ঢাকা: রাজধানীর মহাখালীতে অবস্থিত সরকারি তিতুমীর কলেজকে স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের দাবিতে গুলশান-১ নম্বর গোলচত্বর অবরোধ করেছেন কলেজটির শিক্ষার্থীরা। একইসঙ্গে সরকারের দেওয়া প্রস্তাবও প্রত্যাখ্যান করেছে শিক্ষার্থীরা।
শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় তারা কলেজের সামনে থেকে মিছিল নিয়ে গুলশান-১ এ গিয়ে সড়ক অবরোধ করে অবস্থান নেন শিক্ষার্থীরা। ফলে বন্ধ হয়ে গেছে যান চলাচল। দেখা দিয়েছে তীব্র যানজটের।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা বলছেন, ‘বিকেল ৪টা পর্যন্ত আমাদের আলটিমেটাম ছিল। কিন্তু দাবি মেনে নেওয়া হয়নি। সেজন্য পূর্ববর্তী ঘোষণা অনুযায়ী সড়ক অবরোধ করা হয়েছে। কাল আন্দোলন আরও তীব্র হবে।
এ সময় বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দিতে শোনা গেছে। তারা বলছেন, ‘অ্যাকশন টু অ্যাকশন, ডাইরেক্ট অ্যাকশন’, ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’, ‘আপস না সংগ্রাম, সংগ্রাম সংগ্রাম’, ‘তিতুমীর আসছে, রাজপথ কাঁপছে’, ‘টিসি না টিউই, টিউই টিউই’, ‘আমার ভাই অনশনে, প্রশাসন কি করে’, ‘প্রশাসনের সিন্ডিকেট, ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও’, ‘শিক্ষা নিয়ে বাণিজ্য, চলবে না চলবে না’, ‘অধ্যক্ষের সিন্ডিকেট, মানি না মানব না’, ‘আমাদের সংগ্রাম, চলছে চলবে’ ইত্যাদি স্লোগান ও প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করতে দেখা গেছে।
এদিকে বিকেলে শিক্ষার্থীদের চলমান এই আন্দোলনের বিষয়ে বিবৃতি দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। ‘আন্দোলনের বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় তথা সরকার অবহিত’ উল্লেখ করে এতে জানানো হয়, ঢাকার ঐতিহ্যবাহী সাতটি কলেজের সমন্বয়ে একটি পৃথক বিশ্ববিদ্যালয় গঠনের লক্ষ্যে ইউজিসির চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে গঠিত একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি কাজ করছে। এ ক্ষেত্রে সরকারি তিতুমীর কলেজের বিষয়টি বিশেষভাবে বিবেচনা করা হচ্ছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘এরইমধ্যে এই কমিটি তিতুমীর কলেজসহ সাতটি কলেজের শিক্ষার্থী প্রতিনিধিদের সঙ্গে তাদের সমস্যাগুলো নিয়ে আলোচনা শুরু করেছে। এই কলেজগুলোর শিক্ষার সুযোগ-সুবিধা ও মানোন্নয়নই বর্তমানে সরকারের প্রধান লক্ষ্য। এক্ষেত্রে করণীয় সব বিকল্পই সরকারের বিবেচনায় থাকবে। এ অবস্থায় তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের ঘোষণা আদায়ে সময় বেঁধে দিয়ে আন্দোলন করার যৌক্তিকতা নেই। সেজন্য আন্দোলনে সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধৈর্য ধারণের অনুরোধ করা হলো। জনজীবনে দুর্ভোগ সৃষ্টি হয় বা কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থীদের স্বাভাবিক শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হয় এমন কর্মসূচি থেকে বিরত থাকার জন্য আন্দোলনকারীদের প্রতি আহ্বান জানানো হচ্ছে।’
বিবৃতিতে সর্বস্তরের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ন্যায়সংগত দাবি-দাওয়ার বিষয়ে সরকার সবসময় সচেতন ও সহানুভূতিশীল রয়েছে বলেও জানানো হয়।
তবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এই বিবৃতি প্রত্যাখ্যান করে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার বিষয়ে দৃঢ় বক্তব্য দিয়েছেন আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া শিক্ষার্থীরা।