‘লাল সন্ত্রাস’ ঘোষণা
মেঘমল্লার বসুকে গ্রেফতারের দাবিতে ঢাবিতে বিক্ষোভ
১৮ জানুয়ারি ২০২৫ ০২:২০
ঢাকা: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি মেঘমল্লার বসু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের এক পোস্টে ‘লাল সন্ত্রাস’র ঘোষণা দিয়েছে। আর এই পোস্টকে ঘিরে বিক্ষোভ মিছিল করেছে ঢাবির একদল শিক্ষার্থী। বিক্ষোভ থেকে তারা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মেঘমল্লার বসুকে গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছে।
শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) দিবাগত রাত ১২ টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হল পাড়া থেকে এ বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়ে রাজু ভাস্কর্যে গিয়ে শেষ হয়। এরপর সেখানে সমাবেশ করেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। এ সময় শিক্ষার্থীদের ‘হৈ হৈ রই রই, মেঘমল্লার গেলি কই?’, ‘অ্যাকশন, অ্যাকশন, ডাইরেক্ট -অ্যাকশন’, ‘লাল সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে, ডাইরেক্ট অ্যাকশন’সহ নানা স্লোগান দিতেও দেখা যায়।
সমাবেশে বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী মুসাদ্দিক আলী বলেন, ‘৮০ দশকের ন্যায় এই ছাত্র ইউনিয়ন আবার ক্যাম্পাসে লাল সন্ত্রাসের ঘোষণা দিয়েছে। এ লাল সন্ত্রাসীরা ঢাবি ক্যাম্পাসে একটা সংঘর্ষ সৃষ্টি করে ডাকসু নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করছে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মেঘমল্লার বসুকে গ্রেফতার করতে হবে।এনসিটিবি হামলার পর থেকেই আমরা দেখতে পাচ্ছি, একটা গুষ্টি সন্ত্রাসের হুমকি দিচ্ছে। আমরা প্রশাসনের কাছে এদেরকে গ্রেফতারের দাবি জানাচ্ছি।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্রআন্দোলনের সমন্বয়ক মাহিন সরকার বলেন, ‘আমরা দেখতে পাচ্ছি, মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে আওয়ামী লীগের ন্যারেটিভ প্রচার করে যাচ্ছে এই ছাত্র ইউনিয়ন। আমাদের ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার স্বার্থে উদ্যানের গেট বন্ধ করা হয়। তারা আমাদের প্রক্টর স্যারের সাথেও খারাপ ব্যবহার করেছে। আজ তারা প্রকাশ্যে লাল সন্ত্রাসের ঘোষণা দিয়েছে। ৯২ সালের ডাকসু বন্ধ হওয়ার পিছনে এই লাল সন্ত্রাসের হাত আছে।’
উল্লেখ্য, ‘লাল সন্ত্রাসই আমাদের একমাত্র বিকল্প পথ’ এমন মন্তব্য করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটা পোস্ট দেন ঢাবি ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি মেঘমল্লার বসু। যেটাকে ঘিরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও ঢাবির শিক্ষার্থীরা আন্দোলন গড়ে তুলেছে। যদিও পরবর্তী সময়ে তিনি পোস্টটি সরিয়ে ফেলেন।
ফেসবুক পোস্টে মেঘমল্লার বসু বলেন, ‘একমাত্র পথ হলো লাল সন্ত্রাস। প্রান্তিক জনগণের সুরক্ষার জন্য প্রতিরোধমূলক সহিংসতা। যতদিন আমরা শুধু প্রার্থনা সভা এবং মিছিল করে যাব, যা কখনো স+হিংস হওয়ার ক্ষমতা রাখে না, ততদিন তুমি তোমার সাথীদের সুরক্ষিত করতে পারবে না। মানুষ তোমাকে পছন্দ করবে, কিন্তু কেউ অনুপ্রাণিত হবে না। আর কেউ আরেকটি ‘উদারপন্থী’ দলের প্রয়োজন অনুভব করে না। কেউ ইচ্ছাকৃত শহীদদের পরোয়া করে না। একমাত্র ভালো ফ্যাসিস্ট হলো মৃত ফ্যাসিস্ট।’
তিনি বলেন, ‘এই ডানপন্থী উন্মাদনার মধ্যে তোমাকে সার্বভৌমত্বের নামে হত্যা করা হবে এবং তারপর তোমার চরিত্র হনন করা হবে। মাতাল উদারপন্থী ও ‘কেন্দ্রপন্থীরা’, যারা ইতোমধ্যেই তাদের মন-প্রাণ ডানপন্থার কাছে বিক্রি করে দিয়েছে, তারা দাবি করবে এটি ছিল একটি সাংস্কৃতিক যুদ্ধ এবং উভয় পক্ষই খারাপ। তোমার সাথী খুবই কম। তুমি একটিকেও হারানোর মতো অবস্থায় নেই। আর মানুষ ভেড়ার মতো। তুমি কি সারা জীবনের জন্য একজন রাখাল হওয়ার জন্য প্রস্তুত?’
মেঘমল্লার আরও বলেন, ‘পাবলিক ডেমোনস্ট্রেশন করা বন্ধ করো। কমিটির কার্যক্রম প্রকাশ্যে প্রচার করা বন্ধ করো। আমরা যদি সতর্ক না হই, তাহলে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাব। দাঁত আর নখ বেরিয়ে আসছে। ট্রল আর মিম করে এর থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব না। এবার এটি গোপনে নিয়ে যাও, কমরেড। অপেক্ষা করো। এর বেশি প্রকাশ্যে বলার প্রয়োজন নেই।’
সারাবাংলা/এআইএন/পিটিএম
‘লাল সন্ত্রাস’ ঘোষণা গ্রেফতারের দাবি ঢাবিতে বিক্ষোভ মেঘমল্লার বসু