‘যন্ত্রণা সইতে না পেরে’ ক্যানসারাক্রান্ত বীর মুক্তিযোদ্ধার আত্মহনন
২২ ডিসেম্বর ২০২৪ ২০:০৪ | আপডেট: ২২ ডিসেম্বর ২০২৪ ২০:৫৯
চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম নগরীতে গলায় ফাঁস দিয়ে ৭৫ বছর বয়সী বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু সাঈদ সরদার আত্মহত্যা করেছেন। পুলিশ জানিয়েছে, দুরারোগ্য অসুখ ক্যানসারের শারীরিক যন্ত্রণা সইতে না পেরে তিনি আত্মহননের পথ বেছে নিয়েছেন বলে চিরকূটে লিখে গেছেন।
শনিবার (২২ ডিসেম্বর) বিকেলে নগরীর আগ্রাবাদের সিডিএ আবাসিক এলাকার নিজ বাসা থেকে পুলিশ তার লাশ উদ্ধার করে।
মুক্তিযুদ্ধের গবেষণা কেন্দ্রের চেয়ারম্যান ডা. মাহফুজুর রহমান এক ফেসবুক পোস্টে উল্লেখ করেছেন, ‘আবু সাঈদ সরদার একাত্তরে চট্টগ্রাম শহরে মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ছিলেন। মুক্তিবাহিনীর চট্টগ্রাম শহর কমান্ডের ডেপুটি কমান্ডার মৌলভী সৈয়দের ঘনিষ্ঠ ছিলেন তিনি।’
ডবলমুরিং থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কাজী রফিক আহম্মদ সারাবাংলাকে বলেন, ‘আবু সাঈদ সরদার ক্যানসারে আক্রান্ত ছিলেন। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে বাসার দরজা ভেঙে উনার লাশ উদ্ধার করেছেন। তিনি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন।’
‘ঘটনাস্থলে আমরা একটি সুইসাইড নোট পেয়েছি। নোটের তথ্োনুযায়ী, তিনি ক্যানসারে আক্রান্ত। অনেকদিন ধরে ট্রিটমেন্ট চলছিল। তবে শেষদিকে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন। শারীরিক যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে তিনি আত্মহত্যার পথ বেছে নেন। ওই চিরকূটের হাতের লেখা কয়েকজনকে দেখিয়েছি। তারা শনাক্ত করেছেন যে লেখাটি আবু সাঈদ সরদারের।’
আবু সাঈদ সরদারের লাশ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে বলে ওসি জানান।
জানা গেছে, আবু সাঈদ সরদার ২০০১ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রামের বন্দর-পতেঙ্গা আসনে বিএনপি দলীয় প্রার্থী, দলটির বর্তমান স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর নির্বাচন মনিটরিং সেলের সমন্বয়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। ২০০৫ সালে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে বিএনপির মেয়র প্রার্থী মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দিনের পক্ষে একই দায়িত্ব পালন করেছিলেন।
সর্বশেষ তিনি অবসর জীবনযাপন করছিলেন। এর আগে কিছুদিন আওয়ামী লীগ দলীয় সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের মালিকানাধীন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ছিলেন। নাছির মেয়র থাকার সময় চসিকের বইমেলা আয়োজনেও ভূমিকা পালন করেন।
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর একান্ত সহকারী মোহাম্মদ সেলিম সারাবাংলাকে বলেন, ‘২০০১ সালে তিনি স্যারের (আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী) নির্বাচন মনিটরিং সেলে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। এরপর স্যার যখন মন্ত্রী হলেন, তখনও কিছুদিন তিনি স্যারের পক্ষে বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করেন। পাঁচ-সাত বছর আগে তিনি আ জ ম নাছির সাহেবের শিপিং কোম্পানিতে চাকরি করতেন। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের বইমেলা আয়োজনসহ আরও বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে যুক্ত ছিলেন।’
সারাবাংলা/আইসি/পিটিএম
‘যন্ত্রণা সইতে না পেরে’ ক্যানসারাক্রান্ত টপ নিউজ মুক্তিযোদ্ধার আত্মহনন