‘যুক্তরাজ্য পৌঁছে সরাসরি লন্ডন ক্লিনিকে ভর্তি হবেন খালেদা জিয়া’
৬ জানুয়ারি ২০২৫ ১৪:৫২ | আপডেট: ৬ জানুয়ারি ২০২৫ ১৬:২৯
ঢাকা: যুক্তরাজ্যে পৌঁছে সরাসরি ‘লন্ডন ক্লিনিক’ এ ভর্তি হবেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। মধ্য লন্ডনের ডেভনশায়ার প্লেসের মেরিলেবোন রোডে অবস্থিতি এ হাসপাতালটি ইংল্যান্ডের বৃহত্তম বেসরকারি হাসপাতালগুলোর মধ্যে একটি।
সোমবার (৬ জানুয়ারি) দুপুরে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন।
তিনি বলেন, ‘‘ম্যাডামের শারীরিক সুস্থতার ওপর ভিত্তি করে মেডিকেল বোর্ডের পরামর্শক্রমে সকল ফর্মালিটিজ কমপ্লিট করে আগামীকাল ৭ জানুয়ারি রাত ১০ টায় কাতার আমিরের স্পেশাল এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে ঢাকা-দোহা, দোহা-লন্ডন হিথ্রো ফ্ল্যাইটউনি তিনি যাবেন।’’
‘লন্ডনের অনেক পুরোনো ‘লন্ডন ক্লিনিক’ নামে একটা হাসপাতাল আছে। ওখানে উনাকে ভর্তি করা হবে। এয়ারপোর্ট থেকে সরাসরি ওখানে যাবেন। চিকিৎসকরা উনাকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করবেন। উনাদের পরামর্শক্রমে পরবর্তী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে’’— বলেন ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন।
তিনি বলেন, ‘‘ওখানে আমাদের দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, উনার সহধর্মিণী ডা. জোবাইদা রহমান, যুক্তরাজ্য বিএনপির দুইজন নেতা এয়ারপোর্টে উনাকে (খালেদা জিয়া) রিসিভ করবেন। হসপিটাল অথরিটিরি লোক এয়ারপোর্টে আসবে। ওখান থেকে সরাসরি হাসপাতালে যাবেন এবং হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকবেন। পরবর্তী চিকিৎসা কী ধরনের হবে, সেটা রিভিউ করার পর বলা যাবে। এই হচ্ছে মোটামুটি ম্যাডামের বিদেশ যাত্রা ও চিকিৎসা সংক্রান্ত সর্বশেষ খবর। আপাতত এর বেশি এই মুহূর্তে বালা যাচ্ছে না।’’
লন্ডন থেকে আমেরিকা যাত্রা এবং ফেরার সময় উমরাহ পালন সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘‘এই মুহূর্তে নিশ্চিত করে কিছুই বলা যাচ্ছে না। আপনারা জানেন, চিকিৎসকেরা এক পর্যায়ে উনাকে বিদেশে নিয়ে যাওয়ার জন্য পরামর্শ দিয়েছিলেন। আমেরিকার জন হপকিন্সের তিনজন বিশিষ্ট চিকিৎসক ডা. জর্জিয়ারিস, ডা. হামিন জবস উনারা এসছিলেন। উনারা এসে ম্যাডামকে যে চিকিৎসা দেওয়া দরকার, সেই প্রসিডিউর করেছিলেন। এটা ছিল ২০২৩ সালের ২৩ অক্টোবর।’’
‘‘এখন ‘লন্ডন ক্লিনিক’ -এর চিকিৎসকরা যদি মনে করেন উনাকে জন হপকিন্সে পাঠাতে হবে, দেন ম্যাডামকে সেখানে নিয়ে যাব আমরা। আর উমরাহ বিষয়টা সম্পূর্ণ আল্লাহ’র ইচ্ছার ওপর ছেড়ে দিতে হবে। আল্লাহ না চাইলে হজ উমরাহ করা যায় না। তিনি একজন পরহেজগার মানুষ। অনেকবার হজ-উমরাহ করেছেন। যদি শারীরিকভাবে তিনি ফিট থাকেন তাহলে ফিরে আসার সময় অথবা দেশে ফিরে পরবর্তী সময় উমরাহ করতে যাবেন। আপনারা দোয়া করবেন’’— বলেন ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন।
তিনি বলেন, ‘‘বিভিন্ন শারীরিক সীমাবদ্ধতার কারণে, হয়তো বিভিন্ন সময় আপনারা বিভিন্ন জনের কাছ থেকে ইনফরমেশন নিয়ে বিভিন্ন ডেটের কথা বলেছেন, অমুক দিন যাবে, সেদিনি যাবে। অ্যাকচুয়ালি আপনারা জানেন বেগম খালেদা জিয়া ২০২১ সালের ১০ মার্চ থেকে বিভিন্ন সময় করোনা থেকে শুরু করে বিভিন্ন অসুস্থতা নিয়ে বেশ কয়েকবার এভারকেয়ার হাসাপাতালে ভর্তি হয়েছেন। দীর্ঘ সময় অসুস্থততা নিয়ে হাসাপাতালে ভর্তি থাকা অবস্থায় মেডিকেল বোর্ডের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন ছিলেন।’’
‘‘মেডিকেল বোর্ডের নেতৃত্বে ছিলেন প্রফেসর ডা.এফএম সিদ্দিকী, ডা. শাহাবুদ্দীন তালুকদার, ডা. প্রফেসর নুরুদ্দীন আহমেদ, ডা. মুহাম্মদ জাফর ইকবাল, ডা. একেএম মহসিন, ডা. শামসুল আরেফিন, ডা. এজেডএম এম আবু সালেহ, ডা. মাসুম কামাল, ডা. ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাইফুল ইসলাম, ডা. সিজানসহ আমাদের দেশের চিকিৎসকরা সম্পৃক্ত ছিলেন। দেশের বাইরে থেকে যুক্তরাজ্য থেকে আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সহধর্মিণী ডা. জোবাইদা রহমান, আমেরিকা থেকে ডা. হাবিবুর রহমান, ডা.রফিক আহমেদ, অস্ট্রেলিয়া থেকে ডা. মাজহার এই মেডিকেল বোর্ডের মধ্যে সম্পৃক্ত ছিলেন। ইউকের আরেকজন ডা. শেখ ফরিদ আহমেদ আমাদের সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন। আর ডাক্তা আমি ছিলাম এবং ম্যাডামের চিকিৎসক ডা. আল মামুন সার্বক্ষণিক ছিলেন’’— বলেন ডা. জাহিদ।
তিনি বলেন, ‘‘তার সঙ্গে মেডিকেল বোর্ডের ছয় জন সদস্য, তার ব্যক্তিগত কর্মকর্তারা থাকবেন। কাতার আমিরের রয়েল এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে তাদের চারজন চিকিৎসক এবং সহযোগী, যেটাকে বলে প্যারামেডিস উনারা থাকবেন।’’
কবে নাগাদ ফিরবেন জানতে চাইলে ডা. জাহিদ বলেন, ‘‘এটা তো আনপ্রেডিক্টেবল। সম্পূর্ণ নির্ভর করছে উনার শারীরিক সুস্থতার ওপর। তবে, এটুকু বলা যায় সুস্থ হওয়া মাত্রাই তিনি দেশে ফিরবেন। গতকাল যখন তার সঙ্গে স্থায়ী কমিটির সদস্য এবং চিকিৎসকরা দেখা করতে গিয়েছিলেন, তখন তিনি দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন। তিনিও দেশবাসীর জন্য দোয়া করেছেন।’’
সারাবাংলা/এজেড/ইআ
খালেদা জিয়া ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন বিএনপির চেয়ারপারসন লন্ডন ক্লিনিক