সুদানের ওমদুরমানে ভয়াবহ গোলাবর্ষণ, নিহত ৫৬
২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৩:১৮ | আপডেট: ২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৪:২৫
সুদানের ওমদুরমান শহরের একটি সবজি বাজারে ভয়াবহ গোলাবর্ষণ ও বিমান হামলায় অন্তত ৫৬ জন নিহত হয়েছে। শনিবারের (১ জানুয়ারি) এই হামলায় আরও ১৫৮ জন আহত হয়েছে বলে জানিয়েছে সুদানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
সরকার হামলার জন্য আধাসামরিক বাহিনী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ)-কে দায়ী করেছে। দেশটির সংস্কৃতি মন্ত্রী ও সরকারি মুখপাত্র খালিদ আল-আলাইসির এই হামলার নিন্দা জানিয়ে বলেন, হতাহতের মধ্যে বহু নারী ও শিশু রয়েছে। তিনি বলেন, ‘এই বর্বর হামলা আরএসএফ-এর রক্তাক্ত ইতিহাসের আরও একটি অধ্যায় যোগ করল এবং এটি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।’
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, আরএসএফ নিয়ন্ত্রিত ওমদুরমানের পশ্চিম দিক থেকে গোলাবর্ষণ করা হয় এবং হামলায় ড্রোন ব্যবহার করা হয়।
ওই এলাকার আল-নাও হাসপাতালের কর্মীরা জানান, বিপুল সংখ্যক আহত ব্যক্তি আসায় তারা প্রচণ্ড কাজের চাপে পড়েছেন। এক স্বেচ্ছাসেবক জানান, ‘আমাদের জরুরি ভিত্তিতে কাফনের কাপড়, রক্তদাতা এবং স্ট্রেচার প্রয়োজন, যাতে আহতদের দ্রুত স্থানান্তর করা যায়।’
এদিকে, খার্তুমে পৃথক এক ঘটনায় আরএসএফ নিয়ন্ত্রিত এলাকায় বিমান হামলায় দুই বেসামরিক নাগরিক নিহত ও বহু মানুষ আহত হয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় জরুরি প্রতিক্রিয়া সংস্থা (ইআরআর)।
২০২৩ সালের এপ্রিলে সুদানের সেনাবাহিনী ও আরএসএফ-এর মধ্যে সংঘাত শুরু হয়, যা মূলত দুই বাহিনীর একীভূতকরণ ইস্যু নিয়ে সৃষ্টি হয়েছিল। এই সংঘাতের ফলে দেশজুড়ে কয়েক হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন, লাখ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন এবং দেশটির অর্ধেক জনগোষ্ঠী তীব্র খাদ্যসংকটে পড়েছে।
শনিবারের (১ জানুয়ারি) হামলার একদিন আগে আরএসএফ প্রধান মোহাম্মদ হামদান দাগলো এক ভিডিও বার্তায় সেনাবাহিনীকে রাজধানী থেকে বিতাড়িত করার হুঁশিয়ারি দেন। তিনি বলেন, ‘আমরা তাদের আগেও খার্তুম থেকে তাড়িয়েছি, এবারও তাড়াব।’
গত মাসে সেনাবাহিনী খার্তুমের বেশ কিছু ঘাঁটি পুনর্দখল করেছে, যার মধ্যে যুদ্ধ-পূর্ববর্তী সদর দফতরও রয়েছে। এর ফলে আরএসএফ ক্রমশ রাজধানীর শহরতলির দিকে সরে যেতে বাধ্য হয়েছে।
জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, সংঘাতের কারণে অন্তত ৩.৬ মিলিয়ন মানুষ রাজধানী ছেড়ে পালিয়েছে এবং পুরো দেশজুড়ে হাজার হাজার মানুষ নিহত হয়েছে। এ ছাড়া, খাদ্য সংকটে খার্তুমের অন্তত ১ লাখ ৬ হাজার মানুষ চরম দুর্ভিক্ষের মুখে রয়েছে এবং আরও ৩.২ মিলিয়ন মানুষ খাদ্যসংকটে ভুগছে।
সারাবাংলা/এনজে