Tuesday 21 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘শিক্ষা ব্যবস্থা একদম শেষ, কিছু অবশিষ্ট আছে বলে মনে হয় না’

স্পেশাল করেসপডেন্ট
২১ জানুয়ারি ২০২৫ ১৮:৫২ | আপডেট: ২১ জানুয়ারি ২০২৫ ১৯:৫৪

জিয়া স্মৃতি পাঠাগারের ‘গ্রন্থ আড্ডা’ অনুষ্ঠান

ঢাকা: বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আমাদের অনেক সমস্যা। তার মধ্যে লেখাপড়াটা একেবারে শেষ হয়ে গেছে। শিক্ষা এবং শিক্ষাব্যবস্থা এটা একদম শেষ। এটার মধ্যে কিছু অবশিষ্ট আছে বলে আমার মনে হয় না। আপনি প্রাইমারি স্কুল থেকে শুরু করে একেবারে ইউনির্ভাসিটি, সব জায়গার মান এত নিচে চলে গেছে, তা বলে বোঝানো যাবে না।

মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে জিয়া স্মৃতি পাঠাগারের ‘গ্রন্থ আড্ডা’ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

বিজ্ঞাপন

জিয়াউর রহমানের ৮৯তম জন্মবার্ষিকী এবং জিয়া স্মৃতি পাঠাগারের ১২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে এই আলোচনা সভা আয়োজন করা হয়।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘মেডিকেল কলেজগুলোতে ভর্তি পরীক্ষার রেজাল্ট কালকে বেরিয়েছে.. এতোগুলো ছেলে-মেয়ে পরীক্ষা দিয়েছে তার মধ্যে মনে হয় সাড়ে পাঁচ হাজার ভর্তির সুযোগ পেয়েছে দেশের বিভিন্ন মেডিকেল কলেজে। বাকিরা কী করবে? সবচেয়ে মজার ব্যাপার হচ্ছে, হাইস্কুলে লটারি করে ভর্তি হয়। আমি একটা উদাহরণ দিচ্ছি, ঠাকুরগাঁও জেলা স্কুলে লটারি করে ঠাকুরগাঁওয়ের ছেলেরা পরীক্ষা দিয়ে ক্লাস থ্রিতে যে ছেলেটা ভর্তি হবে তাকে যেতে হচ্ছে গাইবান্ধা স্কুলে।’

‘এটা কোন ব্যবস্থা? কী লাভ এটাতে? কী তৈরি হচ্ছে আমি কিচ্ছু বুঝতে পারি না। এই যে একটা উন্মাদনা চলছে শিক্ষার ক্ষেত্রে। এটার ব্যাপারে কেউ দৃষ্টিও দিচ্ছে না, কথাও বলছে না। বিষয়গুলো পরিবর্তন করার জন্য কোনো চেষ্টা করা হচ্ছে না’—বলেন মির্জা ফখরুল।

তিনি বলেন, ‘ক্যাডেট কলেজে সরকার অনেক অর্থ ব্যয় করে, এটা তো মোস্ট প্রিভিলাইজড। কিন্তু প্রাইমারি স্কুল। একেবারে কুড়িগ্রামের রৌমারি চরের সেই প্রাইমারি স্কুলে সেখানে কী শিক্ষা পাচ্ছে, কী সুবিধা পাচ্ছে, সেটা কিন্তু আমরা একেবারেই জানি না। অসংখ্য স্কুল তৈরি হয়েছে, বিভিন্ন এমপিওভুক্তি করে, অনেক কলেজ তৈরি হয়েছে উইথ অনার্স অ্যান্ড মাস্টার্স। যেখানে কোনো শিক্ষক নেই, সেখানেও অনার্স খুলে বসে আছে।’

বিজ্ঞাপন

ফখরুল বলেন, ‘দিনাজপুর সরকারি কলেজে কিছুদিন আগে আমার যাওয়ার সুযোগ হয়েছিল। আমার চাকরি জীবনের শুরুতে আমি দিনাজপুর সরকারি কলেজে অধ্যাপনা করেছিলাম। সেখানে একটা ডিপার্টমেন্ট আছে অ্যাকাউন্ট্যান্স ডিপার্টমেন্ট, যেখানে মাত্র একজন শিক্ষক। অথচ অনার্স আছে মাস্টার্স আছে।’

তিনি বলেন, ‘এই বিভাগগুলোর কিংবা এই কলেজগুলো কী প্রয়োজন আছে? সবাই আর্টস পড়ে বিএ-আটর্স, কর্মাস খুব কম ছাত্র পড়ে, সাইন্স পড়ে না প্রায়। তাহলে এই যে, সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীদেরকে বিএ পাস করাচ্ছেন এদেরকে দিয়ে কী করাবেন, সমাজে তার প্রয়োজন কী? কোনো প্রয়োজন নাই। যার ফলে সমাজে দেখা যায়, বৃদ্ধ মা তার ছেলেটাকে পড়ালেখার জন্য তার শেষ জমিটুকু বিক্রি করে ঢাকায় পাঠায়। সেই ছেলে একটা প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে ডিগ্রি নিয়ে দেখা যায় সে কোনো চাকরি পায় না। তাহলে সারা দেশে অসংখ্য শিক্ষিত বেকার এটা বড় সমস্যা এটা নিয়ে কেউ চিন্তা করছি না।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আজকে এই সরকার অনেকগুলো সংস্কার কমিশন গঠন করেছেন। কিন্তু শিক্ষাবিষয়ক কোনো সংস্কার কমিশন হয় নাই। যেটা আপনার আগে প্রয়োজন ছিল, যেটা আগে দরকার ছিল বলে আমি মনে করি। গোটা সমস্যার মূলে ওই জায়গাটা। যদি শিক্ষাটা ঠিক না হয়, পরিকল্পনা যদি না থাকে, তা হলে আমি কী দিতে পারব বা সমাজে কী পরিবর্তন আমি আনতে পারব, আমি নিজে পরিবারের জন্য কী পরিবর্তন আনতে পারব। সবচেয়ে মজার ব্যাপার হচ্ছে হাই স্কুলে লটারি করে ভর্তি হয়।’

জিয়া স্মৃতি পাঠাগারের সভাপতি আবদুস সালামের সভাপতিত্বে সাবেক ছাত্র নেতা আবদুস সাত্তার পাটোয়ারির সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন শিক্ষাবিদ অধ্যাপক মাহবুব উল্লাহ, পলিসি গবেষক মাহাদী আমিন, উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক এবিএম ওবায়দুল ইসলাম, শিক্ষানুরাগী আফরোজা খানম রীতা, সাংবাদিক আমিরুল ইসলাম কাগজী, শিক্ষক নেতা জাকির হোসেন, সোশ্যাল অ্যাক্টিভিস্ট সাইয়িদ আবদুল্লাহ, জিয়া স্মৃতি পাঠাগারের জহির দিপ্তী, মঞ্জুর এলাহী, কাজী জহিরুল ইসলাম বুলবুল, হাসান আল আরিফ প্রমুখ।

সারাবাংলা/এজেড/এইচআই

জিয়া স্মৃতি পাঠাগার বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর

বিজ্ঞাপন

সেই হাথুরুসিংহকে দুষলেন আফিফ
২১ জানুয়ারি ২০২৫ ২৩:১৬

আরো

সম্পর্কিত খবর