উৎসব না হলেও বছরের শুরুতেই শিক্ষার্থীদের হাতে বই দিতে চায় সরকার
১১ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৯:২২
ঢাকা: বই ছাপাতে দেরি হওয়ায় এবার ১ জানুয়ারি, অর্থাৎ বছরের প্রথম দিন বই উৎসব হচ্ছে না। তার পরও ওই দিন শিক্ষার্থীদের হাতে কিছু বই তুলে দিতে চাইছে সরকার। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, শিক্ষার্থীদের মাঝে আনন্দ ধরে রাখতে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
বুধবার (১১ ডিসেম্বর) সচিবালয়ে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয় সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির সভা। সেখানে পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণ, বাঁধাই ও সরবরাহের অনুমোদন দেওয়া হয়।
এবার বছরের শুরুতে শিক্ষার্থীরা বই পাবে কি না?- সভা শেষে এমন প্রশ্নের উত্তরে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আজ যেটা আমরা অনুমোদন দিয়েছি, সেটা তারা অলরেডি কাজ শুরু করে দিয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘আগামী জানুয়ারিতে সব পাঠ্যপুস্তক পাওয়া যাবে না।’
সাংবাদিকদের তিনি আরও বলেন, ‘পাঠ্যবই আমরা দ্রুত চাচ্ছি। আজকের বৈঠকে নবম, দশম শ্রেণির পাঠ্যবই মুদ্রণের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। জেনারেল এডুকেশন প্লাস মাদরাসার (সাধারণ শিক্ষা ও মাদরাসার জন্য) পাঠ্যবই জানুয়ারির মধ্যে করে ফেলতে বলেছি। চেষ্টা করবে, তবে জানুয়ারির মধ্যে হয়তো সবগুলো করে ফেলতে পারবে না।’
এদিকে, খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এবার সব ক্লাসের বই পেতে মার্চ মাস পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।
এর আগে, খুলনা সফরে গিয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার বলেছিলেন, ‘প্রতিবছর দেশের বাইরের প্রকাশনাগুলো বই ছেপে দিতো। এবার ৫ আগস্টের পরে সেই টেন্ডার বাতিল করে নতুন টেন্ডার আহ্বানের ফলে বই ছাপাতে কিছুটা দেরি হচ্ছে। এজন্য বই বিতরণে কিছুটা দেরি হবে। তবে প্রাথমিকের বই জানুয়ারির মধ্যেই বিতরণ করা সম্ভব হবে।’
আজকের বৈঠকে শিক্ষার্থীদের হাতে দ্রুত নতুন পাঠ্যপুস্তক তুলে দিতে নবম ও দশম শ্রেণি এবং ইবতেদায়ির (চতুর্থ ও পঞ্চম) ১২ কোটি ৮০ লাখ ৬৪ হাজার ৬২৪টি পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণ, বাঁধাই ও সরবরাহের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এতে ব্যয় হবে এক হাজার ৩৮ কোটি ৪৪ লাখ ৭ হাজার ২২৭ টাকা।
বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, ২০২৫ শিক্ষাবর্ষের মাধ্যমিক (বাংলা ও ইংরেজি ভার্সন) নবম শ্রেণি, দাখিল নবম শ্রেণি ও কারিগারি নবম শ্রেণির বিনামূল্যের ৬ কোটি ২৮ লাখ ৫১ হাজার ৫৪০টি পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণ, বাঁধাই ও সরবরাহের অনুমোদন দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি। এতে মোট ব্যয় হবে ৫২৫ কোটি ৩৪ লাখ ৯৬ হাজার ৪৭৫ টাকা। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ থেকে এই পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণ, বাঁধাই ও সরবরাহের প্রস্তাব আসে।
সভায় মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের আরেক প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে ২০২৫ শিক্ষাবর্ষে সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে মাধ্যমিক বাংলা ভার্সন ১০, শ্রেণির এক কোটি ১০ হাজার ৯৮১টি পাঠ্যপুস্তাক মুদ্রণ, বাঁধাই ও সরবরাহের অনুমোদন দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি। বিনামূল্যের এই পাঠ্যপুস্ত ৩৬টি দরপত্রের মাধ্যমে সংগ্রহ করা হবে। এতে মোট ব্যয় হবে ৮৯ কোটি ৮৫ লাখ ২২ হাজার ৫৭৯ টাকা।
এছাড়া মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের আরেক প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে ২০২৫ শিক্ষাবর্ষের ইবতেদায়ি (চতুর্থ ও পঞ্চম), মাধ্যমিক (বাংলা ও ইংরেজি ভার্সন) দশম শ্রেণি, দাখিল দশম শ্রেণি ও কারিগরি দশম শ্রেণির বিনামূল্যের ৫ কোটি ৫২ লাখ ২ হাজার ১০৩টি পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণ, বাঁধাই ও সরবরাহের অনুমোদন দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি। এতে মোট ব্যয় হবে ৪২৩ কোটি ২৩ লাখ ৮৮ হাজার ১৭৩ টাকা।
সারাবাংলা/জেআর/পিটিএম