ক্রুসহ ১৮১ আরোহী নিয়ে ব্যাংকক থেকে ফেরার পথে দক্ষিণ কোরিয়ার মুয়ান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্টে বিধ্বস্ত হয়েছে জেজু এয়ারলাইন্সের একটি বিমান৷ এখন পর্যন্ত ওই বিমান থেকে জীবিত উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে মাত্র দুজনকে, মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে ৮৫ জনের। তবে দুর্ঘটনাস্থলে কর্মরত মুয়ান ফায়ার সার্ভিসের ধারণা, জীবিত উদ্ধার দুজন বাদে ওই ফ্লাইটে থাকা আর কেউ বেঁচে নেই।
দক্ষিণ কোরিয়ার বার্তা সংস্থা ইয়োনহাপের খবরে বলা হয়েছে, রোববার (২৯ ডিসেম্বর) স্থানীয় সময় সকাল ৯টা ৭ মিনিটে বিমানটি মুয়ান বিমানবন্দরে অবতরণের সময় রানওয়ে থেকে ছিটকে পড়ে। এরপর একটি কংক্রিটের দেয়ালে ধাক্কা লাগলে বিমানটি বিধ্বস্ত হয়।
দক্ষিণ জিওল্লা প্রদেশের উদ্ধারকারী কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৮৫ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে এক ক্রু ও এক যাত্রীকে। তারা দুজনেই নারী। মোখপো শহরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে তাদের।
বিমানে থাকা ক্রু ও যাত্রীদের বাকি সবাই নিহত হয়েছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। দুর্ঘটনাস্থলে উদ্ধার অভিযান চলছে।

মুয়ান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিমান দুর্ঘটনা থেকে উদ্ধার করা এক যাত্রী। ছবি: ইয়োনহাপ সংবাদ সংস্থা
ইয়োনহাপের খবরে বলা হয়েছে, প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, প্লেনটির ল্যান্ডিং গিয়ার কাজ করছিল না। ফলে এটি রানওয়েতে অবতরণের পরপরই মাটির সঙ্গে সংঘর্ষের হয়। এরপর দেয়ালে ধাক্কা খেয়ে বিস্ফোরিত হয় এবং আগুনে পুড়ে যায়।
বিমানে মোট ১৮১ জন আরোহী ছিলেন। এর মধ্যে ছয়জন কেবিন ক্রু। যাত্রীদের বেশির ভাগই কোরিয়ান নাগরিক। দুজন থাইল্যান্ডের নাগরিক ছিলেন বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
দক্ষিণ কোরিয়ার ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট চোই সাং-মক দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তিনি উদ্ধার অভিযানকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়ার নির্দেশ দেন। নিহতদের পরিবারের প্রতি গভীর শোক জানিয়ে প্রেসিডেন্ট বলেছেন, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে প্রয়োজনীয় সব ধরনের সহায়তা দেওয়া হবে।
দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্টের কার্যালয় জানিয়েছে, দুর্ঘটনা নিয়ে আলোচনা করতে স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ১১টায় সিনিয়র কর্মকর্তাদের একটি জরুরি বৈঠক হয়েছে। বৈঠকটি প্রেসিডেন্টের চিফ অব স্টাফ চুং জিন-সুকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
জাতীয় পুলিশ এজেন্সির ভারপ্রাপ্ত কমিশনার জেনারেল লি হো-ইয়ং পুলিশ, দমকল ও অন্যান্য সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বয় বজায় রেখে উদ্ধার অভিযান পরিচালনার নির্দেশ দিয়েছেন।
ভয়াবহ এ দুর্ঘটনা দেশ জুড়ে শোকের ছায়া ফেলেছে। তদন্ত শেষে দুর্ঘটনার প্রকৃত কারণ এবং ভবিষ্যতে এমন ঘটনা প্রতিরোধের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে আশা করা হচ্ছে।