গাজার ২৫০০ শিশুর জন্য জরুরি চিকিৎসার আহ্বান জাতিসংঘ প্রধানের
৩১ জানুয়ারি ২০২৫ ০৯:৩৩ | আপডেট: ৩১ জানুয়ারি ২০২৫ ১২:১২
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস গাজা থেকে আড়াই হাজার শিশুকে জরুরি চিকিৎসার জন্য সরিয়ে নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) মার্কিন চিকিৎসকদের সঙ্গে বৈঠকের পর তিনি এই আহ্বান জানান। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, এই শিশুরা স্বাস্থ্যগত দিক থেকে মৃত্যুর ঝুঁকিতে রয়েছে।
১৫ মাস ধরে চলা ইসরায়েল ও হামাসের সংঘাতে গাজার দুই মিলিয়নেরও বেশি মানুষের জীবন বিপর্যস্ত হয়েছে। যুদ্ধের কারণে গাজার স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা কার্যত ধ্বংসপ্রাপ্ত। গুতেরেস বলেন, ‘এই শিশুদের অবিলম্বে জরুরি চিকিৎসার জন্য গাজা থেকে সরিয়ে আবার তাদের পরিবারের কাছে ফিরে যাওয়ার নিশ্চয়তা দিতে হবে।’
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জানিয়েছে, ১৯ জানুয়ারির যুদ্ধবিরতির আগে ১২ হাজার রোগী চিকিৎসার জন্য গাজা ছাড়ার অপেক্ষায় ছিল। ক্যালিফোর্নিয়ার ট্রমা সার্জন ফেরোজ সিধওয়া বলেন, ‘এই আড়াই হাজার শিশুর মধ্যে অনেকেই এখনই মারা যাচ্ছে, কেউ আজ, কেউ আগামীকাল বা তার পরের দিন মারা যাবে।’
স্ট্যানফোর্ড হাসপাতালের চিকিৎসক আয়েশা খান জানান, তিনি নভেম্বর থেকে জানুয়ারির শুরু পর্যন্ত গাজায় কাজ করেছেন এবং বহু শিশুকে অঙ্গচ্ছেদের (অ্যাম্পুটেশন) শিকার হতে দেখেছেন, যাদের জন্য কোনো কৃত্রিম অঙ্গ বা পুনর্বাসন ব্যবস্থা নেই। তিনি বলেন, ‘তাদের বেঁচে থাকার একমাত্র উপায় চিকিৎসার জন্য গাজা থেকে সরিয়ে নেওয়া।’
তবে বর্তমান নিরাপত্তা বিধিনিষেধের কারণে একজন অভিভাবক একাধিক শিশুর সঙ্গে ভ্রমণ করতে পারছেন না। ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা সংস্থা কগাত ও জাতিসংঘে ইসরায়েলি মিশন গুতেরেসের আহ্বান সম্পর্কে কোনো মন্তব্য করেনি।
মার্কিন চিকিৎসকরা বলছেন, গাজা থেকে চিকিৎসার জন্য রোগীদের সরিয়ে নেওয়ার একটি কেন্দ্রীয় ব্যবস্থা থাকা দরকার, যা এখনো পরিষ্কারভাবে নির্ধারণ করা হয়নি। জরুরি বিভাগের চিকিৎসক থায়ের আহমাদ বলেন, ‘যুদ্ধবিরতি চুক্তির অধীনে চিকিৎসা জন্য অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার জন্য একটি ব্যবস্থা থাকার কথা ছিল, কিন্তু এখনো তা বাস্তবায়িত হয়নি।’
গাজার রাফাহ সীমান্ত পুনরায় চালু হলেও তা শুধুমাত্র বাইরে যাওয়ার জন্য ব্যবহার করা হতে পারে, ফিরে আসার অধিকার না থাকার ঝুঁকি রয়েছে বলে চিকিৎসকরা আশঙ্কা করছেন।
ডব্লিউএইচও জানায়, অক্টোবর ২০২৩-এ যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে তাদের সহায়তায় এখন পর্যন্ত ৫ হাজার ৩৮৩ জন রোগী গাজা থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে, তবে বেশিরভাগ স্থানান্তর সংঘাতের প্রথম সাত মাসেই হয়েছে, যখন রাফাহ সীমান্ত খোলা ছিল।
সারাবাংলা/এনজে