Saturday 04 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বেফাককে ‘ফ্যাসিবাদের দোসরমুক্ত’ করার দাবি

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
১ জানুয়ারি ২০২৫ ১৮:০০ | আপডেট: ১ জানুয়ারি ২০২৫ ২১:৪৬

রাজধানীর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) সচেতন কওমি ছাত্র-সমাজের ব্যানারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন। ছবি: সারাবাংলা

ঢাকা: কওমি মাদ্রাসার শিক্ষাবোর্ড বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়ার (বেফাক) থেকে ফ্যাসিবাদের দোসরমুক্ত করার দাবি জানিয়েছে সচেতন কওমি ছাত্রসমাজ নামের একটি সংগঠন। দাবি আদায়ে শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের সামনে বাদ জুমা বিক্ষোভ কর্মসূচির ঘোষণাও দিয়েছে সংগঠনটি।

সংগঠনটি বেফাকের প্রধান পরিচালক মাওলানা উবায়দুর রহমান খান নদভী, ফয়জুল্লাহ ও আনাস মাদানীসহ ফ্যাসিস্টের সকল দোসরদের অপসারণের দাবি জানিয়েছে।

বিজ্ঞাপন

বুধবার (১ জানুয়ারি) রাজধানীর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) সচেতন কওমি ছাত্র-সমাজের ব্যানারে আয়োজিত কওমি মাদরাসার সর্বোচ্চ শিক্ষাবোর্ড বেফাকে ফ্যাসিবাদের দোসর ও হাসিনার দালালদের অনতিবিলম্বে অপসারণের দাবিতে চলমান আন্দোলন বিষয়ক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানানো হয়।

এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সচেতন কওমি ছাত্রসমাজের প্রতিনিধি তহা মাহমুদ। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন আব্দুল আহাদ তাওহীদ, আবুল হাসনাত মেহেরাব ও তানবির আহমেদ শিপন প্রমুখ।

লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়ার একজন দায়িত্বশীল উবায়দুর রহমান খান নদভীর বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠে এসেছে, তিনি টঙ্গী মাঠে শুরায়ী নিজামের চারজন হত্যাকাণ্ডের একজন অন্যতম পরিকল্পনাকারী। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক তারেকুল ইসলাম ফেসবুক লাইভে এ অভিযোগের পর বেফাকের কাছে তিনি ওই অভিযোগের স্বপক্ষে সাক্ষী ও প্রমাণ পেশ করেছেন। ওই অভিযোগের উপযুক্ত সাক্ষ্য প্রমাণ পাওয়ার পর থেকেই নদভীসহ ফ্যাসিস্ট হাসিনার দোসরদের অপসারণের দাবিতে মাঠে নেমে এসেছে সচেতন কওমি ছাত্রসমাজ।

বিজ্ঞাপন

বেফাক বরাবর গত ২৫ ডিসেম্বর দুই দফা দাবি সম্বলিত স্মারকলিপি দিয়েছে সচেতন কওমি ছাত্রসমাজ। ৫ আগস্ট পরবর্তী চারমাস অতিবাহিত হলেও শিক্ষাবোর্ড বেফাককে ফ্যাসিবাসের দোসরমুক্ত করা হয়নি। ৭২ ঘণ্টার মধ্যে উবায়দুর রহমান খান নদভী, ফয়জুল্লাহ ও আনাস মাদানীসহ ফ্যাসিস্টের সকল দোসরদের অপসারণ করতে হবে। জরুরি বৈঠক ডেকে বেফাক ও হাইয়াতুল উলয়ার সকল দায়িত্ব থেকে তাদের অব্যাহতি দিতে হবে।

তারা বলেন, ফ্যাসিস্ট হাসিনা তার রাজনৈতিক স্বার্থসিদ্ধির জন্য উদ্দেশ্য প্রণোদিত ও অকার্যকরভাবে যে কওমি সনদের মূলা ঝুলিয়েছিল তা কার্যকর করতে এখনো পর্যন্ত কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। অতিসত্বর শিক্ষাবিদ ও কওমি মাদরাসা শিক্ষার্থী প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সনদের কার্যকারিতা নিশ্চিতকরণে বেফাককে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে হবে। পরবর্তীতে বেফাক ৭২ ঘণ্টার আলটিমেটামকে আমলে নিয়ে ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই সচেতন কওমি ছাত্রসমাজের একটি প্রতিনিধি দলকে বৈঠকের আমন্ত্রণ জানায় এবং আমাদের যৌক্তিক দাবিগুলো মেনে নিবে বলে আশ্বস্ত করে। তবে সেই দাবি এখনও বাস্তবায়ন হয়নি।

লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, গত ১৮ ডিসেম্বর সাদপন্থিদের হাতে টঙ্গী মাঠে তাবলীগের চারজন সাথী শহিদ হন। ওই হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনাকারীদের মধ্যে উবায়দুর রহমান খান নদভীর নাম উঠে এসেছে। যিনি সাদপন্থি মুয়ায বিন নুরকে পরামর্শ দিয়ে ক্রমেই দেশের পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করতে ন্যাক্কারজনক ভূমিকা রেখে যাচ্ছিলেন। এ ছাড়া নদভী আওয়ামী সন্ত্রাসী আবু রেজা নদভীকে আশ্রয় দিয়ে তার বুদ্ধি পরামর্শে নিয়মিত সাদপন্থিদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে যাচ্ছিল। কিন্তু পরিতাপের বিষয় সব প্রমাণ থাকার পরও ফ্যাসিস্ট হাসিনার দোসররা এখন নিজ পদে বাহল রয়েছে।

লিখিত বক্তব্যে তারা আরও বলেন, তদন্ত কমিটির বৈঠকে দায়িত্বশীলরা জানিয়েছিলেন, অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে খাস কমিটির বৈঠক ডেকে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কিন্তু আজ চার কর্মদিবস হয়ে যাচ্ছে, এখনো কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। সারা দেশের কওমি শিক্ষার্থীরা এতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছে এবং আশঙ্কা করছে বেফাকের ভেতর থেকেই একটি চক্র নদভীকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দিচ্ছে।

সচেতন কওমি ছাত্রসমাজের প্রতিনিধি তহা মাহমুদ বলেন, ‘ফ্যাসিবাদের দোসরদের যদি বাঁচানোর চেষ্টা করা হয়, তাহলে বেফাকের বিষদাঁত ওপড়ে ফেলতে, আমাদের প্রাণের শিক্ষাবোর্ড বেফাককে ফ্যাসিস্ট দোসর মুক্ত করতে আমরা আমাদের আন্দোলনকে তীব্র গতিতে রাজপথে আনতে বাধ্য হবো। বেফোক যদি এর পরেও যথাযথ ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হয় তাহলে সকল ফ্যাসিস্টের দোসরদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ দলিল-প্রমাণসহ আরও বিস্তারিত জাতির সামনে পেশ করে শাস্তির দাবিতে আগামী ৩ জানুয়ারি বায়তুল মোকাররম উত্তর গেইটে বাদ জুমা বিক্ষোভ মিছিল কর্মসূচি ঘোষণা করছে সচেতন কওমি ছাত্রসমাজ। এ ছাড়া আগামী ২ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার সারা দেশের কওমি মাদরাসায় গণসংযোগ অনুষ্ঠিত হবে। আমরা এখানে যারা সংবাদ সম্মেলন করেছি, আমরা কেবল প্রতিনিধিত্ব করছি, আমাদের সাথে লাখ লাখ কওমি মাদরাসার শিক্ষার্থীরা রয়েছেন।’

সারাবাংলা/ইএইচটি/এইচআই

কওমি মাদ্রাসার শিক্ষাবোর্ড বেফাক

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর