শীতের সবজিতে ভরপুর রাজধানীর বাজার, কিন্তু কমছে না দাম
২৪ জানুয়ারি ২০২৫ ১৩:৩২
ঢাকা: শীতের কুয়াশায় মোড়ানো ব্যস্ত নগরী অনেকটাই শান্ত। খুব ভোরে কর্মময় ব্যস্ত জীবনের ছুটে চলা নেই। কারণ আজ শুক্রবার ছুটির দিন। কুয়াশা কিছুটা কমে গেলে, দৈনন্দিন জীবনের খাদ্যপণ্য ক্রয় করতে কাঁচাবাজারে ছুটে যাচ্ছে মানুষ। কিন্তু সেখানেও কিছুটা হতাশার ছাপ। কারণ কিছুতেই কমছে না বাজারমূল্য।
পেশায় ব্যাংকার রাসেল মিয়া সারাবাংলাকে তিনি জানালেন, ‘দেশ চলছে নতুন নেতৃত্বে। আমরা স্বৈরাচার মুক্ত করে নতুন করে দেশ স্বাধীন করেছি। তাই আমরা ১৫ বছরের জুলুম থেকে মুক্তি পেয়েছি বলেই মনে করছি। আর তাই আমাদের নতুন সরকারের প্রতি চাওয়া, দ্রব্যমূল্যে দাম কমানোর। যাতে আমরা দৈনন্দিন জীবনে ভালোমতো খেয়ে বেঁচে থাকতে পারি।’
তিনি আরও বলেন, ‘শীতের সবজী কিনতে এসে দেখি, অনেক কষ্টে মাত্র ২ পদের সবজি কিনতে পারছি। কারণ দাম উর্ধ্বগতিতে। আমাদের মধ্যবিত্তদেরই যদি টানাটানির মধ্যে ক্রয় করে খেতে হয়, তাহলে নিম্নবিত্তরা কিভাবে খাবে। তাই সরকারের প্রতি অনুরোধ বাজার মনিটরিং করে দ্রব্যমূলের দাম দ্রুতই কমানোর ব্যবস্থা করা হোক।’
বাজার ঘুরে দেখা যায়, গোল বেগুন প্রতি কেজি ৫০ টাকা। এ ছাড়া ঝিঙা প্রতি কেজি ৬০ টাকা, পেঁয়াজের ফুল প্রতি মুঠো ১০ টাকা, শসা প্রতি কেজি ৪০ টাকা, শালগম প্রতি কেজি ২০ টাকা, মূলা প্রতি কেজি ২০ টাকা, টমেটো প্রতি কেজি ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
আর বরবটি বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৮০ টাকা, করলা প্রতি কেজি ৮০ টাকা, বিচিওয়ালা শিম প্রতি কেজি ৬০ টাকা, সাধারণ শিম প্রতি কেজি ৩০ টাকা, মটরশুঁটি প্রতি কেজি ১০০ টাকা, ফুলকপি ও বাঁধাকপি প্রতি পিস ২০ টাকা, আলু প্রতি কেজি ৩০ টাকা, পেঁপে প্রতি কেজি ৪০ টাকা, কাঁচা মরিচ প্রতি কেজি ৬০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া প্রতি কেজি ২০ টাকা, ক্ষিরা প্রতি কেজি ৪০ টাকা, গাজর প্রতি কেজি ৫০ টাকা এবং কাঁচা টমেটো প্রতি কেজি ২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
মাছের বাজারেও রয়েছে রকমারি তাজা মাছ। পাঙাশ, তেলাপিয়া, ইলিশ ও রুই মাছ, বড় চিংড়ি ও ছোটো মাছ উঠেছে বাজারে। একটু বড় সাইজের পাঙাশ মাছ কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে ২৫০-৩০০ টাকা পর্যন্ত। বড় রুই মাছ ৩৫০-৪৫০ টাকা, মাঝারি রুই মাছ ৩৬০-৪০০ টাকা, রুই মাছের পোনা ২০০-২৫০ টাকা, কাতলা মাছ ৩০০-৩৫০ টাকা, ছোট পাঙাশ মাছ ১৯০-২০০ টাকা, পাবদা মাছ (আকারভেদে) ৪০০-৬০০ টাকা, গলদা চিংড়ি (আকারভেদে) ৬৫০-৭৫০ টাকা ও শিং মাছ (দেশি ও থাই) ৩০০-৫৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। আবার ছোট, মাঝারি, বড় ইলিশ মাছ যথাক্রমে ৭০০-৮০০, ১০০০-১৩০০ ও ১৬০০-২০০০ টাকা কেজি দামে বিক্রি হচ্ছে।
এ ছাড়াও বিভিন্ন ছোট মাছও বিক্রি হচ্ছে বাড়তি দামে। কাঁচকি মাছ ৩০০ টাকা, মলা মাছ ৩০০-৪০০ টাকা, কৈ মাছ ৩৬০ টাকা কেজি দামে বিক্রি হচ্ছে। তবে দোকান ও মানভেদে এসব মাছের দাম ৫০-৬০ টাকা পর্যন্ত কমবেশি হতে দেখা গেছে।
সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়ায় সকাল সকাল মাছ কিনতে এসেছেন ক্রেতারা। নিজেদের সাধ্য অনুযায়ী সবাইকে তাদের পছন্দের মাছ কিনতে দেখা গেছে। মাছের দাম কিছুটা কম হওয়ায় সন্তুষ্টি দেখা গেছে ক্রেতাদের মধ্যে।
হাতে গোনা কিছু মাছের দাম বেশি। সে ক্ষেত্রে মাছ বিক্রেতা রহিম মিয়া জানান, ‘‘আড়ত থেকে আমরা বেশি দামে মাছ কিনি। এজন্য বিক্রিও বেশি দামে করতে হয়। মাছের আড়তদাররা দাম কমালে আমরাও কম রাখতে পারি। কম দামে কিনতে পারলে আমাদেরও সুবিধা হবে।
সময়ের ব্যবধানে কিছুটা কমেছে ব্রয়লার মুরগী। বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ২০০-২২০ টাকা, সোনালি মুরগি ৩২০-৩৩০ টাকা, লেয়ার মুরগি ২৮০-২৯০ টাকা, এবং দেশি মুরগি ৫৫০ থেকে ৫৮০ টাকা দামে বিক্রি হচ্ছে। এর সঙ্গে বাড়তি চাহিদা রয়েছে হাঁসের৷ প্রতিকেজি হাঁস ৫৫০-৬০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
গরুর মাংসর দাম অপরিবর্তিত থাকলেও, ক্রেতার উপস্থিতি কম। বেচাবিক্রিও কম বলে জানালেন, মাংস বিক্রেতা।
তবে সবকিছুর দাম থাকবে সাধ্যের ভেতরে। এমনটাই প্রত্যাশা ক্রেতা বিক্রেতা উভয়ের।
সারাবাংলা/এফএন/এমপি