ইরান ২০২৫ সালকে পরমাণু ইস্যুতে একটি গুরুত্বপূর্ণ বছর হিসেবে অভিহিত করেছে। শনিবার (২৮ ডিসেম্বর) ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাকচি বেইজিংয়ে চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনার পর এ মন্তব্য করেন।
আরাকচি সরাসরি ডোনাল্ড ট্রাম্পের নাম উল্লেখ না করলেও, ২০২৫ সাল পরমানু ইস্যুর ক্ষেত্রে কীভাবে গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে তা স্পষ্ট করেননি। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, ইরান আশঙ্কা করছে যে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প পুনরায় তার সর্বোচ্চ চাপ নীতি চালু করতে পারেন।
২০১৫ সালে বারাক ওবামার প্রশাসনের সময় ইরান একটি চুক্তিতে সই করেছিল যেখানে তারা ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণে সীমাবদ্ধতা আরোপে সম্মত হয়। এর বিনিময়ে যুক্তরাষ্ট্র ও জাতিসংঘ ইরানের উপর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা শিথিল করে। তবে ২০১৮ সালে ট্রাম্প এ চুক্তি থেকে সরে গিয়ে ইরানের উপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন।
বর্তমানে ইরান কর্তৃপক্ষের প্রধান উদ্বেগ হলো, ট্রাম্প পুনরায় নিষেধাজ্ঞা কঠোর করলে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর ইরানে পরমাণু স্থাপনায় আক্রমণের সুযোগ আরও বাড়বে।
ইরানের অর্থনীতি বর্তমানে চরম সংকটে। শনিবার (২৮ ডিসেম্বর) ইরানি রিয়াল মার্কিন ডলারের বিপরীতে সর্বনিম্ন পর্যায়ে পৌঁছেছে। অনানুষ্ঠানিক বাজারে প্রতি ডলারের বিনিময়ে ৮ লাখ ২০ হাজার ৫০০ রিয়াল লেনদেন হয়েছে, যা শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর) ছিল ৮ লাখ ৮ হাজার ৫০০ রিয়াল।
ইরানে মুদ্রাস্ফীতির সরকারি হার বর্তমানে প্রায় ৩৫ শতাংশ। ডোনাল্ড ট্রাম্প পুনরায় নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে রিয়ালের মান প্রায় ১৮ শতাংশ কমে গেছে। এ অবস্থায় দেশটির নাগরিকরা তাদের সঞ্চয় নিরাপদ রাখতে ডলার, সোনা ও ক্রিপ্টোকারেন্সি কেনার দিকে ঝুঁকছেন।
বিশ্লেষকদের মতে, ২০২৫ সাল ইরানের জন্য গুরুত্বপূর্ণ কারণ তখন পরমাণু চুক্তি নিয়ে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে নতুন করে আলোচনা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে ইরান এই বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানায়নি।
বিশ্ব রাজনীতিতে ইরানের অবস্থান ও অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলায় এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ বছর হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।