বিডিআর বিদ্রোহ
ঘটনা পুনঃতদন্তে কমিশন গঠন করে প্রজ্ঞাপন জারি
২৪ ডিসেম্বর ২০২৪ ২৩:২৫ | আপডেট: ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪ ০৯:৪৫
ঢাকা: বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনা পুনঃতদন্তে একটি কমিশন গঠন করা হয়েছে। মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, যেহেতু ২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি তৎকালীন বিডিআর সদর দফতর, পিলখানায় বিডিআর বিদ্রোহের নামে সংঘটিত বর্বরতম হত্যাযজ্ঞের বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগ রিট পিটিশন নম্বর-১২১৬১/২০২৪-এ একটি জাতীয় স্বাধীন তদন্ত কমিটি গঠনের মাধ্যমে পুনঃতদন্তের জন্য নির্দেশনা প্রদান করেছে, সেহেতু সরকার Commissions of Inquiry Act, 1956 (Act No. VI of 1956) এর Section 3 এর প্রদত্ত ক্ষমতাবলে, ২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি তৎকালীন বিডিআর সদর দফতর, পিলখানায় বিডিআর বিদ্রোহের নামে সংঘটিত হত্যাযজ্ঞের সঙ্গে জড়িত দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র ও প্রকৃত ঘটনার স্বরূপ উদ্ঘাটন, ঘটনায় রুজুকৃত দুটি মামলায় অভিযুক্ত ব্যক্তিবর্গ ব্যতীত, ঘটনার ষড়যন্ত্রকারী, ঘটনার সহযোগী, ঘটনার আলামত ধ্বংসকারী, ঘটনা সংঘটনকারী এবং ঘটনা সংশ্লিষ্ট অপরাপর বিষয় ও অপরাধীদের চিহ্নিতকরণের লক্ষ্যে নিম্নরূপে একটি জাতীয় স্বাধীন তদন্ত কমিশন গঠন করা হলো।
মেজর জেনারেল আ ল ম ফজলুর রহমান, এনডিসি, পিএসসি (অব.) কে সভাপতি করে সাত সদস্যের কমিটিতে অন্য সদস্যরা হলেন- মেজর জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর কবির তালুকদার (অব:), ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. সাইদুর রহমান, বীর প্রতীক (অব.), অবসরপ্রাপ্ত যুগ্মসচিব মুন্সী আলাউদ্দিন আল আজাদ, এনডিসি, অবসরপ্রাপ্ত ডিআইজি ড. এম. আকবর আলী, বিপিএম, পিপিএম; ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. শরীফুল ইসলাম, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সহকারী অধ্যাপক মো. শাহনেওয়াজ খান চন্দন।
এর আগে, দাবির পরিপ্রেক্ষাপটে কমিশন গঠনের কথা জানিয়েছিলেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা সাবেক সেনা কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
যেভাবে কাজ করবে তদন্ত কমিশন
আরেক প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়, ২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি তৎকালীন বিডিআর সদর দফতর, পিলখানায় সংঘটিত ঘটনার প্রকৃতি ও স্বরূপ উদ্ঘাটন করাই হবে কমিশনের প্রধান কাজ। সেজন্য ঘটনাকালে সংঘটিত হত্যাকাণ্ড ও অন্যান্য অপরাধ সংঘটনকারী, সহায়তাকারী, ষড়যন্ত্রকারী, ঘটনার আলামত ধ্বংসকারী, ইন্ধনদাতা এবং ঘটনা সংশ্লিষ্ট অপরাপর বিষয়সহ দেশি-বিদেশী সংশ্লিষ্ট অপরাধী ব্যক্তি/গোষ্ঠী। সংস্থা/প্রতিষ্ঠান/ বিভাগ/সংগঠন ইত্যাদি চিহ্নিত করবে কমিশন।
রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব ড. শেখ আব্দুর রশিদের সই করা স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে এর বিস্তারিত দেওয়া হয়েছে। সেখানে আরও বলা হয়, উক্ত ঘটনায় হত্যাকান্ডের সময় ও হত্যাকাণ্ডের আগে/পরে সংঘটিত অপরাপর অপরাধের স্বরূপ উদ্ঘাটন, দায়ী ব্যক্তি/গোষ্ঠী/সংস্থা/প্রতিষ্ঠান/বিভাগ/সংগঠন চিহ্নিত করা এবং ঘটনাকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করা বা ঘটনা ঘটাইতে সহায়তাকারী অন্যান্য দেশি-বিদেশী ব্যক্তি/ গোষ্ঠী/ সংস্থা/ প্রতিষ্ঠান/বিভাগ/ সংগঠনের সম্পৃক্ততা নিরূপণ এবং দোষীদের চিহ্নিতকরণ, হত্যাকান্ডসহ সংঘটিত অপরাপর অপরাধ প্রতিরোধে ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থতার জন্য দায়ী ব্যক্তি/গোষ্ঠী/সংস্থা/প্রতিষ্ঠান/বিভাগ/সংগঠন চিহ্নিতকরণ; এবং হত্যাকাণ্ডসহ সংঘটিত অপরাপর অপরাধে ইতোমধ্যে দায়েরকৃত মামলা এবং সংশ্লিষ্ট মামলায় অভিযুক্তগণের দায়/অপরাধ অক্ষুণ্ণ রেখে সংশ্লিষ্ট মামলায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি এমন প্রকৃত অপরাধীদেরকে তদন্ত প্রক্রিয়ায় অন্তর্ভুক্তকরণ।
তদন্ত কমিশন বাংলাদেশের যেকোনো স্থান পরিদর্শন এবং সন্দেহভাজন যেকোনো ব্যক্তিকে কমিশনে তলব ও জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবে। এছাড়া কমিশন প্রয়োজনে উপযুক্ত যেকোনো ব্যক্তিকে কমিশনের সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করতে পারবে বলে প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়।
প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়, কমিশন, Commissions of Inquiry Act, 1956 অনুসারে তদন্তকার্য সম্পন্ন করিয়া এই প্রজ্ঞাপন জারির তারিখ হতে ৯০ (নব্বই) দিনের মধ্যে সরকারের নিকট তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করিবে। আর এ কাজে
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ তদন্ত কমিশনকে সাচিবিক সহায়তাসহ সকল প্রকার সহায়তা প্রদান করিবে ও কমিশনের প্রয়োজনীয় ব্যয় নির্বাহ করিবে এবং কমিশনকে সহায়তার উদ্দেশ্যে প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিয়োজিত যে কোনো ব্যক্তিকে দায়িত্ব প্রদান করিতে পারিবে।
প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়, কমিশনের প্রধান ও সদস্যরা সরকার নির্ধারিত পদমর্যাদা, বেতন/সম্মানী ও সুযোগ-সুবিধা পাবেন। তবে কমিশন প্রধান বা কোনো সদস্য অবৈতনিক হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে চাইলে বা সুযোগ-সুবিধা নিতে না চাহিলে তা অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার অনুমোদন নিতে পারবে।
সারাবাংলা/জেআর/পিটিএম
কমিশন গঠন ঘটনা পুনঃতদন্ত টপ নিউজ প্রজ্ঞাপন জারি বিডিআর বিদ্রোহ