ঢাকা: বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগে পৃথক পৃথকভাবে দায়ের করা চারটি মামলা বাতিল করে হাইকোর্টের দেওয়া রায় বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগ।
হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে করা আবেদন) খারিজ করে রোববার (৫ জানুয়ারি) বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলামের নেতৃত্বাধীন চার বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার অনীক আর হক।
তারেক রহমানের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, ব্যারিস্টার বদরুদ্দোজা বাদল, ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল, আইনজীবী গাজী কামরুল ইসলাম সজল, ব্যারিস্টার রাগিব রউফ চৌধুরী, আইনজীবী মাকসুদ উল্লাহ, আজমল হোসেন খোকন।
পরে আইনজীবী কায়সার কামাল সাংবাদিকদের বলেন, আজকে আপিল বিভাগে চূড়ান্ত শুনানি শেষে হাইকোর্ট মামলাগুলো বাতিল করে রায় দিয়েছিলেন। এই বাতিলের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল বিভাগে আবেদন করে। দুই পক্ষের পূর্ণাঙ্গ শুনানি নিয়ে আদালত রাষ্ট্রপক্ষের আপিল ডিসমিসড (খারিজ) করে দিয়েছেন। তার মানে দাঁড়াল- হাইকোর্ট মামলাগুলো যে বাতিল করেছিলেন, সেই বাতিলের রায় বহাল থাকল।
আইনজীবীদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, চাঁদাবাজির অভিযোগে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে রাজধানীর পৃথক দুটি থানায় করা চারটি মামলার কার্যক্রম বাতিল ঘোষণা করে গত ২৩ অক্টোবর হাইকোর্ট রায় দেন। ২০০৭ সালে গুলশান থানায় তিনটি এবং ধানমন্ডি থানার একটি মামলাসহ ওই চার মামলার কার্যক্রম বাতিল চেয়ে তারেক রহমানের করা পৃথক আবেদনের ওপর চূড়ান্ত শুনানি শেষে ওই রায় দেওয়া হয়। এই রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ গত ডিসেম্বরে পৃথক লিভ টু আপিল করে। পৃথক লিভ টু আপিল গত ৯ ডিসেম্বর আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে ওঠে। আদালত লিভ টু আপিল আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য নির্ধারণ করেন। লিভ টু আপিলগুলো ৪ জানুয়ারি শুনানির জন্য কার্যতালিকায় রাখা হয়।
আইনজীবীরা আরও জানান, রেজা কনস্ট্রাকশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আফতাব উদ্দিন ২০০৭ সালের ২৭ মার্চ তারেকের ঘনিষ্ঠ বন্ধু গিয়াস উদ্দিন আল মামুনসহ অন্য ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগে গুলশান থানায় একটি মামলা করেন। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আল আমিন কনস্ট্রাকশনের কর্মকর্তা সৈয়দ আবু শাহেদ সোহেল চাঁদাবাজির অভিযোগে একই বছরের ৪ মে গুলশান থানায় একটি মামলা করেন। তারেক রহমান ও তার একান্ত সহকারী মিয়া নূরউদ্দিন অপুকে আসামি করে ঠিকাদার আমীন আহমেদ ভূঁইয়া চাঁদাবাজির অভিযোগ এনে দ্রুত বিচার আইনে গুলশান থানায় ২০০৭ সালের ৮ মার্চ একটি মামলা করেন। ঠিকাদার মীর জাহির হোসেন ধানমন্ডি থানায় ২০০৭ সালের ১ এপ্রিল গিয়াস উদ্দিন আল মামুনের বিরুদ্ধে অপর মামলাটি করেন। এই চার মামলার কার্যক্রম বাতিল চেয়ে ২০০৭ ও ২০০৮ সালে হাইকোর্টে পৃথক আবেদন করেন তারেক রহমান। প্রাথমিক শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট রুলসহ আদেশ দেন।
এরপর চূড়ান্ত শুনানি শেষে রুল অ্যাবসলিউট (যথাযথ) ঘোষণা করে গত ২৩ অক্টোবর রায় দেন হাইকোর্ট।