‘আমার দেখা সবচেয়ে ভয়ঙ্কর কারাগার আসাদের কারাগার’
১৬ ডিসেম্বর ২০২৪ ২৩:৩৬ | আপডেট: ১৬ ডিসেম্বর ২০২৪ ২৩:৪৮
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির আন্তর্জাতিক সম্পাদক জেরেমি ব্রোয়েন বলেছেন, আমার দেখা সবচেয়ে ভয়ঙ্কর কারাগার হচ্ছে আসাদের কুখ্যাত কারাগার।
সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) বিবিসির প্রতিবেদনে তিনি এমনটিই জানান।
তিনি বলেন, আমি যখন গেট দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলাম তখন আমি হাজার হাজার সিরিয়দের হতাশার কথা ভাবছিলাম। তাদের ভয়ঙ্কর যাত্রার কথা ভাবছিলাম।
এটা ধারণা করা হয় যে, ২০১১ সালে সিরিয়ার যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে কয়েক বছরে এখানে ৩০ হাজার বন্দি নিহত হয়েছেন। এখানে বন্দি থাকাদের প্রায় অধিকাংশই পুরুষ। তবে হাজার হাজার নারী ও পাশাপাশি শিশুও ছিল। যাদের কোনো হদিস পাওয়া যায়নি।
অন্য এক প্রতিবেদনে বলা হয়, গৃহযুদ্ধের সময় প্রায় ১ লাখ ৪৫ হাজার সিরিয়কে আটক করা হয়, যাদের মধ্যে প্রায় ৮০ হাজারের আর কোনো হদিস পাওয়া যায়নি। এই নৃশংসতায় সবার ওপরে আছে এই সেদনায়া কারাগার।
আসাদের অন্য কারাগার ব্যবস্থার কিছুটা কম নিষ্ঠুর ছিল। সেসব কারাগারে বাড়িতে ফোন কল করা ও পরিবাদের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল।
কিন্তু সেদনায়া ছিল শাসনের সব থেকে অন্ধকার দিক। সেখানে বন্দিদের কথা তাদের পরিবারকে জানানো হতে না। তাদের ভয় দেখিয়ে চাপে রাখা হতো।
সিরিয়ার বেসামরিক প্রতিরক্ষা সংস্থার পরিচালক রায়েদ আল-সালেহ আল জাজিরাকে বলেছেন, ‘সাধারণ কারাগারের সঙ্গে সেদনায়ার কোনো মিল নেই। এটি আসলে একটা মানুষ হত্যার কসাইখানা। এখানে মানুষের ওপর পশুর মতো নির্যাতন চালিয়ে তাদের নৃশংসভাবে জবাই করা হতো।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিদ্রোহীরা ওভেনের মধ্যেও মৃতদেহ খুঁজে পেয়েছে।’ তার ভাষ্য অনুযায়ী, প্রতিদিন ৫০ থেকে ১০০ জন বন্দিকে হত্যা করতো কারাগার কর্তৃপক্ষ।
যুক্তরাজ্যভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, সেদনায়া কারাগারে প্রথম দফায় বন্দিদের আনা শুরু ১৯৮৭ সালে। বাশার আল-আসাদের বাবা হাফিজ আল-আসাদ প্রতিপক্ষকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য একটি অবকাঠামো নির্মাণের দায়িত্ব দেন অ্যালোইস ব্রুনার ওরফে জর্জ ফিশারকে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নিজের কর্মস্থল ছেড়ে পালিয়ে যাওয়া ফিশার সিরিয়ার কারা ব্যবস্থায় গেস্টাপো স্টাইলে নির্যাতন পদ্ধতির প্রবর্তন করেন, যা পরবর্তীতে সেদনায়া, পালমিরা ও আদরাতে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হতে থাকে।
সারাবাংলা/এইচআই