ভ্যাট-ট্যাক্স বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবি ফ্যাসিবাদবিরোধী বাম মোর্চার
১৩ জানুয়ারি ২০২৫ ২১:৩৬
ঢাকা: ফ্যাসিবাদবিরোধী বাম মোর্চার নেতারা বলেছেন, একচেটিয়া পুঁজিপতি ও সাম্রাজ্যবাদের স্বার্থে পতিত ফ্যাসিষ্ট সরকারের ন্যায় সাধারণ মনুষের সর্বনাশ করা চলবে না। আমরা জনগণের প্রতি সরকারের গণবিরোধী সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানাচ্ছি। সেইসঙ্গে ভ্যাট-ট্যাক্স বৃদ্ধিসহ গণবিরোধী সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।
তারা আরও বলেন, লাগামহীনভাবে প্রতিদিনই বাড়ছে নিত্যপণ্যের দামসহ জীবনযাত্রার ব্যয়। ব্যবসায় সিন্ডিকেট, মজুদার, পাচারকারী, ঋণ খেলাপীসহ অসাধু ব্যবসায়ী ও লুটেরাদের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নেই সরকারের। জনগণের পকেট কাটার পরিবর্তে লুট হওয়া টাকা উদ্ধার ও লুটপাটের পথ বন্ধ করতে হবে।’
সোমবার (১৩ জানুয়ারি) বাম মোর্চা’র সমন্বয়ক ও গণমুক্তি ইউনিয়নের আহ্বায়ক নাসির উদ্দিন আহমেদ নাসু সভাপতিতে আ ফ ম মাহবুবুল হক মিলনায়তনে কেন্দ্রীয় পরিচালনা পরিষদ এক সভায় নেতারা এসব কথা বলেন। সভায় বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশের সাম্যবাদী আন্দোলনের সমন্বয়ক শুভ্রাংশু চক্রবর্তী, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) কেন্দ্রীয় নেতা মহিনউদ্দিন চৌধুরী লিটন, বাংলাদেশের সোস্যালিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম, জাতীয় গণতান্ত্রিক গণমঞ্চের সভাপতি মাসুদ খান প্রমুখ।
সভায় নেতারা বলেন, সরকার ঘোষণা দিয়েছে সিন্ডিকেট ও ঋণ খেলাপীদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিতে পারবে না। এভাবে বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকরের ব্যর্থতাই শুধু নয়, তাদের সদিচ্ছা নিয়েই প্রশ্ন উঠছে। এখনও নির্দিষ্ট কিছু করপোরেট ও ফড়িয়া সিন্ডিকেটই বাজার নিয়ন্ত্রণ করছে। সরকারের সিদ্ধান্ত দেশীয় সিন্ডিকেট, একচেটিয়া পুঁজিপতি ও সাম্রাজ্যবাদেরই স্বার্থরক্ষা করছে।
তারা বলেন, দেখা গেল হঠাৎ করে বাজার থেকে বোতলজাত সয়াবিন উধাও। আবার সরকার কর্তৃক দাম আট টাকা বাড়ানোর সঙ্গে সঙ্গেই বাজার সয়লাব। এদিকে পেঁয়াজের দাম নিয়ন্ত্রণের কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ না করে দেশি পেঁয়াজ ওঠার আগমুহুর্তে আমদানি করে কৃষককে পথে বসানো হয়েছে। কৃষক ফসলের দাম পাচ্ছে না। উৎপাদিত ফসলই কৃষকের ফাঁসে পরিণত হয়েছে, ফেলে দিতে বাধ্য হচ্ছে।
তারা আরও বলেন, হাত বদল হয়ে সেই ফসলই সাধারণ মানুষকে বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। অথচ প্রতিদিন সার বীজসহ কৃষি উপকরণের দাম বেড়েই চলেছে। শ্রমজীবি মানুষের কাজ ও মজুরীর কোনো নিশ্চয়তা নেই। কিন্তু দাম বৃদ্ধি-অপরিকল্পিত আমদানির ফলে কার্যত সাধারণ মানুষের পরিবর্তে ফড়িয়া-সিন্ডিকেটই লাভবান হচ্ছে। কৃষক, শ্রমিক, নিন্মআয়ের জনজীবন হয়ে উঠেছে দুর্বিষহ। উচ্চ মুদ্রাস্ফীতির ফলে এমনিতে জনজীবন সংকটাপন্ন, তার উপর আইএমএফএর পরামর্শে সরকার শতাধিক পণ্যের ভ্যাট ও শুল্ক বাড়িয়েছে। ওদিকে ট্রাকে টিসিবি পণ্য বিক্রি বন্ধসহ ৪৩ লাখ পরিবারের কার্ড বাতিল করে দিয়েছে। এভাবে অব্যাহতভাবে নিম্নবিত্ত-মধ্যবিত্ত সাধারণ মানুষের উপর মূল্যবৃদ্ধির বোঝা চাপিয়ে দেশি-বিদেশি শোষকদের সেবা করছে সরকার।
সারাবাংলা/এএইচএইচ/এইচআই