উত্তরায় ভবনটি ছিল ঝুঁকিপূর্ণ, নোটিশ দিয়েছিল ফায়ার সার্ভিস
২০ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৯:২০ | আপডেট: ২০ ডিসেম্বর ২০২৪ ২১:২০
ঢাকা: রাজধানীর উত্তরা ১২ নম্বর সেক্টরের লাভলীন রেস্টুরেন্টে অগ্নিকাণ্ডের পর ফায়ার সার্ভিস বলছেন, কোনো ধরনের অগ্নি নিরাপত্তা সামগ্রী না থাকায় ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ ছিল। এজন্য ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে ভনটির কর্তৃপক্ষকে নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। তবে তারা ফায়ার সার্ভিসের নোটিশ আমলে নেয়নি।
সংস্থাটির প্রাথমিক ধারণা, গ্যাসের লিকেজ থেকে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়ে থাকতে পারে। ঘটনার পর তারা রেস্টুরেন্ট মালিক কিংবা ভবন মালিককে খুঁজে পাননি।
শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) সকাল ১০টা ৩৮ মিনিটে উত্তরার ১২ নম্বর সেক্টরের একটি বাণিজ্যিক ৬ তলা নিচতলায় লাভলীন বাংলা রেস্টুরেন্টে আগুন লাগে। পরে ফায়ার সার্ভিসের ১২ ইউনিটের চেষ্টায় দুপুর ২টা ২ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।
ঘটনাস্থলে ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (অপারেশন ও মেইনটেন্যান্স) লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী সংবাদ সম্মেলন করে বলেন, ‘আমরা ভবনটিতে ফায়ার ফাইটিং-এর কোনো ইক্যুইপমেন্ট পাইনি। আমাদের জানামতে, ভনটিতে নোটিশ দিয়েছিলাম। এখানে ফায়ার সেফটি প্ল্যানও নেই। তদন্ত সাপেক্ষে এ বিষয়ে আরও তথ্য দিতে পারব। বহুতল ভবনটি আবাসিক হলেও সেখানে রেস্টুরেন্টসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বাণিজ্যিক কার্যক্রম চালিয়ে আসছিল।’
তিনি বলেন, ‘আগুন লাগার পরপরই ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে দেখতে পান, আগুন ডেভলপমেন্ট স্টেজে চলে গেছে। এটা গ্যাসের লিকেজ থেকে যেহেতু হয়েছে, সুতরাং নিচের ফ্লোরে গ্যাসের উপস্থিতি ছিল। এখানে অনেক পেট্রোলিয়াম দ্রব্যাদি ছিল। ভবনটিতে রেস্টুরেন্ট, জিম, বিউটি পার্লার রয়েছে। উপরে মানুষের বসবাস ছিল। পাঁচতলা ভবনটির ছয়তলায় (ছাদে) টিনশেড করা ছিল।’
ভবনটি থেকে সাতজনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে উল্লেখ করে লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘আগুন নির্বাপণের পর ভেতরে তল্লাশি করে কাউকে পাওয়া যায়নি। এখানে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ তদন্ত সাপেক্ষে বলা যাবে।’
অগ্নিকাণ্ডের দৃষ্টিকোণ থেকে ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ ছিল জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এটার একটি মাত্র সিঁড়ি রয়েছে। আমরা বাইরে থেকে বৈদ্যুতিক তারের কারণে টিটিএল (টার্ন টেবল লেডার) সেট করতে পারছিলাম না।’
রেস্টুরেন্টে সিলিন্ডার গ্যাস ব্যবহার হচ্ছিল, এটার অনুমোদন আছে কি না? এ প্রশ্নের উত্তরে ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তা তাজুল ইসলাম বলেন, ‘এলএনজি গ্যাসের চেয়ে সিলিন্ডার গ্যাস বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। অল্পতেই চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। আমরা এসে দেখেছি নিচতলা এবং দোতলায় আগুন ছড়িয়ে পড়েছে। এজন্য আগুন নিয়ন্ত্রণে বেগ পেতে হয়েছে। আর গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহারে অনুমোদনের বিষয়গুলো বিস্ফোরক অধিদফতর বলতে পারবে। এছাড়া স্থানীয়ভাবে সিটি করপোরেশন দেখে। তারা বলতে পারবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ঘটনার পর আমরা ভবন মালিককে খুঁজেছি, তবে পাইনি। আমাদের পরিদর্শকদের কাজই ভবন পরিদর্শন করে নোটিশ দেওয়া। তারা তাদের দায়িত্ব পালন করেছে। তদন্ত সাপেক্ষে বাদবাকি তথ্য নিশ্চিত হতে পারব।’
সারাবাংলা/ইউজে/এইচআই