ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা
তালিকা থেকে বাদ যাচ্ছেন ২১১১ জন
১১ ডিসেম্বর ২০২৪ ২০:০৮ | আপডেট: ১১ ডিসেম্বর ২০২৪ ২৩:০০
ঢাকা: মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উপদেষ্টা ফারুক ই আজম বলেছেন, যারা ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা তারা যদি স্বেচ্ছায় এসে স্বীকার করেন, তাহলে তাদের জন্য সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করা হবে। নয়তো প্রতারণার দায়ে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমুলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের বয়স মন্ত্রণালয় থেকে ১২ বছর ৬ মাস নির্ধারণ করা আছে। এর চেয়ে কম বয়সী আছেন ২ হাজার ১১১ জন। এরা তালিকা থেকে বাদ যাবেন।
বুধবার (১১ ডিসেম্বর) মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-আন্দোলনের প্রাথমিক ও মূল লক্ষ্য ছিল কোটা সংস্কার। পরবর্তী সময়ে এ আন্দোলন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে রূপ নেয়। এই আন্দোলনের চেতনাকে ধারণ করে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় প্রকৃত বীর মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা এবং সরকারি চাকরিতে প্রথম থেকে চতুর্থ শ্রেণির পদে এ পর্যন্ত মুক্তিযোদ্ধা কোটায় নিয়োগপ্রাপ্ত জনবলের সংখ্যা যাচাইয়ের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।’
উপদেষ্টা বলেন, ‘এরই মধ্যে মন্ত্রণালয় থেকে অমুক্তিযোদ্ধা শনাক্তকরণ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। অমুক্তিযোদ্ধা শনাক্তকরণে অভিযোগ ফরম মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হয়েছে। মুক্তিযোদ্ধাদের তথ্যাদি যাচাই-বাছাইয়ের জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ ডাটাবেজ তৈরির কাজ এগিয়ে চলছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় নিয়োগপ্রাপ্তদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রস্তুত করার জন্য সব মন্ত্রণালয় থেকে তথ্যাদি সংগ্রহের কার্যক্রম নেওয়া হয়েছে। ফলে সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় নিয়োগপ্রাপ্তদের সংগৃহীত তথ্যাদি যাচাই-বাছাইপূর্বক একটি পূর্ণাঙ্গ ডাটাবেজ তৈরি করা যাবে। এ পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় নিয়োগপ্রাপ্তদের সংখ্যা ৮৯ হাজার ২৩৫ জন।’
মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উপদেষ্টা বলেন, ‘বহু অভিযোগ আছে। অনেকেই মুক্তিযোদ্ধা না হয়েও তালিকাভুক্ত হয়েছেন এবং সব সুযোগ-সুবিধা নিয়েছেন। এটা জাতির সঙ্গে প্রতারণা। আদালত নির্ণয়ের পর এদের সাজার ব্যবস্থা করা হবে। এদের শাস্তি পাওয়া উচিত। নানা রকমের তালিকা এখানে আছে। একটু সময় তো লাগবেই। আমাদের চেষ্টা থাকবে সত্যিকারের মুক্তিযোদ্ধাদের মর্যাদা যেন ক্ষুণ্ণ না হয়।’
উপদেষ্টা জানান, মন্ত্রণালয় থেকে ভাতাপ্রাপ্ত মোট বীর মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা ১ লাখ ৯৬ হাজার ৪৫৪ জন। এর মধ্যে বীরাঙ্গনা ৪৬৪ জন। যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা ৫ হাজার ৮৯৫ জন, শহিদ বীর মুক্তিযোদ্ধা ৫ হাজার ৩৩৩ জন এবং খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা ৩৬৮ জন। সব মিলিয়ে মোট ভাতাপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা ২ লাখ ৮ হাজার ৫০ জন।
তিনি বলেন, ‘সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় নিয়োগপ্রাপ্তদের সর্বমোট সংখ্যা ৮৯ হাজার ২৩৫ জন। আর শহিদ বুদ্ধিজীবীদের সংখ্যা ৫৬০ জন।’
এক প্রশ্নের জবাবে ফারুক ই আজম বলেন, ‘রাজাকারের তালিকা আমার কাছে নেই। কোনো ফাইল পাইনি। মন্ত্রণালয়েও এ বিষয়ে নথি নাই। তালিকা করতে চাইলেও করা যাবে না। যেভাবে মুক্তিযোদ্ধার তালিকা এখন করা সম্ভব না। এটা অত্যন্ত দুরূহ কাজ। ৫০ বছর আগের ঘটনা এখন কে কোথায় আছেন, এটা বের করা অনেক কঠিন।’
সারাবাংলা/ইউজে/পিটিএম