দেশের ১৬ শতাংশ শিশু টিকা সুবিধা থেকে বঞ্চিত
৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৫:৫৮ | আপডেট: ৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৭:০২
ঢাকা: টিকাদান কার্যক্রমের মাধ্যমে ভ্যাকসিন-প্রতিরোধযোগ্য রোগ (ভিপিডি) নিয়ন্ত্রণে যথেষ্ট অগ্রগতি ও অর্জন থাকলেও গত প্রায় ১২ বছর ধরে একই বৃত্তে আটকে আছে বাংলাদেশ। এই সময়ের মধ্যে সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচির (ইপিআই) মাধ্যমে দেশে টিকাদান অব্যাহত থাকলেও কোনোভাবেই ইপিআই কভারেজ ৮৪ শতাংশের ওপরে উঠতে পারছে না দেশ। ফলে এখনো দেশের ১৬ শতাংশ শিশু টিকা সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ১০টায় জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়। অনুষ্ঠানে মূলত স্বাস্থ্য সুরক্ষা ফাউন্ডেশন ও ইউনিসেফ বাংলাদেশের যৌথ পরিচালনায় ‘বাংলাদেশে টিকা কার্যক্রমের সাফল্য, বিদ্যমান চ্যালেঞ্জ এবং করণীয়’ শীর্ষক গবেষণার ফলাফল ফলাফলে এ তথ্য তুলে ধরা হয়। গবেষণাটি ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পরিচালনা করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন স্বাস্থ্য সুরক্ষা ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক ডা. নিজাম উদ্দিন আহমেদ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা ও স্বাগত বক্তব্য দেন ইউনিসেফ বাংলাদেশ ও স্বাস্থ্য সুরক্ষা ফাউন্ডেশন পরিচালিত গবেষণা প্রকল্পের পলিসি অ্যাডভাইজার অধ্যাপক ড. মো. রফিকুল ইসলাম।
গবেষণার ফলাফল তুলে ধরে ডা. নি লিজাম উদ্দিন আহমেদ আহমেদ বলেন, এখন আর কোনো মা টিটেনাস টিকার কারণে মারা যান না। এটা বিরাট অর্জন। টিকায় ছয়টি রোগ না, ১২টি রোগের নিরাময় হিসেবে এখন দেখা হয়। গ্রামে ৮৫ ভাগ শিশু টিকা পাচ্ছে। কিন্তু শহরের শিশুরা তুলনামূলক কম পাচ্ছে। শহরে স্থানীয় সরকারের কোনো কর্মী নাই টিকাদান কর্মূচির জন্য। বাংলাদেশে ১৯৮৪ সালে সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচীর কভারেজ ছিল ২ শতাংশের নিচে যা বর্তমানে ৮৩ দশমিক ৯ শতাংশে উন্নিত হয়েছে। তবে গ্রাম শহর নির্বিশেষে কাভারেজের ভিন্নতা লক্ষ্য করা যায়। গত ১২ বছরে ইপিআই কভারেজ ৮৪ শতাংশের ওপরে উঠেনি এবং ১৬ শতাংশ শিশু টিফা সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
তিনি বলেন, ইপিআইয়ের অন্যতম প্রতিবন্ধকতা হচ্ছে টিকা কার্যক্রমে জনবলের ঘাটতি, অঞ্চলভিত্তিতে টিকাকেন্দ্রের অসম বণ্টন, অপর্যাপ্ত অর্থ বরাদ্দ, টিকার অপর্যাপ্ততা, টিকাদান কর্মীদের প্রশিক্ষণের অভাব, দুর্গম এবং, ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় টিকা পরিবহণজনিত সমস্যা, টিকাদান সম্পর্কিত প্রচারণার অভাব ইত্যাদি।
তিনি আরও বলেন, মন্ত্রণালয়ের অধীনে শহর ও গ্রামে টিকাদান প্রকল্পে বরাদ্দকৃত জনবলের মধ্যে প্রায় ৪০ শতাংশ পদ এবং ইপিআই সদর দফতর এ ৪৩ শতাংশ পদ এখনো শূন্য রয়েছে। আরবান ইমিউনাইজেশন স্ট্র্যাটেজি-২০১৯ এবং ইপিআই মাইক্রোপ্ল্যান-২০২৪ অনুসারে প্রতি পঞ্চাশ হাজার জনসংখ্যার জন্য ছয়জন টিকাদানকর্মী প্রয়োজন, যা বাংলাদেশে এখনও বাস্তবায়ন করা হয়নি। দুর্গম এবং উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় যে সংখ্যায় টিকাদান কেন্দ্র থাকা দরকার সেই সংখ্যক টিকাদান কেন্দ্র নেই। টিকাদান কর্মসূচি সঠিকভাবে পরিচালনা করার জন্য বাজেট বরাদ্দে দেরি হচ্ছে। অদুর ভবিষ্যতে ভ্যাকসিনের যে সংকট দেখা দিতে পারে সে ক্ষেত্রে যথাযত বাবস্থা গ্রহন করতে হবে।
সারাবাংলা/এমএইচ/ইআ