Wednesday 12 Feb 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ফ্যাসিবাদের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে পরিণত হয়েছে দিল্লি: রিজভী

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
২০ জানুয়ারি ২০২৫ ১৬:৩৭ | আপডেট: ২০ জানুয়ারি ২০২৫ ১৭:৫৭

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

ঢাকা: দিল্লি ফ্যাসিবাদের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে পরিণত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

সোমবার (২০ জানুয়ারি) দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মল চত্ত্বরে নিম গাছের চারা রোপণ কর্মসূচিতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।

বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের (বীর উত্তম) ৮৯তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে এ কর্মসূচি আয়োজন করে জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন।

রিজভী বলেন, ‘‘পাশের একটি দেশ ফ্যাসিবাদের সেইফ হোমে পরিণত হয়েছে। দিল্লি ফ্যাসিবাদের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে পরিণত হয়েছে। সুতরাং তারা (ফ্যাসিবাদীরা) বসে নেই। তারা নানাভাবে নানা কায়দায় তাদের চক্রান্ত এবং ষড়যন্ত্র অব্যাহত রেখেছে। এই ষড়যন্ত্রকে আমাদের সম্মিলিতভাবে মোকাবিলা করতে হবে।’’

তিনি বলেন, ‘‘যারা দেশের টাকা পাচার করেছে, অর্থনীতিকে একটি হুন্ডি চক্রের মধ্যে আবদ্ধ করেছে তাদের যেন ফের উত্থান না ঘটে। গণতান্ত্রিক দৃষ্টিকোণ থেকে একে অপরের প্রতি আলোচনা-সমালোচনার বিষয়টি থাকলেও, আমাদের মধ্যে একটা ন্যূনতম ঐক্য থাকতে হবে। এই ঐক্য যদি না থাকে তাহলে সেই ফ্যাসিবাদের পুনরুত্থান ঘটা অস্বাভাবিক হবে না।’’

রিজভী বলেন, ‘‘আজকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্মুক্ত প্রাঙ্গণে দাঁড়িয়ে এই যে কথা বলছি, সেটা কত আনন্দ-উচ্ছ্বাস বা উল্লাসের তা বলার অপেক্ষা রাখে না। যখন আমি ছাত্র রাজনীতির কারণে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আসি, তখন অপরাজেয় বাংলা, মধুর ক্যান্টিনে এবং সারা ক্যাম্পাসে কত রাজনৈতিক বক্তৃতা, বিতর্ক আমরা করেছি। সেই আনন্দের দিন যেন স্বৈরাচারের সময়ে হারিয়ে গিয়েছিল। এই অবস্থায় আমরা কখনো কখনো বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতর দিয়ে যেতে সাহস করতাম না। যখন যেতাম তখন আমরা গাড়ির জানালাটা তুলে দিতাম, কেউ যেন না দেখে। শেখ হাসিনার আমলে ফ্যাসিবাদের প্রাণকেন্দ্র ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। পরিবেশকে বিপন্ন করে ফেলেছিল শেখ হাসিনা।’’

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘‘একনায়কতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা জারি থাকলেও ভেনেজুয়েলা থেকে মস্কো বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিশ্বের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়গুলো একটি কর্পোরেট স্বায়ত্তশাসন ভোগ করেছে এবং ছাত্র আন্দোলন সেখানে তীব্র হয়েছে। কিন্তু শেখ হাসিনা তার সময়ে সেই চিহ্নটুকুও রাখেনি। তখন বিশ্ববিদ্যালয় গণতন্ত্রের জন্য এবং গণতান্ত্রিক চিন্তা-ভাবনা মুশকিল ছিল। কারণ, বিশ্ববিদ্যালয়ে সহাবস্থান থাকবে, একটি ছাত্র সংগঠন আরেকটি সংগঠনের সমালোচনা করবে, দেশ ও রাষ্ট্র নিয়ে কথা বলবে সেই সুযোগই রাখেনি বিগত দেড় দশকে। এজন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে সহাবস্থানের পরিবেশকে বজায় রাখতে হবে।’’

রিজভী বলেন, ‘‘এই মুহূর্তে মানবজাতি বৈশ্বিকভাবে একটি বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে। মানবজাতি তার অস্তিত্ব বিনাশের পথে এগিয়ে চলেছে। বৈশ্বিক উষ্ণয়নের কারণে পৃথিবীর ভবিষ্যৎ নিয়ে বিজ্ঞানীরা শঙ্কার মধ্যে রয়েছে। আমরা জানি, পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ বিভিন্ন ইন্টারন্যাশনাল ফান্ড তৈরি করেছে, এখান থেকে বিভিন্ন দরিদ্র বা অনুন্নত দেশগুলোকে সহযোগিতা করা হচ্ছে। এই কাজটি আরও গুরুত্বসহকারে করা উচিত, তাহলে আশানুরূপ ফল পাওয়া যাবে। এটি শুধু একটি রাষ্ট্র বা সরকারের দায়িত্ব নয়। এটি একটি সামাজিক আন্দোলন, ব্যাপকভাবে জনগণের অংশগ্রহণ ছাড়া এটি সম্ভব নয়।’’

রিজভী বলেন, ‘‘ শেখ হাসিনার সরকার তথাকথিত উন্নয়নের নামে মেগা প্রজেক্ট দেখিয়ে বৃক্ষ নিধন ও নদী বন্ধ করে দিয়ে ভূমিদস্যুর খেতাব পেয়েছেন। তারা এই পৃথিবীকে মানুষের বসবাসের অনুপযোগী করে ধ্বংসের পথে নিয়ে গেছেন। তাদের প্রতিনিধি ছিলেন ৫ আগস্টের পরে দেশ ছেড়ে পালানো ব্যক্তিরা। তথাকথিত মেগা প্রজেক্টের নামে তারা নদী ভরাট করেছে, খাল ভরাট করেছে, তারা বৃক্ষ উধাও করে দিয়েছে। কারণ, স্বৈরাচার যখন আসে তখন স্বৈরাচারের দ্বারা কখনোই মানুষের মঙ্গলের জন্য কোনো কাজ হতে পারে সেটা কেউ বিশ্বাস করে না।’’

বিজ্ঞাপন

জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক ডা. ফরহাদ হালিম ডোনারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কর্মসূচিতে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ঢাবি সাদা দলের আহ্বায়ক ড. মোর্শেদ হাসান খান, জিয়াউর রহমানের জন্মবার্ষিকী উদযাপন কমিটি-২০২৫ এর আহ্বায়ক ডা. শাহ মুহাম্মদ আমান উল্লাহ, সদস্য সচিব অধ্যাপক ড. সোহাগ আওয়াল, সদস প্রকৌশলী মাহবুব আলম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাদা দলের সাবেক আহ্বায়ক ড. লুৎফর রহমান খান, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সাইফুদ্দীন আহমদ প্রমুখ।

সারাবাংলা/এজেড/ইআ

রুহুল কবির রিজভী

বিজ্ঞাপন

তিস্তা নিয়ে বিএনপির ২ দিনের কর্মসূচি
১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১০:০৩

আরো

সম্পর্কিত খবর