বাংলা একাডেমিতে শ্রদ্ধায় সিক্ত হেলাল হাফিজ
১৪ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৪:০৭ | আপডেট: ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৪:৩০
চিরকুমার কবি বেছে নিয়েছিলেন একাকী জীবন। মনে তরুণ হলেও শরীরে যখন বার্ধক্য বাসা বাঁধে, স্বজনরা বারবার হাসপাতালে নিতে চেয়েছিলেন। চেয়েছিলেন নিজেদের কাছে নিয়ে রাখতে। কিন্তু কবি বলেছিলেন, ‘আমার আর সময় নেই, আই কুইট।’
নিজের মৃত্যুকে এতটাই কাছ থেকে অনুভব করেছিলেন প্রেম ও দ্রোহের কবি হেলাল হাফিজ। সেই কবি সত্যি সত্যিই না পৃথিবীর মায়া কাটিয়ে না ফেরার দেশে পাড়ি জমিয়েছেন। পরদিন বাংলা একাডেমিতে যখন তার মরদেহ নেওয়া হলো, সেখানে তাকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে ছুটে এসেছিলেন সাহিত্য অঙ্গনের মানুষসহ তার পাঠকরা।
শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) দুপুরে হেলাল হাফিজের মরদেহ নেওয়া হয় বাংলা একাডেমিতে। নজরুল মঞ্চের সামনে তাকে শেষ বিদায় জানানো হয়। সেখানেই তার প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
কবিকে শেষ বিদায় জানাতে উপস্থিত জয়েছিলেন সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী, বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ আজমসহ সাহিত্যিক ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনের ব্যক্তিত্বরা। ছিলেন বড় ভাই দুলাল হাফিজ, ছোট ভাই নেহাল হাফিজসহ কবি পরিবারের সদস্যরা।
নেহাল হাফিজ বলেন, ‘আমরা তো তাকে পরিবার থেকে হারিয়েছি। কিন্তু বাংলাদেশের সাহিত্যাঙ্গন একজন বড় ব্যাক্তিত্ব হারিয়েছে।’
তারুণ্য ও যৌবনের গান বললেই হেলাল হাফিজের কথা মনে পড়ে— এমন মন্তব্য করেন সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। তিনি বলেন, ‘মাত্র একটি কবিতার বই লিখে একটি জাতির শিল্প-সংস্কৃতির ইতিহাসে এত প্রভাব আর কোনো কবি রাখতে পেরেছেন কি না, আমার জানা নেই। উনি খুব বেশি লিখেননি। কিন্তু তারুণ্য ও যৌবনের গান বললেই হেলাল হাফিজের কথা মনে পড়ে। এটি উনার অর্জন।’
আবৃত্তি শিল্পী রাশিদ কামাল বলেন, ‘বাংলাদেশের ইতিহাস যতদিন থাকবে, হেলাল হাফিজ ততদিন থাকবেন। এমনকি ২০২৪ সালের অভ্যুত্থানেও তিনি প্রাসঙ্গিক ছিলেন।’
হেলাল হাফিজের পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, তীব্র অসুস্থ হওয়ার পর অনেকবার তাকে হাসপতালে নেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু হেলাল হাফিজ বারবারই সে আহ্বান প্রত্যাখ্যান করেছেন।
সারাবাংলা/এআইএন/টিআর