Saturday 03 May 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

এম এ আজিজ বাফুফেকে বরাদ্দ বাতিল চান ক্রীড়া সংগঠকরা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ২০:১৩ | আপডেট: ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ০০:০৫

এম এ আজিজ স্টেডিয়াম বাফুফেকে দেওয়ার সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবিতে সংবাদ মম্মেলন

চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম এম এ আজিজ স্টেডিয়ামকে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) কাছে বরাদ্দ দেওয়ার সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবি জানিয়েছেন ক্রীড়া সংগঠকরা।

সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান চট্টগ্রামের বিভিন্ন ক্লাব প্রতিনিধি ও ক্রীড়া সংগঠকরা।

লিখিত বক্তব্যে ক্রীড়া সংগঠক ও সাবেক ক্রিকেটার শাহীন আফতাবুর রেজা চৌধুরী বলেন, ‘স্থানীয় খেলাধুলার স্বার্থে চট্টগ্রামের বিত্তবান লোকজন কাজীর দেউড়ির এম এ আজিজ স্টেডিয়াম নির্মাণ করেছেন। এ মাঠ চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থার (সিজেকেএস)। বাফুফের অনুমতি নিয়ে খেলাধুলা করাটা কোনোভাবে কাম্য নয়। অবিলম্বে আমরা এ স্টেডিয়াম ২৫ বছরের জন্য বাফুফেকে দেওয়ার সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবি জানাই।’

তিনি আরও বলেন, ‘এম এ আজিজ স্টেডিয়ামটি প্রথমে ১০ বছরের জন্য এবং পরবর্তী সময় ২৫ বছরের জন্য বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনকে (বাফুফে) বরাদ্দ দিয়েছে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ। এ সিদ্ধান্তে আমরা হতবাক। ইতোমধ্যে আমরা প্রধান উপদেষ্টা ও ক্রীড়া উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি দিয়েছি। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ একটা সংশোধনী চিঠি পাঠিয়েছে। তাতে স্থানীয় খেলাধুলার জন্য বাফুফের অনুমতি নিতে বলা হয়েছে। এটা কোনোভাবে কাম্য নয়।’

সিজেকেএসের সাবেক সহ-সভাপতি হাফিজুর রহমান বলেন, ‘এ মাঠকে কেন্দ্র করে প্রায় ৩০টির বেশি খেলাধুলা হয়। এ ছাড়া সকাল থেকে মাঠ এবং সামনের প্রশিক্ষণ মাঠে কিশোর-তরুণেরা অনুশীলন করে থাকে। চট্টগ্রামের সব খেলাধুলা এ মাঠ ঘিরেই চলে। এ মাঠ শুধু ফুটবলের জন্য বরাদ্দ দিয়ে অন্য খেলাগুলোর ক্ষতি করা হয়েছে।’

বিজ্ঞাপন

ফ্রেন্ডস ক্লাবের প্রতিনিধি বীর মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ আবুল বশর বলেন, ‘স্থানীয় ফুটবলও এখানে হতে পারবে না। কারণ, এখানে তিনটা লিগ হয়। আন্তর্জাতিক মানের যখন স্টেডিয়াম করা হবে, তখন চাইলেই এই মাঠ ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া হবে না। তাই এই সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবি জানাচ্ছি। এম এ আজিজ স্টেডিয়াম বাফুফের নয়, চট্টগ্রামবাসীর স্টেডিয়াম।’

বাংলাদেশ দাবা ফেডারেশনের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থার অতিরিক্ত সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ শাহাবউদ্দিন শামীম বলেন, ‘‘জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের নতুন চিঠি আমাদের মনে মারাত্মক আঘাত করেছে। তারা বলেছে, বাফুফের সঙ্গে সমন্বয় করে খেলার আয়োজন করার জন্য। আমাদের মাঠ আমাদের থাকবে। আমরা কেন মাঠ ব্যবহারে তাদের জিজ্ঞেস করব? তারা কিছু আয়োজন করলে আমাদের সঙ্গে কথা বলবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘জেলা ক্রীড়া সংস্থার অধীনে ৮৫টি ক্লাব আছে। ক্লাব প্রতিনিধিরাই কমিটিতে থাকবে। তাদের সিদ্ধান্ত বাফুফে এবং বিসিবিকে মানতে হবে। কিন্তু তারা যে সিদ্ধান্ত আমাদের ওপর চাপিয়ে দিচ্ছে সেটাতো আমরা মানতে পারব না।’

সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তব্য দেন চট্টগ্রাম জেলা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক আ ন ম ওয়াহিদ দুলাল, ক্রীড়া সংগঠক আমিনুল ইসলাম, শাহজাদা আলম, শাহাবুদ্দিন জাহাঙ্গীর ও নিয়াজ মোহাম্মদ খান।

চট্টগ্রামের এম এ আজিজ স্টেডিয়ামকে আন্তর্জাতিক ফুটবল স্টেডিয়াম হিসেবে তৈরির জন্য ১২ শর্তে বাফুফেকে ইজারা দেয় জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ। গত ২ জানুয়ারি চিঠির মাধ্যমে বাফুফেকে মাঠ বরাদ্দের বিষয়টি জানানো হয়। এর পর থেকে চট্টগ্রামের বিভিন্ন ক্রীড়া সংগঠক ও সাবেক খেলোয়াড়রা প্রতিবাদ জানিয়ে আসছিলেন।

বিজ্ঞাপন

গত ৩০ জানুয়ারি স্টেডিয়ামের সামনে ‘স্টেডিয়াম রক্ষা কমিটির’ ব্যানারে মানববন্ধন করা হয়। সেখানে বাফুফেকে এম এ আজিজ স্টেডিয়াম বরাদ্দ দেওয়ার সিদ্ধান্তকে হঠকারী মন্তব্য করে তা বদলানোর দাবি তোলেন চট্টগ্রামের সিটি মেয়র শাহাদাত হোসেন।

ওই দিনই জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ আগের সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসে নতুন একটি সিদ্ধান্ত জানায়, যেখানে বাফুফের সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে স্থানীয় জেলা ও বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থাগুলোকে খেলাধুলা আয়োজনের অনুমোদন দেওয়া যেতে পারে বলে জানানো হয়।

সারাবাংলা/আইসি/এইচআই

এম এ আজিজ বাফুফে

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর