রাজশাহীতে বাস-অটো চালকদের দ্বন্দ্ব, ৭০ সিএনজি অটোরিকশা ভাঙচুর
১৭ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৫:৩৫ | আপডেট: ১৭ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৭:২১
রাজশাহী: রাজশাহীতে বাস শ্রমিক ও সিএনজি অটোরিকশা চালকদের দ্বন্দ্বে দ্বিতীয় দিনেও বন্ধ বাস চলাচল। তবে মঙ্গলবার (১৭ জানুয়ারি) দুপুর ২টা থেকে রাজশাহী থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে বাস ছেড়ে যাচ্ছে। এছাড়াও বিভিন্ন স্থান থেকে আসা বাসগুলোও বন্ধ রাখা হয়েছে। সমাধান না হওয়া পর্যন্ত বাস ছাড়বে বলে জানিয়েছে শ্রমিকরা।
এদিকে মঙ্গলবার (১৭ জানুয়ারি) সকাল ১০টার দিকে নগরীর রেলগেট এলাকায় সিএনজি অটোরিকশাস্ট্যান্ডে হামলা চালিয়েছেন বাস শ্রমিকেরা। তারা ৭০টি সিএনজি অটোরিকশার সামনের কাঁচ ভেঙে দিয়েছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। তবে সিএনজি চালকদের দাবি, প্রায় ৯০টি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। যাত্রী-চালকসহ ৪০ জনকে পিটিয়ে আহত করা হয়েছে।
বাস শ্রমিকেরা হাতুড়ি ও লাঠি নিয়ে রেলগেটে এসে একের পর এক সিএনজি অটোরিকশা ভাঙচুর করতে শুরু করেন। এ সময় বাধা দিতে গেলে সিএনজি চালক যাত্রীদেরও পিটিয়ে আহত করা হয়। পরে বাস শ্রমিকেরা চলে গেলে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায়।
রাজশাহী সিএনজি মালিক সমিতির সহ-সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের প্রায় ৯০টি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। পিটিয়ে আহত করা হয়েছে কমপক্ষে ৪০ জনকে। এদের বেশিরভাগই চালক, কয়েকজন যাত্রী আছেন। এদের মধ্যে একজন গর্ভবতী নারী। আহতরা বিভিন্ন স্থানে চিকিৎসা নিয়েছেন। পুলিশ এসেছে, সবই দেখেছে। আমরা মামলা করব। এখন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের উপকমিশনারের (ডিসি) সাথে আমাদের বৈঠক হয়েছে।’
রাজশাহী মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক রফিক আলী পাখি বলেন, আমাদের মিমাংসার প্রক্রিয়া চলছে। এর মধ্যে বাস শ্রমিকদের বাস ছাড়ার জন্য বলা হয়েছে। রাজশাহী থেকে দুরপাল্লার বাস ছাড়তে শুরু করেছে।
বোয়ালিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মেহেদী মাসুদ বলেন, আমরা এসে ভাঙচুর করা ৩২টি গাড়ি পেয়েছি। অন্য গাড়িগুলো চলে গেছে। ভাঙচুর করা গাড়ির সংখ্যা ৭০টি হতে পারে। সব গাড়ির কাঁচ ভেঙে দেওয়া হয়েছে। এরপর কিছু গাড়ি উল্টে ফেলা হয়। যাত্রী ও চালক মিলিয়ে ১২ জনের মতো আহত হতে পারেন। আমরা সিএনজি চালকদের মামলা করতে বলেছি। তারা মামলা দিলে আমরা আইনগত ব্যবস্থা নেব।
রাজশাহীতে সিএনজি চালক ও বাস শ্রমিকদের এই দ্বন্দ্ব অনেক পুরনো। বাস শ্রমিকেরা দীর্ঘদিন ধরেই সিএনজি স্ট্যান্ড শহরের বাইরে নিয়ে যাওয়ার দাবি করছেন। প্রায়ই তাদের মধ্যে ছোটখাট সংঘাত হয়। এর আগেও বাস চালক ও হেলপাররা তানোর উপজেলা সদরে মারধরের শিকার হয়েছেন। তখনও বাস চালকেরা গাড়ি বন্ধ রেখে এর প্রতিবাদ করেছেন।
তানোর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মিজানুর রহমান বলেন, সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) ছয়জন বাস শ্রমিককে মারধরের ঘটনায় রাতে থানায় একটি মামলা হয়েছে। এতে আসামি হিসেবে ১৮ জন সিএনজি চালকের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া অজ্ঞাত আরও আসামি আছে। মামলার পর এজাহারভুক্ত দুই আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) সকালে জেলার তানোর উপজেলা সদরে সিএনজি অটোরিকশার চালকেরা বাসের ছয়জন চালক, হেলপার ও কন্ডাক্টরকে পিটিয়ে আহত করেন। এর জের ধরে দুপুরে রাজশাহী থেকে সব রুটের বাস চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। তখনই বাস শ্রমিকেরা শিরোইল বাস টার্মিনাল এলাকায় বিক্ষোভ করেন। বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে তারা রেলগেটে সিএনজি স্ট্যান্ডের দিকে যাওয়ার চেষ্টা করেন। তবে পুলিশ ও সেনাবাহিনী তাদের শান্ত করে। এরপর সকালে তারা সিএনজিস্ট্যান্ডে গিয়ে হামলা চালিয়েছে।
সারাবাংলা/এনজে