Wednesday 22 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

খাজনা তুলে ব্যাংকে জমা না দিয়ে কোটি টাকা আত্মসাৎ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
২২ জানুয়ারি ২০২৫ ১৮:৪৭ | আপডেট: ২২ জানুয়ারি ২০২৫ ২০:০০

চট্টগ্রাম জেলা পরিষদে সার্ভেয়ার ইমতিয়াজ নাঈম। ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রাম ব্যুরো:  চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের মালিকানাধীন ভূমির খাজনা বাবদ প্রায় কোটি টাকা আদায় করে তহবিলে জমা না দিয়ে আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে এক সার্ভেয়ারের বিরুদ্ধে। জেলা পরিষদ কর্তৃপক্ষ ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে এ সংক্রান্ত তথ্যপ্রমাণ পেয়ে তাকে পুলিশে সোপর্দের প্রক্রিয়া শুরু করেছে।

অভিযুক্ত ইমতিয়াজ নাঈম (৩২) চট্টগ্রাম জেলা পরিষদে সার্ভেয়ারের দায়িত্বে আছেন। তিনি কুমিল্লা জেলার লাকসাম এলাকার বাসিন্দা। ইমতিয়াজ বর্তমানে নগরীর নাসিরাবাদ এলাকায় থাকেন।

বিজ্ঞাপন

চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ২০১৫ সালের ১৫ নভেম্বর অভিযুক্ত ইমতিয়াজ নাঈম চট্টগ্রাম জেলা পরিষদে স্থায়ী সার্ভেয়ার হিসেবে যোগদান করেন। এর আগে তিনি প্রায় চার বছর মাস্টাররোলে খন্ডকালীন সার্ভেয়ার হিসেবে কাজ করেছিলেন।

গত সোমবার (২১ জানুয়ারি) জেলা পরিষপদের মালিকানায় থাকা জমির খাজনার কাগজপত্র পর্যালোচনা করে কর্মকর্তারা দেখতে পান, ইমতিয়াজ ২৫টি জমা রশিদ বই সংশ্লিষ্ট শাখার সহকারী থেকে নিয়েছিলেন। বিধান অনুযায়ী ইজারার টাকা আদায় করে সোনালী ব্যাংকের কোর্ট হিল শাখায় জমা দেওয়ার কথা। কিন্তু ইমতিয়াজ সেটা জমা দেননি। হিসেব অনুযায়ী ইমতিয়াজ ৯৭ লাখ ৩৮ হাজার ৭১২ টাকা আত্মসাত করেছেন।

চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের অ্যাকাউন্টস শাখার প্রধান সহকারী মো. এজাজ সারাবাংলাকে বলেন, ‘গত সোমবার টাকা আত্মসাতের বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। সাথে সাথেই আমরা বিষয়টি স্যারদের জানিয়েছি। তাকে আমরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদও করেছি। কিন্তু সে আমাদের তেমন কিছু বলেনি। স্যারদের সিদ্ধান্তে আজ (বুধবার) বিষয়টি পুলিশকে অবহিত করা হয়েছে।’

বিজ্ঞাপন

জানা গেছে, ইমিতিয়াজের নেয়া ২৫টি রশিদ বইয়ের প্রতিটিতে ১০০টি করে পাতা ছিল। এর মধ্যে ৫০ নম্বর রশিদ বইয়ের ৫০টি পাতা পাওয়া যায়নি। এর বিপরীতে আদায় করা ১১ লাখ ৯৮ হাজার ১৮০ টাকারও কোনো হিসেব তিনি দেননি।

এছাড়া ৫২ নম্বর রশিদ বইয়ের বিপরীতে ২৪ লাখ ৬১ হাজার ২৯৯ টাকা, ৫৩ নম্বরের বিপরীতে ১২ লাখ ৫৮ হাজার ৩৭৩ টাকা, ৫৫ নম্বরের বিপরীতে ১৭ লাখ ৬ হাজার ৫৭১ টাকা, ৫৬ নম্বরের বিপরীতে ২১ লাখ ১৮ হাজার ৮১ টাকা এবং ৫৮ নম্বরের বিপরীতে ৯ লাখ ৯৫ হাজার ৪৬৮ টাকার কোনো হদিস পাওয়া যায়নি।

চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা দিদারুল আলম সারাবাংলাকে বলেন, ‘ইমতিয়াজ আমাদের এখানে সার্ভেয়ার হিসেবে আছে। জমির খাজনা বাবদ টাকা আদায়ের দায়িত্বে আছে সে। সম্প্রতি আমার খাজনা আদায় পরিস্থিতি পর্যালোচনার সিদ্ধান্ত নিই। গত সোমবার আমরা দেখতে পাই, ইমতিয়াজ অ্যাকাউন্টস শাখা থেকে রশিদ বই নিয়েছে এবং যথারীতি খাজনাও আদায় করেছে। তবে ব্যাংকে সে আদায় করা টাকাগুলো জমা করেনি।’

‘পরে তাকে আমরা বিষয়টি জিজ্ঞেস করি। সে আমাদের কিছুই জানে না বলে জানায়। আমরা আরও তদন্ত করে টাকাগুলো আত্মসাতের বিষয়টি নিশ্চিত হই। আজ (বুধবার) আমরা বিষয়টি কোতোয়ালী থানাকে অবহিত করেছি। তাকে পুলিশের কাছে দেয়ার প্রক্রিয়া চলছে,’ – বলেন দিদারুল আলম।

নগরীর কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল করিম সারাবাংলাকে বলেন, ‘জেলা পরিষদের এক কর্মচারীর বিরুদ্ধে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আমাদের জানানো হয়েছে। আমাদের টিম জেলা পরিষদে গেছে। ওই কর্মচারীকে আটকের প্রক্রিয়া চলছে। তবে জেলা পরিষদ কর্তৃপক্ষ এখনও লিখিত কোনো অভিযোগ দেয়নি।’

সারাবাংলা/আইসি/আরএস

চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ ভূমির খাজনার টাকা আত্মসাৎ সার্ভেয়ার ইমতিয়াজ নাঈম

বিজ্ঞাপন

১২ ডেপুটি জেলারের বদলি
২২ জানুয়ারি ২০২৫ ১৯:২৪

আরো

সম্পর্কিত খবর