‘চসিকের কাউন্সিলররা ছিল ভূমিদস্যু-ডাকাতের সরদার’
২৪ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৭:৩৭ | আপডেট: ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৯:৪৮
চট্টগ্রাম ব্যুরো: আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে নির্বাচিত ওয়ার্ড কাউন্সিলররা ভূমিদস্যু ও ডাকাতের সরদার ছিলেন বলে মন্তব্য করেছেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন।
মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) দুপুরে নগরীর আকবরশাহ এলাকার লেকসিটি আবাসিক এলাকায় কালিরছড়া খাল পরিদর্শনের সময় তিনি এ মন্তব্য করেন।
যারা পাহাড় কেটেছে তারা আওয়ামী লীগের পোষ্য ছিল মন্তব্য করে ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘পাহাড় যারা কেটেছে তারা দীর্ঘদিন ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগের পোষ্য ছিল। একেকজন কাউন্সিলর ছিল ভূমিদস্যু, একেকজন ছিল ডাকাতের সরদার। এই যে জসিম সে একজন ভূমিদস্যু। পাহাড় কাটার জন্য সে বিখ্যাত ছিল কিন্তু তার বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ সরকার কোনো ব্যবস্থা নেননি। তারা তাকে গ্রেফতারও করেনি এবং শাস্তির আওতায় আনতে পারেনি।’
ভোটের অধিকার হরণ করে অপরাধীদের কাউন্সিলর হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে উল্লেখ করে মেয়র বলেন, ‘রাষ্ট্র এ সমস্যার জন্য দায়ী। ভোটের অধিকার হরণ করে অপরাধীদের কাউন্সিলর হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। এ অপরাধীদের মাধ্যমে দখল, লুটপাট ও দুর্নীতির শিকার হয়েছে শহরটি। গত ১৬ বছর ধরে চলা এ অব্যবস্থাপনার কারণে জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি বাড়ছে। ভবিষ্যৎ প্রজন্ম আমাদের ক্ষমা করবে না যদি আমরা তাদের জন্য বাসযোগ্য পরিবেশ রেখে যেতে ব্যর্থ হই।’
প্রকল্পের বাইরে আরও ২১টি খাল উদ্ধারের চেষ্টা করা হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা এখানে কালিরছড়া খাল দেখতে এসেছি। দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে পাহাড় কাটার কারণে এ খালের অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে। এক সময় চট্টগ্রামে প্রায় ৫৭টি খাল ছিল। কিন্তু আজ এ সংখ্যা নেমে এসেছে মাত্র ৩৬টিতে। জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য সিডিএর উদ্যোগে যে প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে, সেখানে ৫৭টি খাল থেকে কাজের জন্য ৩৬টি খাল চিহ্নিত করা হয়েছে। তবে এখনও ২১টি খাল অবহেলিত রয়ে গেছে। আমরা এ ২১টি খাল উদ্ধার করার চেষ্টা করছি।’
মেয়র বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য খালগুলো পুনরুদ্ধার করা। ইতোমধ্যে আমরা কালিরছড়া খালের কিছু অংশ দখলমুক্ত করেছি এবং আরও উচ্ছেদ কার্যক্রম চলছে। চট্টগ্রামের ২১টি খাল, যেমন পতেঙ্গার গুপ্ত খাল, বাকলিয়ার বীর্জা খাল এবং কৃষি খাল পুনরুদ্ধারের জন্য পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এ খালগুলো চিহ্নিত করে খনন কর্মসূচি শুরু করতে হবে। জলাবদ্ধতা নিরসনে এটা একটি স্থায়ী সমাধান হয়ে উঠবে।’
খালখেকোদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার ঘোষণা দিয়ে মেয়র শাহাদাত বলেন, ‘আমরা দৃঢ় সংকল্প করেছি যে, দখলদারদের আইনের আওতায় এনে খালগুলোকে পুনরুদ্ধার করব। খাল থাকবে খালের জায়গায় এবং নালা থাকবে নালার জায়গায়। পরিবেশের সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।’
‘যে ভূমিদস্যুরা দখল করে রেখেছে এবং অন্যায়ের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করেছে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমরা আমাদের দায়িত্ব পালন করতে অঙ্গীকারবদ্ধ। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি বাসযোগ্য শহর উপহার দেওয়ার লক্ষ্যেই আমাদের কাজ চলতে থাকবে।’
এসময় চসিকের নির্বাহী প্রকৌশলী আশিকুল ইসলাম, মাহমুদ শাফকাত আমিন, উপ-প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা প্রণব কুমার শর্মা, মেয়রের একান্ত সহকারী মারুফুল হক চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।
সারাবাংলা/আইসি/এইচআই