‘অনির্বাচিত কাউন্সিলররা ছিলেন একেকজন ডাকাত সর্দার’
১৫ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৭:৪৮ | আপডেট: ১৫ ডিসেম্বর ২০২৪ ২০:১৬
চট্টগ্রাম ব্যুরো: ভোট ডাকাতির নির্বাচনে গদি দখল করা অনির্বাচিত ওয়ার্ড কাউন্সিলররা একেকজন ‘ডাকাত সর্দার’ ছিলেন বলে মন্তব্য করেছেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন।
রোববার (১৫ ডিসেম্বর) দুপুরে নগরীর সল্টগোলা ক্রসিং এলাকায় স্থানীয় বিএনপির উদ্যোগে শুরু হওয়া খাল খনন কর্মসূচির উদ্বোধন অনুষ্ঠানে মেয়র একথা বলেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মেয়র আওয়াম লীগের সমালোচনা করে বলেন, ‘ক্ষমতায় থেকে আওয়ামী লীগ জনগণের উন্নয়নের জন্য কোনো কাজ করেনি। রাস্তাঘাটের কোনো উন্নয়ন তারা করেনি। খাল খনন করেনি। ফলে জলাবদ্ধতা বড় সংকট হয়ে গেছে। বিএনপি জনগণের জন্য কাজ করে আর আওয়ামী লীগ সবসময় লুটপাট করে। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনে, ভোট ডাকাতির নির্বাচনে গদি দখল করা অনির্বাচিত ওয়ার্ড কাউন্সিলররা একেকজন ডাকাত সর্দার ছিল। তারা উন্নয়নের পরিবর্তে টাকা চুরি করেছে, ডাকাতি করেছে। মানুষকে মিথ্যা মামলা দিয়েছে।’
জলাবদ্ধতা নিরসন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘জলাবদ্ধতা নিরসনের যে প্রকল্পের কাজ চলছে, সেটা সিটি করপোরেশনের মাধ্যমে হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ২০১৬ সালে আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ গ্রুপিংয়ের কারণে এটি চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) হাতে চলে যায়। বর্তমানে চট্টগ্রামে জলাবদ্ধতা দূর করার জন্য ১৪ হাজার কোটি টাকার চারটি প্রকল্প চলছে। সিডিএর প্রকল্পে আছে ৩৬টি খাল উদ্ধার ও খনন। বাকি ২১টি খালের কী হবে, আমরা জানি না। খালগুলো উদ্ধার না হলে জলাবদ্ধতার অভিশাপ থেকে আমরা মুক্ত হতে পারব না।’
‘আমাদের শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের খাল খনন কর্মসূচিতে ফিরতে হবে। এটি একটি যুগান্তকারী উদ্যোগ ছিল। আমরা খালগুলো থেকে পলিথিন অপসারণের জন্য সচেতনতা বাড়ানোর পাশাপাশি ব্যবস্থা নিচ্ছি। নালায় ময়লা, প্লাস্টিক, ককশিট ফেলা বন্ধ করতে হবে। আমি নিজে বিভিন্ন খাল পরিদর্শন করেছি। পলিথিনের স্তর আটকে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি করছে।’
তিনি বলেন, ‘আপনাদের সবার কাছে অনুরোধ, নালার মধ্যে ময়লা ফেলবেন না, বিশেষ করে প্লাস্টিক, পলিথিন, চিপসের প্যাকেট, প্লাস্টিক বোতল, ও ককশিট। পলিথিনের কারণে খালের ওপর চার-পাঁচ ফিট স্তর জমে গেছে, যা জলাবদ্ধতা সৃষ্টি করছে। পলিথিনের বিরুদ্ধে আমাদের সচেতন হতে হবে। এটার বিকল্প হিসেবে নতুন কিছু বিপণেনর পরিকল্পনা করছি।’
মেয়র আরও বলেন, ‘আমি ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে গিয়ে পরিচ্ছন্নতা অভিযান চালাচ্ছি। মশার স্প্রে কার্যক্রম সঠিকভাবে হচ্ছে কি না মনিটরিং করছি। ওয়ার্ড কাউন্সিলর না থাকলেও নেতাকর্মীদের একসঙ্গে কাজ করতে বলছি। আমাদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে জনগণের সেবা নিশ্চিত করতে হবে।’
চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও বন্দর থানা বিএনপির সাবেক সভাপতি হাজী মো. হানিফ সওদাগরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কর্মসূচির উদ্বোধন করেন বিএনপি চেয়ারপারসনের ফরেন অ্যাফেয়ার্স কমিটির সদস্য ইসরাফিল খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
অনুষ্ঠানে ইসরাফিল খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘বর্ষাকালে চট্টগ্রাম শহরের জলাবদ্ধতা মারাত্মক আকার ধারণ করে। তাই আমাদের নিজ নিজ অবস্থান থেকে উদ্যোগ নিয়ে নিজেদের এলাকাকে পরিস্কার রাখতে হবে। জনগণ দখলমুক্ত ও পরিচ্ছন্ন না রাখলে জলাবদ্ধতার সমস্যা কোনোদিনও সমাধান হবে না। জনগণকে সম্পৃক্ত করে স্বেচ্ছাসেবার ভিত্তিতে নগরীর খাল ও বড় নালাগুলো পরিষ্কার করার এ উদ্যোগকে আমি স্বাগত জানাই।’
এ সময় নগর বিএনপির সাবেক স্থানীয় সরকারবিষয়ক সম্পাদক কামাল উদ্দিন, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক মো. সেলিম, বন্দর থানা কমিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল হাসান, সিনিয়র সহসভাপতি হাসান মুরাদ, সাংগঠনিক সম্পাদক হাজী মো. হোসেন, ৩৮ নম্বর ওয়ার্ড কমিটির সাবেক সভাপতি মো. আজম উদ্দিন ও সাধারণ সম্পাদক মো. জাহেদ, সহ সভাপতি মো. কামরুজ্জামান, মো. আলী, যুগ্ম সম্পাদক মোহাম্মদ হোসেন মনা, মো. হাসান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
সারাবাংলা/আরডি/পিটিএম