খুলনায় মোড়ে মোড়ে পিঠার ঘ্রাণ
২০ ডিসেম্বর ২০২৪ ০৮:৩৭
খুলনা: খুলনা মহানগরীর মোড়ে মোড়ে মৌসুমী পিঠার পসরা সাজিয়ে বসেছেন ব্যবসায়ীরা। সন্ধ্যা নামার সঙ্গে সঙ্গে রাস্তার পাশে কিংবা ফুটপাতে দাঁড়িয়ে পিঠা খাওয়া এখন অতি পরিচিত দৃশ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে।
কর্মজীবী মানুষ চলতি পথে কিংবা সন্ধ্যার আড্ডায় নাশতাটা সেরে নিচ্ছেন চিতই, ভাপা, পান পিঠাসহ বিভিন্ন ধরনের শীতের পিঠা দিয়ে। পুরো শীতজুড়ে চলবে এ ব্যবসা। চাইলেই যে কেউ পারছেন সেখান থেকে শীতের পিঠার আস্বাদ নিতে। তবে গরম-গরম ধোঁয়া ওঠা চিতই পিঠার মূল আকর্ষণ সর্ষে বা ঝাল শুঁটকির ভর্তা।
সরেজমিনে বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় খুলনা নগরীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মোড় এমনকি অলিতে গলিতে ভাসমান পিঠাপুলির দোকানের পসরা বসেছে। মাটির চুলায় পিঠা তৈরি করছেন মৌসুমী ব্যবসায়ীরা। প্রতিটি দোকানের সামনে পিঠা খাওয়ার ধুম লেগেছে। প্রায় প্রতিটি মোড়ে তিন থেকটি চারটি দোকান রয়েছে। কোন কোন দোকানে শুধু ভাপা পিঠা বিক্রি করতে দেখা গেছে। আবার কোথাও একই দোকানে রয়েছে ৩/৪ রকমের পিঠা। প্রতিটি পিঠার দাম রকম ভেদে নেয়া হচ্ছে পাঁচ থেকে দশ টাকা। ভোজনরসিকরা কেউ তরল গুড় দিয়ে চিতই পিঠা খাচ্ছে আবার কেউ খাচ্ছে সরিষা, কালোজিরা কিংবা ধনিয়া পাতার ভর্তা দিয়ে। খুব কম মূল্যে পছন্দমতো পিঠার স্বাদ নিতে পারছেন সাধারণ মানুষজন।
খুলনা নগরীর রূপসা ঘাট, মডার্ন মোড়, পিটিআই মোড়, দোলখোলা মোড়, গফ্ফারের মোড়, শিশু হাসপাতাল রোড, তারের পুকুর পাড়, পিকচার প্যালেস মোড়, ক্লে-রোড, স্টেশন রোড, খানজাহান আলী রোড, সোনাডাঙ্গা বাসস্ট্যান্ড, নিউমার্কেট, খালিশপুর, দৌলতপুর, রেল স্টেশনসহ বিভিন্ন এলাকার রাস্তার মোড় আর ফুটপাতে গড়ে উঠেছে অগণিত অস্থায়ী পিঠার দোকান। এসব দোকানের বেচাবিক্রিও বেশ ভালো।
পূর্ব রূপসা ঘাট এলাকার পিঠা বিক্রেতা আমেনা বেগম বলেন, ‘বেচাকেনা মোটামুটি ভালো হচ্ছে। তবে বিগত বছরের তুলনায় মুনাফার পরিমাণ কমেছে। পুরো শীত আসলে বেচাকেনা বাড়বে।’
নগরীর ইসলামপুর রোডের অস্থায়ী পিঠার দোকানি মো: রুহুল আমিন জানান, সীমিত খরচে ভালো লাভের আশায় প্রতিদিন সন্ধ্যা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত পিঠা বিক্রি করছি। পিঠা তৈরিতে খরচ ও সময় দুটোই কম লাগে। তাই অল্প সময়ে বেশি আয় হয় বলে পিঠা তৈরিকে পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছি।
রূপসা ট্রাফিক মোড়ে পিঠা কিনতে আসা আমান মোল্লা বলেন, গ্রামের বাড়িতে শীতের সময় পিঠা খাওয়ার আনন্দঘন মুহূর্তগুলো শহুরে জীবনে এখন স্মৃতি। এখন শহরেই মিলছে নানা রকম পিঠা। শীতের পিঠার এ রসনা বিলাসের সুযোগ হাতছাড়া করি না। প্রায় কিনে নিয়ে যাই বাসায়।
মহানগরীর দোলখোলা মোড়ে পিঠা কিনতে আসা শিক্ষার্থী শাহেদা খাতুন বলেন, গ্রামের বাড়িতে শীতের সময় পিঠা খাওয়ার আনন্দঘন মুহূর্তগুলো শহুরে জীবনে এখন স্মৃতি। শীতের পিঠার এ রসনাবিলাসের সুযোগ হাতছাড়া করি না। প্রায় কিনে নিয়ে যাই বাসায়। তবে বিরক্তির বিষয় একটি দোলখোলা মোড়ে কখনও লাইনে না দাঁড়িয়ে পিঠা কেনা যায় না।
সারাবাংলা/এনজে