শেখ হাসিনা-তারিক-জিয়া-মনিরুল-হারুন গুমে সম্পৃক্ত
১৪ ডিসেম্বর ২০২৪ ২১:০৯ | আপডেট: ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪ ২১:৩৮
ঢাকা : জোরপূর্বক গুমের ঘটনায় ভারতে পালিয়ে যাওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ পাঁচ জনের সম্পৃক্ততা খুঁজে পেয়েছে গুম সংক্রান্ত কমিশন অব ইনকোয়ারি। অপর চারজন হলেন- সাবেক প্রধানমন্ত্রীর প্রতিরক্ষাবিষয়ক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক, ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারের (এনটিএমসি) সাবেক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসান, পুলিশ কর্মকর্তা মো. মনিরুল ইসলাম ও মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।
শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) বিকেলে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে গুম সংক্রান্ত কমিশনের জমা দেওয়া প্রতিবেদনে এসব নাম ওঠে এসেছে। অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের কমিশন ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার কাছে ‘আনফোল্ডিং দ্য ট্রুথ’ শীর্ষক প্রতিবেদন হস্তান্তর করে।
গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় এবং শিল্প মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, সমাজকল্যাণ এবং মহিলা ও শিশু বিষয়ক উপদেষ্টা শারমিন এস মুরশিদ এবং কমিশনের সদস্য হাইকোর্ট বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মো. ফরিদ আহমেদ শিবলী, মানবাধিকারকর্মী নূর খান, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নাবিলা ইদ্রিস ও মানবাধিকার কর্মী সাজ্জাদ হোসেন এসময় উপস্থিত ছিলেন।
কমিশনের প্রতিবেদনে মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য দায়ী উল্লেখিত ব্যক্তিদের অভিযুক্ত করার পাশাপাশি র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নকে (র্যাব) বিলুপ্তের সুপারিশ করে বলা হয়েছে, প্রাপ্ত ১ হাজার ৬৭৬টি অভিযোগের মধ্যে কমিশন ৭৫৮ জনের অভিযোগ যাচাই-বাছাই করেছে। গুমের ঘটনায় নির্দেশদাতা হিসেবে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সম্পৃক্ততার প্রমাণ পেয়েছে কমিশন। এছাড়াও শেখ হাসিনা প্রশাসনের বেশ কয়েকজন প্রভাকশালী ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারও সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে।
এ বিষয়ে কমিশন প্রধান মইনুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘গুমের সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তারা কাজটি এমনভাবে করেছেন, যাতে এগুলো শনাক্ত করা কঠিন। গুমকালীন বিভিন্ন ফোর্স নিজেদের মধ্যে ভিকটিম বিনিময় করেছে এবং পরিকল্পনা ভিন্ন ভিন্নভাবে বাস্তবায়ন করেছে। গুমের শিকার অনেকে এখনো শঙ্কামুক্ত হতে পারছেন না। তাদের ওপর এতটাই ভয়াবহ নির্যাতন চালানো হয়েছিল যে, তারা এখনো ট্রমায় ভুগছেন।’
কমিশনের সদস্যরা প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসকে আয়নাঘর পরিদর্শনের অনুরোধ জানিয়ে বলেন, ‘আপনি আয়নাঘর পরিদর্শন করলে ভিকটিমরা অভয় পেতে পারেন।’
কমিশন সদস্যদের এমন অনুরোধে সম্মতি দিয়ে প্রধান উপদেষ্টা তাদের জানান যে, স্বল্প সময়ের মধ্যেই তিনি জয়েন্ট ইন্টারোগেশন সেল, যা আয়নাঘর নামে পরিচিতি পেয়েছে সেগুলো দেখতে যাবেন।
তিনি কমিশন সদস্যদের তাদের অন্তর্বর্তী প্রতিবেদনের জন্য ধন্যবাদ জানান এবং কাজটি এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সব সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
কমিশন প্রধান মইনুল ইসলাম চৌধুরী জানান, তারা তিন মাস পর মার্চে আরও একটি ইন্টেরিম রিপোর্ট দেবেন। কাজটি শেষ করে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিতে কমপক্ষে আরও এক বছর সময় প্রয়োজন।
সারাবাংলা/জিএস/আরএস/পিটিএম