্ভুক্ত দেশগুলোতে শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষার সুযোগ ব্যাপকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। শুধু তাই নয়, হাজার হাজার শিক্ষার্থী ইতিমধ্যে ইউরোপের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছে এবং টিউশন ফী’ও পাঠিয়েছে। এই অবস্থায় শিক্ষার্থীরা সংশ্লিষ্ট এম্বাসির ইন্টার্ভিউ শিডিউল পেলেও ভারতের ভিসা বন্ধ থাকায় এবং সংশ্লিষ্ট দেশের এম্বাসি ফেস না করাতে কোন সিদ্ধান্ত না পাওয়ায় এই শিক্ষার্থীরা চরম বিপাকে পড়েছেন এবং একটি বড় আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হওয়ার উপক্রম হয়েছে।’

লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, স্বাধীন দেশের সার্বভৌমত্ব বজায় রাখতে, দেশের সাথে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ভুক্ত দেশ গুলোর কূটনৈতিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক সুদৃঢ় করতে ই.ইউ অন্তর্ভুক্ত দেশ গুলোর এম্বাসি/কনস্যুলেট দেশে স্থাপনের কোন বিকল্প নেই। ইউরোপীয় ইউনিয়ন ভুক্ত সকল দেশের এম্বাসি/কনস্যুলেট সেবা সরাসরি আমাদের দেশ হতে পাওয়া গেলে, শিক্ষার্থীদের স্বল্প খরচে ইউরোপে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ কয়েকগুন বৃদ্ধি পাবে এবং শিক্ষার্থী ও তার পরিবারের সময়, শ্রম এবং আর্থিক ব্যয় অনেকাংশে কমে আসবে। এতে করে ইউরোপের দেশগুলোতে শিক্ষার্থীদের বার্ষিক গমনের সংখ্যা ২০ শতাংশ থেকে উন্নীত হয়ে ৩০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়তে পারে।

এতে আরও বলা হয়, আমরা ইতোমধ্যে দেখেছি যে, বর্তমান সরকারের দক্ষতা, আন্তরিকতা ও সার্বিক প্রচেষ্টায় ইতোমধ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়ন যুক্ত কয়েকটি দেশের ভিসা এপ্লিকেশন সেন্টার এর কার্যক্রম দেশে শুরু হয়েছে। এমন একটি দেশ বান্ধব ও শিক্ষার্থীবান্ধব প্রচেষ্ঠার জন্য আমরা বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মোহাম্মদ ইউনূস স্যারের প্রতি  ফ্যাকড-ক্যাব কৃতজ্ঞতার সাথে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছে।

সারাবাংলা/ইএইচটি/এসডব্লিউ/আরএস

ইইউ ভিসা সেন্টার স্থাপনের দাবি

বিজ্ঞাপন

৫১ সদস্যের মজলিসে আমেলা গঠন
১১ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৭:৪৩

আরো

সম্পর্কিত খবর