রেলে গণহারে পদোন্নতির দাবি শ্রমিক দলের
৯ জানুয়ারি ২০২৫ ১৯:৪৫ | আপডেট: ৯ জানুয়ারি ২০২৫ ২০:০২
রাজশাহী: বাংলাদেশ রেলওয়ের পশ্চিমাঞ্চলে কর্মরত এমএলএসএসদের গণহারে পদোন্নতি চায় রেল শ্রমিক দল। একই সাথে রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপকের (জিএম) অপসারণের দাবি করেছে সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
এ দাবিতে বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) দুপুরে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী রেল শ্রমিক দলের নেতাকর্মীরা রাজশাহীতে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপকের (জিএম) কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ করেছেন।
পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, দক্ষ এমএলএসএসদের পদোন্নতি দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। তাদের অফিস সহকারী কাম মুদ্রাক্ষরিক পদে পদোন্নতি দেওয়া হবে। যারা কম্পিউটার পরিচালনায় দক্ষ, তারাই পদোন্নতি পাবেন। এ জন্য দেড় শতাধিক এমএলএসএসের দক্ষতার পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে। তবে অফিস সহকারী কাম মুদ্রাক্ষরিক পদ ফাঁকা আছে প্রায় দুই শতাধিক।
শ্রমিক দলের দাবি, পদ যেহেতু ফাঁকা আছে। তাই সবাইকেই গণহারে পদোন্নতি দিতে হবে। তারা বলছেন, অনেকে ৮-১০ বছর ধরে কোনো পদোন্নতি পাননি। তাই এটি তাদের অধিকার।
সংশ্লিষ্টরা জানান, সম্প্রতি এক কর্মচারীকে নিজ গ্রেডের কয়েকধাপ ওপরের একটি পদের অতিরিক্ত দায়িত্ব পাইয়ে দিতে সিএমও দফতরে যান রেল শ্রমিক দলের নেতারা। কিন্তু এ দাবি নাকচ করে দেন সিএমও। এ সময় শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে তার বাগবিতণ্ডা হয়। তার দফতরে থাকা ঠিকাদাররাও সিএমও’র পক্ষ নিয়ে শ্রমিক দলের নেতাদের সঙ্গে বাগবিতণ্ডায় জড়ান।
মূলত ওই ঘটনার বিচার দাবি এবং এমএলএসএসদের গণহারে পদোন্নতির দাবিতে বিক্ষোভ করেন শ্রমিক দলের নেতাকর্মীরা। এ সময় কেউ কেউ জিএম মামুনুল ইসলামের অপসারণও দাবি করেন। কিছুক্ষণ বিক্ষোভ করার পর শ্রমিক দলের নেতাকর্মীরা ফিরে যান।
এর আগে সেখানে বক্তব্য দেন জাতীয়তাবাদী রেল শ্রমিক দলের সভাপতি রফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘ইতোমধ্যে আমাদের শ্রমিকদের প্রতি যে অবমাননা করা হয়েছে, এক সপ্তাহ হলেও আপনি (জিএম) কোন ব্যবস্থা নেননি। আপনি সিএমওকে রক্ষা করার চেষ্টা করছেন। আমরা আপনার একজন ড্রাইভারকেও যদি কাজ করতে বলি, আপনি বলেন আমরা নাকি জোর করি। আমাদের অনুরোধ যদি আপনি না রাখতে পারেন, আমরা আর যাব না। কিন্তু কোনো ফাইলে যদি অনিয়ম দেখি তাহলে তার প্রতিবাদ অবশ্যই করব।’
জিএমকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ‘আগামীতে যদি গত সরকারের এজেন্ট হিসেবে কাজ করতে চান, অবশ্যই চলার গতি বাধাগ্রস্ত হবে। তাই অবশ্যই আমার শ্রমিকের নায্য অধিকার দিবেন।’
রফিকুল ইসলাম আরও বলেন, ‘অনেকে ৮-১০ বছর ধরে ছোট পদে চাকরি করছে, কিন্তু পদোন্নতি পায়নি। আমরা বলছি, এতদিন পর যেহেতু পদোন্নতির প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে এটা সবাইকেই দিতে হবে। এতে বেতন বাড়বে না, একটা সম্মান পাবে শুধু।’
তিনি বলেন, ‘আমরা বিশেষ কোনো দল বা মতের কর্মচারীদের পদোন্নতি চাচ্ছি না। সবারই পদোন্নতি চাচ্ছি। এ জন্য গিয়েছিলাম। কিন্তু জিএম মিটিংয়ে ব্যস্ত ছিলেন। দেখা হয়নি।’
জিএম মামুনুল ইসলাম বলেন, ‘পদোন্নতি আমরা দেব, কিন্তু সরকারি নিয়ম-কানুন তো মানতে হবে। পদোন্নতি দেওয়ার জন্য এখন দক্ষতার পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে। এর বাইরে গিয়ে তো সবাইকে গণহারে পদোন্নতি দেওয়া সম্ভব নয়। গণহারে পদোন্নতির দাবিতে কারা বিক্ষোভ করেছেন সেটা আমি শুনিনি। সকাল থেকে আমি মিটিংয়ে ছিলাম।’
সিএমও দফতরে শ্রমিক দলের নেতাদের সঙ্গে কী হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘তারা এক কর্মচারীকে অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়ার জন্য বলেছিলেন। এখন সেটা তার গ্রেডের এক ধাপ ওপরের গ্রেডের হলে হয়। এটা করতে হলে কয়েক গ্রেড ওপরে যেতে হবে। এটাও হয় না।’
সারাবাংলা/এনজে