আসন্ন চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে তিনি থাকবেন কিনা, সেটা নিয়েই চলছিল নানা গুঞ্জন। শেষ পর্যন্ত সব গুঞ্জন থামিয়ে দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণাই দিয়ে দিলেন বাংলাদেশি ওপেনার তামিম ইকবাল। ১৭ বছরের দীর্ঘ ক্যারিয়ারে বাংলাদেশের হয়ে তিন ফরম্যাটেই তামিম গড়েছেন নানা রেকর্ড। চলুন দেখে নেওয়া যাক বাংলাদেশের জার্সি গায়ে তার কিছু অনন্য কীর্তি।
বাংলাদেশের ক্রিকেটে অনেক আইকনিক মুহূর্ত উপহার দিয়েছেন তামিম। পোর্ট অফ স্পেনে জহির খানের বলে ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে এসে ছক্কা, লর্ডসে সেঞ্চুরি করে লাফিয়ে উঠে অনার্স বোর্ডে নাম তোলার ইঙ্গিত, এশিয়া কাপে টানা চার হাফ সেঞ্চুরিতে আঙুল দেখিয়ে উদযাপন, ভাঙ্গা আঙুল দিয়ে অবিশ্বাস্যভাবে ক্রিজে নামা; তামিমের এমন অগণিত মুহূর্তের সাক্ষী বাংলাদেশের ক্রিকেট। তিন ফরম্যাটে ব্যাট হাতে অনেক প্রথমের জন্মও দিয়েছেন তামিম।
তিন ফরম্যাটেই সেঞ্চুরি করা বাংলাদেশের প্রথম ও এখন পর্যন্ত একমাত্র ব্যাটার তামিম। টেস্ট ও ওয়ানডেতে তো সেঞ্চুরি ছিলই, ২০১৬ সালে টি-২০ বিশ্বকাপে সেঞ্চুরি করে সব ফরম্যাটে সেঞ্চুরি করা একমাত্র বাংলাদেশি হওয়ার অনন্য রেকর্ডটি করেন তামিম।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ১৫ হাজার রান করা প্রথম বাংলাদেশি ব্যাটার তামিম। গত আগস্টে তার সঙ্গী হয়েছেন মুশফিকুর রহিম। পরবর্তীতে তামিমকে টপকে বাংলাদেশের হয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক হয়েছেন মুশফিক।
তিন ফরম্যাট মিলিয়ে তামিমের সেঞ্চুরি ২৫টি। বাংলাদেশের হয়ে এটাই সর্বোচ্চ সেঞ্চুরি। বাংলাদেশের হয়ে কারো ২০টির বেশি সেঞ্চুরি নেই।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ৯৪টি হাফ সেঞ্চুরি ও ২৫টি সেঞ্চুরি আছে তামিমের। সব মিলিয়ে ১১৯টি পঞ্চাশ ছোঁয়া ইনিংস আছে তামিমের, যা দেশের হয়ে সর্বোচ্চ। ১১৪টি পঞ্চাশ ছোঁয়া ইনিংস নিয়ে তামিমের পরেই আছেন সাকিব।
ওয়ানডেতে ৮ হাজার রান করা একমাত্র বাংলাদেশি ব্যাটার তামিম। ৮৩৫৭ রান নিয়ে ক্যারিয়ারের ইতি টানলেন তিনি। দুইয়ে থাকা মুশফিক আছেন ৭৭৯৩ রানে।
ওয়ানডেতে ছক্কার সেঞ্চুরি করা প্রথম ব্যাটার তামিম। ক্যারিয়ারে ১০৩টি ছক্কা হাঁকিয়েছেন তিনি। তাকে টপকে এখন ওয়ানডেতে সর্বোচ্চ ছক্কা মাহমুদউল্লাহর, তিনি মেরেছেন ১০৭টি ছক্কা। তিন ফরম্যাট মিলিয়ে তামিমের ছক্কা ১৮৮টি। এখানেও তামিমকে ছাড়িয়ে ২০৮টি ছক্কা আছে মাহমুদউল্লাহর।
ওয়ানডেতে বাংলাদেশের হয়ে সবচেয়ে কম বয়সে সেঞ্চুরির কীর্তি গড়েছেন তামিম। ২০০৮ সালে ১৯ বছর ২ দিন বয়সে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি করেছিলেন তিনি।
ওয়ানডে টানা ৫ ম্যাচে পঞ্চাশ ছোঁয়া ইনিংস খেলা প্রথম বাংলাদেশি ব্যাটার তামিম। পরে তার সঙ্গী হয়েছেন সাকিব।
টেস্টে টানা ৫ ইনিংসে ফিফটি করা একমাত্র বাংলাদেশি ব্যাটার তামিম।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ২২ বার ম্যাচ সেরা হয়েছেন তামিম। তার উপরে আছেন শুধুই সাকিব, তিনি হয়েছেন ৪৫ বার। তামিম সিরিজ সেরা হয়েছেন ৭ বার, এখানেও তামিমের উপরে আছেন সাকিব, সিরিজ সেরা হয়েছেন ১৭ বার।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে দেশের হয়ে সবচেয়ে বেশি শূন্য রানে ফেরার লজ্জার রেকর্ডও আছে তামিমের। তিনি সব মিলিয়ে ৩৬টি ডাক মেরেছেন দেশের হয়ে।
তিন ফরম্যাট মিলিয়ে ৩৮৭ ম্যাচে খেলে অবসরের যাচ্ছেন তামিম। বাংলাদেশের হয়ে তার চেয়ে বেশি ম্যাচ খেলেছে মাহমুদউলাহ (৪২৯), সাকিব ( ৪৪৭) ও মুশফিক (৪৬৮)।