Sunday 05 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

দাম নেমেছে ১৫ থেকে ৪০ টাকায়, ক্রেতার মুখে হাসি ফেরাল সবজি

রমেন দাশগুপ্ত, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
৩ জানুয়ারি ২০২৫ ০৮:০৩ | আপডেট: ৩ জানুয়ারি ২০২৫ ০৩:১০

প্রায় সব মৌসুমি সবজির দামই নেমে এসেছে ১৫ থেকে ৪০ টাকা কেজিতে। চট্টগ্রামের রিয়াজউদ্দিন বাজারে বৃহস্পতিবারের চিত্র। ছবি: শ্যামল নন্দী/ সারাবাংলা

চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রামের বাজারে মাছের দাম আগের তুলনায় কমলেও বিভিন্ন ধরনের মুরগির দাম বেড়েছে। মাছ-মাংস নিয়ে মিশ্র অবস্থা থাকলেও ক্রেতাদের মধ্যে সন্তুষ্টি ছড়াচ্ছে সবজি। প্রকারভেদে প্রায় সবজির দামই চলে এসেছে ১৫ থেকে ৪০ টাকা কেজি দরে। আলু-পেঁয়াজের দামও আরও কিছুটা কমে আসায় ক্রেতাদের মুখে হাসিও চওড়া হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) বিকেলে নগরীর নুর আহমদ সড়ক থেকে বাজার করতে রিয়াজুদ্দিন বাজারে গিয়েছিলেন গৃহিণী সালমা বেগম। কম দামে বিভিন্ন ধরনের সবজি কিনতে পেরে ভীষণ খুশি তিনি।

বিজ্ঞাপন

সালমা সারাবাংলাকে বলেন, ‘১৫-২০ টাকায় ফুলকপি, বাঁধাকপি কিনতে পারছি। শিম, মূলা, টমেটো সবকিছুর দাম কম আছে। আলুর দামও কমেছে। সারা বছর এভাবে একটু কম দামে তরিতরকারি কিনতে পারলে আমাদের অনেক সুবিধা হতো।’

লাউ, মিষ্টিকুমড়া, বেগুন— দাম কমেছে সব সবজিরই। ক্রেতাদের মুখেও ফুটেছে স্বস্তির হাসি। ছবি: শ্যামল নন্দী/ সারাবাংলা

সালমা বেগমের সন্তুষ্টি স্পষ্ট হলো বাজার ঘুরে দেখতেই। বিক্রেতারা জানালেন, শিমের কেজি ২০ টাকা কমে ৩০ থেকে ৪০ টাকায় নেমেছে। ফুলকপি ১৫ থেকে ২৫ টাকা, বাঁধাকপি ২০ থেকে ৩০ টাকা আর প্রতি পিস লাউ ৩০ থেকে ৪০ টাকায় মিলছে এখন। পাকা টমেটোর কেজি ৪০ থেকে ৫০ টাকা, গাজর ৬০ থেকে ৭০ টাকা, মূলা ২০ টাকা আর শসার কেজি ৫০ টাকা। ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়েই বলছেন, এসব সবজির দাম এখন ক্রেতাদের নাগালের মধ্যে ফিরে এসেছে।

বারোমাসি সবজির মধ্যে কচুরমুখী ৭০ টাকা, বেগুন ৩০ থেকে ৪৫ টাকা, করলা ৭০ থেকে ৮০ টাকা, বরবটি ১০০ টাকা, পেঁপে ৩০ থেকে ৪০ টাকা, ধুন্দল ৬০ টাকা, চিচিঙ্গা ৭০ টাকা, কচুর লতি ৮০ থেকে ১০০ টাকা এবং ঝিঙ্গা ও কাঁচামরিচ কেজি ৪০ থেকে ৫৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। এ ছাড়া লেবুর হালি ২০ থেকে ৪০ টাকা, ধনে পাতার কেজি ১০০ টাকা, কাঁচা কলার হালি ৫০ টাকা এবং মিষ্টিকুমড়ার কেজি ৪০ থেকে ৫০ টাকা।

বিজ্ঞাপন

শাকের মধ্যে লাল শাক ১০ টাকা, লাউ শাক ২৫ টাকা, মূলা শাক ১০ টাকা, পালং শাক ১০ টাকা, পুঁই শাক ৪০ টাকা ও ডাঁটা শাক ২০ টাকা আঁটি দরে বিক্রি হয়েছে। কলমি শাক তিন আঁটি বিক্রি হয়েছে ৩০ টাকায়।

সপ্তাহের ব্যবধানে প্রায় সব ধরনের মুরগির দাম কেজিতে কিছুটা হলেও বেড়েছে। ছবি: শ্যামল নন্দী/ সারাবাংলা

নগরীর রিয়াজুদ্দিন বাজারে বৃহস্পতিবার ব্রয়লার মুরগি ২০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। কাজির দেউড়ি বাজারে এর দাম ছিল ২১০ টাকা। আবার অলিগলির দোকানে কোথাও ২০০, কোথাও ২০৫ টাকা দরেও ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হতে দেখা গেছে। গত সপ্তাহে এই মুরগির দাম ১৯০ থেকে ২০০ টাকার মধ্যে ছিল।

অন্যান্য মুরগির দামও কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা বেড়েছে। বাজারে বৃহস্পতিবার সোনালি মুরগি বিক্রি হয়েছে ৩৩০ থেকে ৩৫০ টাকা ও সোনালি হাইব্রিড ২৯০ টাকা দরে। এ ছাড়া দেশি মুরগি ৫৪০ থেকে ৫৮০ টাকা, লেয়ার লাল মুরগি ৩০০ টাকা ও সাদা লেয়ার ২৯০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে।

গরুর মাংস ও খাসির মাংসের দামেও হেরফের হয়নি। গরু ও মহিষ কেজি প্রতি ৭৫০ থেকে ৯৫০ টাকা ও গরুর মাথার মাংস ৫৫০ টাকা। আর খাসির মাংস কেজি প্রতি এক হাজার থেকে ১১৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

মুরগির দাম বাড়লেও মাছে কিছুটা স্বস্তি রয়েছে ক্রেতাদের জন্য। বেশির ভাগ মাছের দামই কমেছে কেজিতে ২০ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত। ছবি: শ্যামল নন্দী/ সারাবাংলা

মাংসের বাজারের উলটো চিত্র মাছের বাজারে। প্রায় সব ধরনের মাছের দামই কেজিতে ২০ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত কমেছে। বৃহস্পতিবার রিয়াজুদ্দিন বাজারে চাষের শিং মাছ আকারভেদে ৩৫০ থেকে ৪৫০ টাকা, রুই আকারভেদে ২৮০ থেকে ৪৫০ টাকা, দেশি মাগুর মাছ ৮০০ থেকে ১০০০ টাকা, মৃগেল ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা, চাষের পাঙ্গাস ১৮০ থেকে ২২০ টাকায় ও বড় চিংড়ি ৭০০ থেকে ১১০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

এ ছাড়া বোয়াল মাছ ৫০০ থেকে ৮০০ টাকা, বড় কাতল ৩৫০ থেকে ৪৫০ টাকা, পাবদা মাছ ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা, তেলাপিয়া ২২০ টাকা, চাষের কৈ মাছ ২২০ থেকে ২৩০ টাকা, সামুদ্রিক পাঁচমিশালি মাছ ১৫০ থেকে ২২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। ৫০০ গ্রামের ইলিশ এক হাজার টাকা, ৭০০ থেকে ৮০০ গ্রামের ইলিশ ১৫৫০ টাকা ও এক কেজি ওজনের ইলিশ ১৮০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে।

সপ্তাহের ব্যবধানে বাজারে আলু ও পেঁয়াজের দাম কেজিতে আরও অন্তত ৫ টাকা কমেছে। বিভিন্ন দোকানে ভারতীয় পেঁয়াজ প্রতি কেজি ৫০ থেকে ৫৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। শীতকালীন নতুন আলু বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৪৫ থেকে ৫০ টাকায়। আর লাল আলু, সাদা আলু, বগুড়ার আলু, মুন্সীগঞ্জের আলুর দামও কমে ৫০ থেকে ৫৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বাজারে আলুর দামও সপ্তাহের ব্যবধানে কিছুটা হলেও কমেছে। ছবি: শ্যামল নন্দী/ সারাবাংলা

ব্রয়লার মুরগির ডিমের দাম গত সপ্তাহের মতোই আছে। বাজারে প্রতি ডজন ১২০ থেকে ১৩০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। হাঁসের ডিম প্রতি ডজন ২৩০ টাকা ও দেশি মুরগির ডিম ৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বাজারে চালের দরেও আগের সপ্তাহের তুলনায় তেমন হেরফের হয়নি। কাটারিভোগ আতপ ২৫ কেজির বস্তা ২১০০ টাকা, জিরাশাইল ৫০ কেজির বস্তা ৩৯৫০ টাকা, বেতি আতপ ৫০ কেজির বস্তা ৩৫০০ টাকা, হাফ সেদ্ধ নাজিরশাইল ২২০০ টাকা ও পাইজাম আতপ ১৮২০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

মুদি দোকানে প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৭৫ থেকে ১৮০ টাকা ও খোলা সয়াবিন তেল ১৬৮ টাকায় বিক্রি হয়েছে। প্যাকেটজাত চিনি ১২৫ টাকা ও খোলা চিনি ১৩০ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়েছে।

আগের সপ্তাহের তুলনায় কেজিতে পেঁয়াজের দাম কমেছে অন্তত ৫ টাকা। ছবি: শ্যামল নন্দী/ সারাবাংলা

ডালের মধ্যে ছোট মসুরের ডাল ১৩০ টাকা, মোটা মসুরের ডাল ১১০ টাকা, বড় মুগ ডাল ১৪০ টাকা, ছোট মুগ ডাল ১৫৫ টাকা, খেসারি ডাল ১১০ টাকা, চনার ডাল ১৪৫ টাকা ও ছোলা ১৩৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে।

এ ছাড়া আটা দুই কেজির প্যাকেট ১২৫ টাকা ও ময়দা ১৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। খোলা সরিষার তেলের দাম ছিল প্রতি লিটার ১৯০ টাকা। দেশি রসুন ২৬০ টাকা, চায়না রসুন ২৪০ টাকা, চায়না আদা ২০০ টাকা এবং নতুন ভারতীয় আদা ১৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে।

সারাবাংলা/আরডি/টিআর

কাঁচাবাজার চট্টগ্রামের বাজার বাজারদর সবজির দাম সাপ্তাহিক বাজারদর

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর