বীজ পরিবর্তন করে টমেটো চাষ, লোকসানে চাষিরা
২৬ জানুয়ারি ২০২৫ ০৮:০০ | আপডেট: ২৬ জানুয়ারি ২০২৫ ০৩:১৩
সুনামগঞ্জ: দ্বিগুণ লাভের আশায় টমেটো চাষ করেছিলেন তাহিরপুরের কৃষকরা। কিন্তু উল্টো তাদের লোকসান গুনতে হয়েছে। উপজেলার বাদাঘাট ইউনিয়নের যাদুকাটা নদীর পূর্বপাড় এলাকার বিন্নাকুলি, ঢালারপাড়, মন্তাজপুর, রহমতপুর জাঙ্গালহাটির প্রায় ৫০০ একর জমিতে টমেটো চাষাবাদ করে সর্বশান্ত হয়ে গেছেন কৃষকরা। আর এই লোকসানের পেছনে কাজ করেছে টমেটোর বীজ পরিবর্তন।
এলাকার কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বিগত বছর তারা জেসিকা টমেটো বীজ চাষ করে দ্বিগুণ লাভবান হয়েছিলেন। সে আশায় এবারও এলাকার সকল কৃষক টমেটো চাষ করেছিলেন। কিন্তু এবার তারা জেসিকা টমেটো বীজের পরিবর্তে ১২২০ ও প্রদীপ বীজ বপন করেন। এই বীজগুলোর ফলন জেসিকা বীজের চেয়ে ২০/২৫ দিন পর পাওয়া গেছে। এতে করে চাহিদার সময় বাইরের পাইকারি ব্যবসায়ীরা টমেটো কিনতে অন্য এলাকায় ঢুকে পড়ে। এতে পরবর্তী সময়ে বাধ্য হয়ে কম দামে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের কাছে টমেটো বিক্রি করতে হয় তাদের।
মন্তাজপুর গ্রামের টমেটো চাষী জালাল উদ্দিন সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমরা সাধারণত টমেটো চাষাবাদের পর পুরো জমি পাইকারের কাছে বিক্রি করে দিই। পাইকার সুবিধা মতো সময়ে জমি থেকে তার জনবল দিয়ে টমেটো উঠিয়ে বিক্রি করে।’
তিনি জানান, বিগত বছর টমেটো চাষ করে দ্বিগুণ লাভ হয়েছিলেন। এ বছর তিনিসহ এলাকার সকল কৃষক জেসিকা বীজ পরিবর্তন করে ১২২০ ও প্রদীপ বীজ রোপন করে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এক কিয়ার (৩০ শতকে এক কিয়ার) জমিতে টমেটো লাগাতে তার খরচ হয়েছে ৫০ হাজার টাকা। পাইকারের কাছে এক কেয়ার টমেটো বিক্রি করেছেন ৪০ হাজার টাকায়। বিগত বছর সমপরিমাণ খরচে এক কিয়ার জমির টমেটো বিক্রি করেছেন ৯০ হাজার থেকে এক লাখ টাকায়।
বিন্নাকুলি গ্রামের কৃষক আব্দুল হক সারাবাংলাকে বলেন, ‘টমেটো চাষীরা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ পান না। জালাল উদ্দিন নামে একজন উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা রয়েছেন। কিন্তু সপ্তাহের পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে একদিনও তার দেখা মেলে না।’
এ বিষয়ে তাহিরপুর উপজেলা কৃষি অফিসার মো. শরিফুল ইসলাম সারাবাংলাকে বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই।’ আর টমেটো চাষে লোকসানের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘কৃষকরা আগাম জাতের টমেটো বীজ বপন করলে হয়তোবা লোকসানের মুখ দেখতেন না। বিশেষ করে টমেটো চাষাবাদে কৃষকরা উপজেলা কৃষি অফিস থেকে আগেই পরামর্শ নিলে অনেক ভালো হতো।’
সারাবাংলা/পিটিএম