‘১০ বছরে সাড়ে ৬০০ কোটি টাকার দুর্বল আইপিও বাজার এসেছে’
৯ জানুয়ারি ২০২৫ ১৮:১৪ | আপডেট: ৯ জানুয়ারি ২০২৫ ২০:৫৫
ঢাকা: ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) চেয়ারম্যান মমিনুল ইসলাম বলেছেন, গত ১০ বছরে সাড়ে ৬০০ কোটি টাকা মূল্যের দুর্বল আইপিও বাজার এসেছে। আমাদের ভালো কোম্পানি আছে, তবে তা একেবারেই নগণ্য। বাজারে বিনিয়োগকারী সংখ্যা গত ১০ বছরে অর্ধেকে নেমে এসেছে। বাজারে সক্রিয় বিনিয়োগকারী আরো অনেক কম।
বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) ঢাকা ক্লাবে ‘পুঁজিবাজারের বর্তমান পরিস্থিতি ও করণীয়’ বিষয়ক এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে উত্তরে তিনি এসব কথা বলেন।
সংবাদ সম্মেলনে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) চেয়ারম্যান, হাবিবুর রহমান, ডিএসইর পরিচালক মো. শাকিল রিজভী ও মিনহাজ মান্নান ইমন, ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ডিবিএ) সভাপতি সাইফুল ইসলাম, বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) সভাপতি মাজেদা খাতুন উপস্থিত ছিলেন।
ডিএসইর চেয়ারম্যান বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে আমরা যে অনিয়ম ও অদক্ষতাকে লালন করেছি সেটাই পুঁজিবাজারকে ইতিবাচক হতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছে। আমার পুঁজিবাজারকে ভীষণভাবে সংকুচিত করে ফেলায় অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখতে ব্যর্থ হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘পুঁজিবাজারে সক্ষমতা পরিমাপের অন্যতম একক হলো বিদেশি বিনিয়োগের পরিমাণ। বর্তমানে বিদেশি বিনিয়োগের পরিমাণ এক শতাংশের নিচে নেমে এসেছে। করপোরেট বন্ডের পরিমাণ যদিও ১ শতাংশ বলা হয়। প্রকৃতপক্ষে তা শূন্য দশমিক ৫১ শতাংশের বেশি নয়। বাজারে নতুন আইপিও, কর্পোরেট বন্ড ও মিউচুয়াল ফান্ড আমাদের অগ্রাধিকার রয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘কোম্পানিগুলোকে যদি আমরা সক্ষম করতে না পারি, তাহলে হয়তো আমরা আবারও ব্যক্তির নিয়ন্ত্রণে চলে যাব। কোম্পানিগুলোকে সক্ষম করতে হলে কিছুটা সময় আমাদের লাগবে। পুঁজিবাজার লিডিং এবং কোঅর্ডিনেশনের জায়গায়টা হোল্ড করবে। ডিএসইকে সামনে এগিয়ে নিতে দক্ষ মানবশক্তি লাগবে। আমরা নেতৃত্ব গুণাবলী সম্পূর্ণ লোকবল নিয়োগ দিচ্ছি। আশা করছি, বাজারে আস্থা চাইতে ভালো হবে, বিনিয়োগকারীরা আবার ফিরে আসবে। আইটি সিকিউরিটি অডিটটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ডিএসই ওয়েব সাইটটাকে আমরা রিভাইব করছি। বিশেষ করে কীভাবে আইপিও টাকে ডিজিটালাইজড করা যায়। বন্ড মার্কেটও পরিচালনা সমস্যা, আমরা বিএসইসির সঙ্গে সমন্বিতভাবে কাজ করছি।’
মমিনুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীদের নিয়ে কাজ করছি এবং ভবিষ্যতে যেন কেউ যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। সে কাজও আমরা করছি। ইনসাইডার ট্রেড এবং ম্যানুপুলেশন কীভাবে রোধ করা যায় তা নিয়ে কাছ করছি। মার্কেট ডিভলমেন্টের ক্ষেত্রে রিসার্চ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের বাজারে রিসার্চের মাত্রা খুবই কম এবং এটা কীভাবে বাড়ানো যায় তা নিয়ে কাজ করছি।’
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান বলেন, ‘বাংলাদেশ সিকিউরিটি অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন ( বিএসইসি) আমাদের চাপিয়ে দিতে চাচ্ছে না। আমরা সহযোগিতামূলকভাবে কাজ করছি।’
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ডিএসইর চেয়ারম্যান বলেন, ‘ডিএসইর সুরক্ষা যদি আইনগত হয় তবে আমরা স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারব। সিসিবিএল থাকবে এমনটা আমরা চাই না। বিএসইসি, ডিএসই, সিসিবিএল এ বিষয়ে সম্মানিত হবে কাজ করছে। জনবল নিয়োগের ক্ষেত্রে আমরা অবশ্যই দক্ষতাকে গুরুত্ব দিচ্ছি।’
ডিএসইর পরিচালক মিনহাজ মান্নান ইমন বলেন, ‘ডিএসই যদি প্রভাব মুক্ত থাকতে পারে, তাহলে পুঁজিবাজার ইতিবাচক কাজ করার সুযোগ রয়েছে। ১৫ বছরের অনিয়মের বিচার বিশ্লেষণ করা দরকার। আপনাদের কাছ থেকে কিছু তথ্য উঠে এসেছে। তবে সামগ্রিকভাবে সব অনিয়মের তথ্য উঠে আসছে না। আপনারা সহযোগিতা করলে অনিয়মের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়া আমাদের জন্য সহজ হয়। আপনারা তুলে নিয়ে আসুন, আমরা নেব।’
সারাবাংলা/জিএস/পিটিএম